অনুব্রত মণ্ডল। ফাইল চিত্র
আগামী বছরেই বিধানসভা ভোট হতে পারে, এমন ইঙ্গিত মিলল তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের কথায়। সোমবার গুসকরায় তৃণমূলের বুথভিত্তিক কর্মিসভায় নেতাকর্মীদের ওই আভাস দেন তৃণমূলের আউশগ্রামের পর্যবেক্ষক অনুব্রত। বলেন, ‘‘আগামী তিন-চার মাসের মধ্যে যদি বিধানসভা ভোট হয়, কী হবে? তৈরি হ। বাংলা বুঝেছিস? ঈঙ্গিত বুঝেছিস? তৈরি হ।”
এ দিন কর্মিসভায় আউশগ্রাম ১ ও ২ ব্লক এবং গুসকরা শহরের বুথ কর্মীরা ছিলেন। অনুব্রতবাবু পঞ্চায়েত ধরে ধরে সভাপতিদের ডেকে এলাকার পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজ নেন। কোন বুথের, কেমন অবস্থা তা-ও জানতে চান। যে সমস্ত বুথে দল পিছিয়ে রয়েছে, সেই বুথে কী পরিকল্পনা, ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা জানতে চান। তৃণমূল সূত্রের খবর, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বুথ সভাপতিরা বিজেপির পালে হাওয়া থাকার যুক্তি দেন। কিছু কিছু ক্ষেত্রে দলের কর্মীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, টাকা নেওয়ার অভিযোগও ওঠে। তৃণমূল সূত্রের দাবি, এড়াল, আউশগ্রামের মতো বেশ কয়েকটি অঞ্চলের নেতারা তাঁদের নেতার কাছে মেনে নেন, কিছু কিছু ক্ষেত্রে টাকা পয়সার লেনদেন হয়েছিল। তবে যারা তার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। অনুব্রতবাবুর মন্তব্য, ‘‘দুষ্ট গরুর থেকে শূন্য গোয়াল ভাল।’’
গত লোকসভা নির্বাচনে গুসকরা শহর এলাকায় ৩২টি বুথের মধ্যে ছ’টিতে এগিয়েছিল তৃণমূল। প্রায় সাড়ে চার হাজার ভোটে দলের পিছিয়ে থাকার কারণ জানতে চাওয়া হয় তৃণমূলের শহর সভাপতি কুশল মুখোপাধ্যায়ের কাছে। তিনি নিজের ওয়ার্ডে ৩৭৪ ভোটে হেরে থাকার কথা জানান। তৃণমূলের প্রাক্তন কাউন্সিলর বিশ্বম্ভর মণ্ডলকে মঞ্চে ডেকেও একই প্রশ্ন করা হয়। বিশ্বম্ভরবাবু দাবি, কিছুটা ‘মোদী-হাওয়া’ এর জন্য দায়ী। পাশাপাশি, গুসকরায় নেতৃত্বের অনৈক্যের কথা বলেন তিনি। অনুব্রতবাবু জানিয়ে দেন, ওয়ার্ডের লোক যাকে চাইবেন, তিনিই সেখানকার নেতা।
কুশলবাবু বলেন, ‘‘কর্মিসভায় দলের পর্যবেক্ষক বেশ কিছু পরামর্শ দেন। কিছু ক্ষেত্রে সাবধান করে দেন। সেগুলি মেনে চলা হবে।’’ শহরের নেতৃত্বের মধ্যে অনৈক্যের জন্য লোকসভা ভোটের ফল খারাপ হয়েছিল৷ তবে সেই অনৈক্য অনেকটাই কাটিয়ে ওঠা হয়েছে।
গুসকরায় ‘সবার জন্য বাড়ি’ প্রকল্পে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। বর্তমানে পরিস্থিতি কেমন জানতে চান পর্যবেক্ষক। আগামী বিধানসভা নির্বাচনে কে কত ‘লিড’ দিতে পারবেন সে কথা জেনে নিয়ে পাশে বসে থাকা তৃণমূলের বীরভূম জেলা সহ-সভাপতি অভিজিৎ সিংহকে (রানা) লিখে নেওয়ার নির্দেশ দেন। এ দিন গুসকরা শহরের সিপিএমের প্রাক্তন এক কাউন্সিলরের ছেলে-সহ কয়েকজন সিপিএমের কর্মী সমর্থক এবং উক্তা পঞ্চায়েতের কয়েকজন বিজেপি সমর্থকের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেওয়া হয়েছে বলেও তৃণমূলের দাবি। যদিও তা মানেনি বিজেপি, সিপিএম।
অনুব্রতবাবু পরে বলেন, ‘‘বিধানসভা নির্বাচন এক বছর এগিয়ে এলেও কোনও সমস্যা নেই। কর্মীরা সে জন্য প্রস্তুত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy