ছবি: সংগৃহীত
বেআইনি ভাবে পাম্প বসিয়ে দেদার মাটির নীচের জল তোলার অভিযোগ উঠছে জেলার নানা প্রান্তে। ভূগর্ভের জল তুলে ব্যবসা করার অভিযোগে সম্প্রতি দুর্গাপুর মহকুমার একাধিক জায়গায় অভিযান চালিয়ে বেশ কিছু পাম্পও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। মাঝে-মাঝে প্রশাসনিক অভিযান হলেও এই প্রবণতায় রাশ টানা যাচ্ছে না বলে দাবি আসানসোল ও দুর্গাপুরের বহু বাসিন্দার। সোমবার এ নিয়ে বৈঠক করেন জেলাশাসক শশাঙ্ক শেঠি। তিনি জানান, বিশেষ শিবির করে অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।
জেলা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, ভূগর্ভের জল তোলার আগে পুরসভা, পঞ্চায়েত এবং স্টেট ওয়াটার ইনভেস্টিগেশন ডিরেক্টরেট (সুইড)-এর অনুমতি নিতে হবে। জেলাশাসক শশাঙ্ক শেঠি জানান, এখনও পর্যন্ত জেলায় ১৫টি কারখানা ও আবাসন প্রকল্প সংস্থা ভূগর্ভস্থ জল ব্যবহার করতে চেয়ে আবেদনপত্র জমা দিয়েছে। তিনি আরও জানান, বহুতল নির্মাণকারী সংস্থা ও নানা বাণিজ্যিক সংগঠনকে সঙ্গে নিয়ে এলাকা ধরে বিশেষ শিবির করে সচেতনতা অভিযানের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
শহর লাগোয়া গ্রামীণ এলাকাগুলিতে বেআইনি ভাবে জল বিক্রির ব্যবসা গজিয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ উঠছে বেশ কিছু দিন ধরে। কয়েকটি এলাকার বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, জমিতে সেচ দেওয়ার নাম করে পাম্প বসিয়ে সারা বছর ধরে মাটির নীচের জল তোলে কিছু লোকজন। ট্যাঙ্কারে ভরে ট্রাক্টরে করে শহরের বহু সংস্থা, অফিস, এমনকি কিছু আবাসনেও জল বিক্রি করা হয় এক-দেড় হাজার টাকায়। দুর্গাপুর মহকুমায় শোভাপুর, বিজড়া, ধবনী, রাজবাঁধ-সহ নানা এলাকায় বেআইনি এই ব্যবসার অভিযোগ উঠছে। বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, এ ভাবে মাটির নীচের জল তুলে ফেলায় গ্রীষ্মে এলাকার কুয়ো ও টিউবওয়েলে জল পেতে সমস্যা হয়।
শহরে এই ধরনের জলের ট্যাঙ্কার ধরার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। যদিও প্রশাসনের দাবি, উৎসে অভিযান চালানো বেশি জরুরি। ২৪ জুলাই বিজড়া ও ধবনী গ্রামের মাঝে জমি থেকে বেশ কিছু পাইপ, পাম্প ও যন্ত্রপাতি বাজেয়াপ্ত করা হয়। ২৫ জুলাই কাঁকসার বাঁশকোপায় দু’টি জায়গায় অভিযান চালিয়ে পাম্প বাজেয়াপ্ত ও পাইপ ‘সিল’ করা হয়। স্থানীয় একটি বেসরকারি ইস্পাত কারখানায় দেদার মাটির নীচের জল তোলা হচ্ছে বলে বাসিন্দারা অভিযোগ তোলায় সেখানে তদন্তে যান প্রশাসনের কর্তারা। ১৯ নভেম্বর ফের অভিযান হয় বিজড়ায়। সেখান থেকে তিনটি সাবমার্সিবল পাম্প বাজেয়াপ্ত করা হয়। এ ছাড়াও বেআইনি ভাবে জল তোলার অভিযোগে সে দিন দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লক থেকে ৩টি ও কাঁকসার রাজবাঁধে একটি সাবমার্সিবল পাম্প বাজেয়াপ্ত করা হয়। একাধিক জেনারেটরও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলে জানান আধিকারিকেরা।
দুর্গাপুরের মহকুমাশাসক অনির্বাণ কোলে জানান, বেআইনি ভাবে জল তোলার বিরুদ্ধে সুইড-এর বিশেষজ্ঞদের নেতৃত্বে অভিযান চলছে। জেলাশাসক শশাঙ্ক শেঠি বলেন, ‘‘অনুমতি ছাড়া মাটির নীচের জল তুললে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy