মহুয়া চৌধুরী। — নিজস্ব চিত্র।
রাস্তার ধারে ঝুঁকে পড়েছে একটি শিশু গাছ। তার নীচে ত্রিপল, বস্তা ঝুলিয়ে তৈরি করা ঝুপড়ি। সেই ছাউনিতে বসে প্রস্তুতি নিচ্ছেন পূর্ব বর্ধমানের গলসির আটপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মহুয়া চৌধুরী। তিনি এই বার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে চলেছেন। মাথার উপর নেই পাকা ছাদ তবু আকাশ ছোঁয়ার অদম্য জেদ মহুয়ার।
মহুয়ার বাবা মান্নান চৌধুরী পেশায় দিনমজুর। মা রেখা বেগম সামলান ঘরের কাজ। মান্নানের কথায়, বছর চারেক আগে আমফান ঝড়ে ভেঙে যায় তাঁদের মাটির বাড়ি। তখন থেকেই তাঁরা আশ্রয় নিয়েছেন গাছের নীচে। ঝুপড়ির এক কোণে খোলা আকাশের নীচে হয় রান্না। মান্নানের দাবি, ‘‘বৃষ্টির নামলে তখন বন্ধ হয়ে যায় রান্না। আমরা গরু-ছাগলের মতো বেঁচে আছি।’’ জীবনযন্ত্রণা নিয়ে আক্ষেপ রেখার গলাতেও। পরিবারের কথা বলতে গিয়ে হতাশার সুর রেখার গলায়। তাঁর বক্তব্য, ‘‘মেয়েটার কথা ভাবি। ওর জন্য কন্যাশ্রী প্রকল্পের ২৫ হাজার টাকাই ভরসা।’’ তাঁদের অভিযোগ, স্থানীয় পঞ্চায়েত বা বিডিওতে বার বার আবেদন করেও কোনও কাজ হয়নি।
তবু এই ‘আকালেও স্বপ্ন’ দেখাচ্ছেন মহুয়া। ওই ঝুপড়িতে পড়াশোনা করেই স্থানীয় রামগোপালপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এই বার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে চলেছেন তিনি। জীবনযুদ্ধের সঙ্গে চলছে সেই লড়াইয়েরও প্রস্তুতি। উচ্চ মাধ্যমিক ভাল ফল করে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর ইচ্ছা রয়েছে মহুয়ার। লড়াকু ছাত্রীর কথা শুনে আনন্দবাজার অনলাইনকে গলসি-১ ব্লকের বিডিও দেবলীনা দাস বলেন, ‘‘সভাধিপতি আমাকে বিষয়টি জানিয়েছেন। আগামিকাল মহুয়া চৌধুরীকে বিডিও অফিসে ডেকে ওঁদের কী সমস্যা তা দেখে নিচ্ছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy