Advertisement
০১ মে ২০২৪
Transport Department

চার রকম বকেয়া থাকলে মিলবে না দূষণ সংক্রান্ত ছাড়পত্র, পরিবহণ দফতরের নির্দেশে ক্ষোভ

পুজোর আগে গত অক্টোবর মাসের ১১ তারিখে একটি নির্দেশিকা জারি করেন পরিবহণ সচিব সৌমিত্র মোহন। সেই নির্দেশিকায় চোখ পড়ার পরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন বেসরকারি পরিবহণ সংগঠনের মাথারা।

পরিবহণ দফতরের নির্দেশিকা নিয়ে ক্ষোভ বাসমালিক সংগঠনগুলির।

পরিবহণ দফতরের নির্দেশিকা নিয়ে ক্ষোভ বাসমালিক সংগঠনগুলির। ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০২৩ ২০:৩০
Share: Save:

পরিবহণ দফতরের এক নির্দেশিকায় ক্ষোভে ফুটতে শুরু করেছে বেসরকারি পরিবহণ সংগঠনগুলি। পুজোর আগে গত অক্টোবর মাসের ১১ তারিখে একটি নির্দেশিকা জারি করেন পরিবহণ সচিব সৌমিত্র মোহন। পুজোর ছুটির কারণে এত দিন সেই নির্দেশিকা চোখে পড়েনি বেসরকারি পরিবহণ সংগঠনগুলির। কালীপুজোর ছুটি কাটতেই সেই নির্দেশিকায় চোখ পড়ার পরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন বেসরকারি পরিবহণ সংগঠনের মাথারা। মঙ্গলবার সেই নির্দেশিকার বিরুদ্ধে পরিবহণ দফতরের সচিবের কাছে ডেপুটেশন দিয়েছে একটি বেসরকারি বাস পরিবহণ সংগঠন।

ওই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, এ বার থেকে কোনও গাড়ির কর, জরিমানা, খেসারত ও ই-চালানের কোনও পাওনা বাকি থাকলে আর দূষণ সংক্রান্ত ছাড়পত্র মিলবে না। বর্তমান নিয়মে বিভিন্ন পেট্রল পাম্প ও পরিবহণ পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত কেন্দ্রগুলিতে থাকা অটো এমিসন টেস্টিং সেন্টার (এইটিসি)-এ গাড়ির ধোঁয়া পরীক্ষা করিয়ে পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত ছাড়পত্র ‘পলিউশন আন্ডার কন্ট্রোল সার্টিফিকেট’ (পিইউসিসি) দেওয়া হয়। ওই পরীক্ষাকেন্দ্রগুলি সরাসরি যুক্ত পরিবহণ দফতরের পোর্টাল ‘বাহন’-এর সঙ্গে। তাই স্বাভাবিক নিয়মেই কোনও গাড়ি এই ছাড়পত্র পেয়ে গেলে তা দফতরের পোর্টালেও আপলোড হয়ে যায়। এ ক্ষেত্রে নতুন নিয়মে একই সঙ্গে সব ক’টি আর্থিক শর্তপূরণের পর এই ছাড়পত্র পাওয়া যাবে। কোনও একটি বিষয় বাকি থাকলেই ‘বাহন’ পোর্টালে ‘লক্ড’ দেখাবে সংশ্লিষ্ট গাড়িটিকে।

তাই মঙ্গলবার এই সংক্রান্ত বিষয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে পরিবহণ সচিবের কাছে ডেপুটেশন দিয়েছেন ‘অল ইন্ডিয়া বাস মিনিবাস সমন্বয় সমিতি।’ সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রাহুল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘করোনা সংক্রমণের সময় যে লকডাউন হয়েছিল, তার ফলে বেসরকারি পরিবহণ পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। বেসরকারি পরিবহণকে সাহায্য করা হয়নি। এখন পরিবহণ দফতর যে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে, তা আমাদের পক্ষে মানা সম্ভব নয়।’’ কারণ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘‘ই-চালান-সহ এমন অনেক বিষয় রয়েছে, যেগুলি আগে লোক আদালত বা আদালতের হস্তক্ষেপে মিটিয়ে নেওয়া হত। কিন্তু এখন বলা হচ্ছে, চার ধরনের আর্থিক শর্ত পূরণ না করলে দূষণ সংক্রান্ত ছাড়পত্র পাওয়া যাবে না?’’ এই নিয়মের বদল না হলে আগামী দিনে রাস্তায় বেসরকারি বাসের সংখ্যা অস্বভাবিক হারে কমে যাবে বলেই মনে করছে তাঁদের সংগঠন।

বিজ্ঞপ্তি প্রসঙ্গে কড়া অবস্থানের কথা জানিয়ে দিয়েছে অনলাইন ক্যাব অপারের্টাস গিল্ড। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ইন্দ্রনীল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘আমরা ডেপুটেশনে এই নির্দেশিকা প্রত্যাহারের দাবি জানাব। যদি তাতে কাজ না হয়, আমরা বৃহত্তর আন্দোলনের পথে যাব।’’ সিটি সাবার্বান বাস সার্ভিসেসের তরফে টিটু সাহা বলেন, ‘‘যাঁরা গাড়ি চালান, তাঁদের ত্রুটির কারণেই এই সব জরিমানা-সহ নানা সমস্যা হয়। সে ক্ষেত্রে ড্রাইভিং লাইসেন্স এই পদ্ধতির সঙ্গে যুক্ত হতে পারে। গাড়ির বৈধ কাগজপত্র সংযুক্তিকরণের যে প্রয়াস এই নির্দেশিকায় আমরা দেখতে পাচ্ছি, তা গণপরিবহণের ব্যাপক ক্ষতি করবে।’’ পুলিশ-প্রশাসনের দেওয়া বিভিন্ন জরিমানাও এই নির্দেশিকায় যুক্ত করা হয়েছে বলেই দাবি করেছেন বেসরকারি গণপরিবহণের সংগঠন প্রধানেরা। যদিও, পরিবহণ দফতর এই নির্দেশিকা প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করেনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Transport Department Private Bus Buses
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE