মৃত রাজু ঝা। —ফাইল চিত্র।
কয়লা কারবারি রাজু ঝা খুনের মামলায় ধৃত অভিজিৎ মণ্ডলের শর্তসাপেক্ষে জামিন মঞ্জুর করল কলকাতা হাই কোর্ট। বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি এবং বিচারপতি অজয়কুমার গুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চ তাঁর জামিন মঞ্জুর করেছে। তবে জামিনের শর্ত হিসাবে বলা হয়েছে, ডাক পড়লেই আদালতে হাজির হতে হবে অভিজিৎকে। তা ছাড়া আপাতত পূর্ব এবং পশ্চিম বর্ধমানে তিনি ঢুকতে পারবেন না। জামিনে ছাড়া পাওয়ার পর তিনি কোথায় থাকছেন তা-ও তদন্তকারী অফিসার এবং নিম্ন আদালতকে জানাতে হবে। যে থানা এলাকায় তিনি থাকবেন সেখানকার অফিসার ইনচার্জের কাছে সপ্তাহে এক দিন হাজির হতে হবে তাঁকে।
আদালতে যুক্তিযুক্ত কারণ ছাড়া গরহাজির থাকলে যে আদালতে বিচার চলছে, সেখানকার বিচারক জামিন খারিজ করতে পারবেন। আদালতের একটি সূত্রে খবর, অভিজিতের হয়ে আইনজীবী সিদ্ধার্থ লুথরা জামিনের সওয়াল করেন। তিনি সওয়াল করেন, ‘‘ঘটনাস্থলে অভিজিৎ হাজির ছিল না। তাঁর ব্যবহৃত একটি সিম কার্ড খুনের ষড়যন্ত্রে ব্যবহার করা হয়েছে। মূলত ইলেকট্রনিক ডিভাইসের উপর নির্ভর করে তাঁকে মামলায় জড়ানো হয়েছে।’’ অন্য দিকে, সরকারের তরফে রুদ্রদীপ্ত নন্দী জানান, ধৃত নরেন্দ্র খারকা নামে এক ব্যবসায়ীর ‘সাইট ইনচার্জ’। খারকার সঙ্গে রাজুর ব্যবসায়িক শত্রুতা ছিল। সেই সূত্রে অভিজিৎ খুনের ষড়যন্ত্রে জড়িয়ে পড়েছে। ডিজিটাল ট্র্যাকিংয়ের রিপোর্ট অনুযায়ী, অভিজিতের ফোনে ব্যবহৃত সিম কার্ডটি রাজুকে খুনে জড়িতরা ব্যবহার করেছেন। এ নিয়ে বিস্তারিত তথ্য ও কল রেকর্ড তুলে ধরা হয় সরকার পক্ষের তরফে। যদিও বিচারপতিরা তাঁদের পর্যবেক্ষণে জানিয়েছেন, নরেন্দ্র খারকার কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ব্যবসায়িক শত্রুতার কথা বলা হয়েছে। চার্জশিটও পেশ হয়েছে। কিন্তু, খুনের মামলায় নরেন্দ্রকে যুক্ত করা হয়নি। তা ছাড়া অভিযুক্ত ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন না। বিচারপ্রক্রিয়া জলদি সম্পন্ন হবে বলে মনে হচ্ছে না। সেই ব্যপারটি মাথায় রেখে এবং দীর্ঘ দিন ধৃতের জেলে থাকার বিষয়টি পর্যালোচনা করে অভিজিতের জামিন মঞ্জুর করা হল।
তবে বিচারপতিদের পর্যবেক্ষণে নরেন্দ্রের নাম উঠে আসায় বিষয়টি অন্য মাত্রা পেয়েছে। সিটের তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এর আগে নরেন্দ্র হাই কোর্টে সিবিআই তদন্ত চেয়ে মামলা করেন। বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাসে সেই মামলায় সিবিআই জানায়, কয়লা এবং গরু পাচারের মামলার সঙ্গে খুনের মামলার যোগ থাকতে পারে। সিবিআইয়ের তরফে হাই কোর্টে জানানো হয়, কয়লা পাচারের একটি মামলায় খারকার নামে চার্জশিট জমা পড়েছে। যদিও প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতির অজয়কুমার গুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চ বিচারপতি মান্থার রাজু ঝা খুনের মামলার তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশে স্থগিতাদেশ দিয়ে সিবিআই সহ-সব পক্ষকে হলফনামা জমা দিয়ে বক্তব্য জানানোর নির্দেশ দেয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy