মৃত অয়নের বাবা সিবিআই তদন্ত চাইছেন। —নিজস্ব চিত্র।
হরিদেবপুর-কাণ্ডে অয়নের মৃত্যুর পর তাঁর বাবা সংবাদমাধ্যমের সামনে বলেছিলেন, “মা ও মেয়ে দু’জনেই ছেলেকে চাইত, ও কী করবে?” সোমবার সেই তিনিই আগের অবস্থানের ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে জানালেন, এগুলি নাকি তাঁর বক্তব্য নয়! পুলিশ নাকি ‘জোর করে’ তাঁকে দিয়ে এ সব বলিয়েছে। শুধু তা-ই নয়, সোমবার অয়নের বাবা হরিদেবপুর থানার এক পুলিশ আধিকারিকের নাম করে জানান, সেই আধিকারিক তাঁদের হেনস্থা করেছেন। পুলিশের ভূমিকায় ‘হতাশ’ অয়নের বাবা বলেন, “পুলিশের উপর আমার কোনও আস্থা নেই, সিবিআই তদন্ত হলেই আমার মরা ছেলে ন্যায়বিচার পাবে।”
সোমবার তিনি বলেন, “বাবা হয়ে বলছি, অয়ন খুব ভাল ছেলে ছিল। ওর শুধু মেয়েটার সঙ্গেই ভালবাসার সম্পর্ক ছিল। মেয়েটির মায়ের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক ছিল না।”
দশমীর রাতে বান্ধবীর বাড়িতে গিয়েছিলেন কলকাতার হরিদেবপুরের বাসিন্দা, পেশায় অ্যাপ-বাইক চালক অয়ন মণ্ডল (২১)। তার পর থেকেই নিখোঁজ হন তিনি। শুক্রবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাটের মাগুরপুকুরে তাঁর মরদেহ শনাক্ত করা হয়। সেই ঘটনার সূত্রে অয়নের বান্ধবী, বান্ধবীর বাবা, মা, নাবালক ভাই-সহ মোট ৭ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, মাথায় আঘাতের জেরে অয়ন মারা যান এবং তার পরে পণ্যবাহী গাড়ি ভাড়া করে তাঁর দেহ মাগুরপুকুরে ফেলে দেওয়া হয়।
ঘটনার দিন অয়নের সঙ্গে এক বন্ধু গিয়েছিলেন। তিনি বান্ধবীর বাড়ির বাইরে ছিলেন। পুলিশ সূত্রের খবর, সেই সময়ে বান্ধবীর বাবা এবং ভাই বাড়িতে ছিলেন না। বাড়িতে ঢুকতেই বান্ধবীর মায়ের সঙ্গে অয়নের বচসা হয়েছিল। অন্য একটি সূত্রের দাবি, মোবাইলে বান্ধবী এবং তাঁর মায়ের সঙ্গে অয়নের ঘনিষ্ঠ ছবি নিয়ে সম্প্রতি গোলমাল হয়েছিল। ওই ছবি এবং ভিডিয়ো সম্পর্কে অয়নের কয়েক জন বন্ধুও জানতেন। অয়নের এক বন্ধু বলেন, “অয়ন নিজেই ওই ছবি বন্ধুদের দেখিয়েছিল। সম্প্রতি সেই খবর বান্ধবীর বাবা জানতে পারেন।” প্রশ্ন উঠেছে, ওই ছবি এবং ভিডিয়ো মুছে ফেলা নিয়েই কি গোলমাল? বহু ক্ষেত্রে এই ধরনের ছবি এবং ভিডিয়ো নিয়ে ব্ল্যাকমেল করার অভিযোগ ওঠে। এ ক্ষেত্রেও তেমন কিছু হয়েছিল কি না, সেই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। তবে অয়নের ফোনটি উদ্ধার হলেই এই প্রশ্নের জবাব পাওয়া যাবে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy