অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা আইনাল শেখ ওরফে কাংলা।
প্রতারণা, তোলাবাজি, রেলের যন্ত্রাংশ চুরি— বিবিধ অপরাধের সুতোয় শাসক দলের শীর্ষ নেতাদের জড়িয়ে পড়ার নজির কম নয়। এ বার সেই তালিকায় সংযোজন ঘটল শিশু অপহরণের অভিযোগেরও।
নদিয়ার চাপড়ার দলের এক অঞ্চল সভাপতির বিরুদ্ধে ওই অভিযোগ এনেছেন অপহৃত শিশুর বাবা। তবে আইনাল শেখ ওরফে কাংলা নামে ওই অঞ্চল সভাপতিকে গ্রেফতার দূরঅস্ত্, তাঁকে জেরা করারও প্রয়োজন মনে করেনি নদিয়া জেলা পুলিশ। কেন?
গ্রামবাসীদের দাবি কাংলা শাসক দলের স্থানীয় বিধায়ক রুকবানুর রহমানের ‘কাছের লোক’। বিধায়ক অবশ্য বলছেন, ‘‘আমাদের দলেরও যদি কেউ এর সঙ্গে জড়িত থাকে তাহলে পুলিশ তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেবে। দল এই ধরনের ঘটনাকে প্রশ্রয় দেয় না।’’
জেলা পুলিশ সুপার ভরতলাল মিনা অবশ্য বলছেন, ‘‘ইতিমধ্যেই ওই ঘটনায় তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যাঁদের নাম শোনা যাচ্ছে রেয়াত করা হবে না তাঁদের কাউকেই।’’ তবে মূল অভিযুক্ত কাংলাকে কেন এড়িয়ে গিয়েছে পুলিশ তার কোনও সদুত্তর পুলিশ সুপারের কাছে মেলেনি।
বছর চারেকের ওই শিশুর বাবা হাজু শেখ বলেন, ‘‘ইতিমধ্যেই আইনাল শেখ আমাকে বাড়ি এসে হুমকি দিয়ে গিয়েছে, অভিযোগ তুলে না নিলে ছেলের মৃতদেহও খুঁজে পাব না বলে।’’ বিষয়টি পুলিশে জানানো সত্ত্বেও স্থানীয় থানার তদন্তকারী অফিসার অবশ্য আইনালের ‘খোঁজ’ পাননি। তবে পুলিশ জানিয়েছে এ ব্যাপারে হাজুর দাদা কাজু শেখ, ভাইঝি আলিয়া বিবি এবং তার প্রেমিক কালাম শেখকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গ্রামের বাসিন্দাদের অনেকেই জানান, হাজুর বছর চারেকের ছেলে শামিমের অপহরণের খুটিনাটি সব তথ্যই জানেন কাংলা। তবু পুলিশ তাঁকে ঘাঁটাতে চাইছে না।
পুলিশ জানায়, শামিমের জেঠতুতো দিদি আলিয়ার সঙ্গে গ্রামের কালাম শেখের সম্পর্ক নিয়ে গ্রামবাসীদের মধ্যে কানাঘুষো চলছিল। ওই সম্পর্ক নিয়ে অন্য অনেকের মতো আপত্তি ছিল হাজু শেখেরও। তার জেরেই দিন কয়েক আগে আলিয়ার প্রেমিক কালাম হাজুকে শাসিয়েও গিয়েছিল ‘উচিত শিক্ষা’ দেবে বলে। শামিমকে অপহরণ তার জেরেই বলে পুলিশের অনুমান। কাংলা অবশ্য জানাচ্ছেন, ‘‘শামিম আমাদের আত্মীয়। ওকে অপহরণের সঙ্গে আমার নাম জুড়ে দেওয়া বিরোধীদের অপপ্রচার।’’
—নিজস্ব চিত্র।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy