আসানসোল পুরসভায় বাজেট পেশ। বুধবার। নিজস্ব চিত্র
রাজ্য বাজেটের রাস্তায় গিয়ে লোকসভা ভোটের আগে পুরসভার বাজেটে কল্পতরু হলেন আসানসোল পুর কর্তৃপক্ষ। অস্থায়ী কর্মীদের বেতন বৃদ্ধি, অবসরকালীন ভাতা দেওয়া, নতুন নিয়োগের প্রস্তাব-সহ প্রায় ৪২১ কোটি টাকার বাজেট পেশ হল বুধবার। মেয়র বিধান উপাধ্যায়ের দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর দেখানো পথেই বেতন বৃদ্ধি-সহ অন্য পরিষেবার প্রস্তাব রাখা হয়েছে। বিরোধীদের কটাক্ষ, বাজেটে ব্যয় বৃদ্ধির ক্ষেত্রে দরাজ হলেও আয় বাড়ানোর কোনও দিশা পুর কর্তৃপক্ষ দেখাতে পারেননি।
ভোটের আগে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সহায়িকাদের বেতন বৃদ্ধি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই পথ অনুসরণ করেই পুরসভার কয়েক হাজার অস্থায়ী কর্মীর বেতন বৃদ্ধি ও অবসরকালীন ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান আসানসোলের মেয়র। তিনি জানান, পুরসভার সাফাই, নিকাশি দফতর-সহ বেশ কিছু বিভাগের অস্থায়ী কর্মী আগে কখনও অবসরকালীন ভাতা পাননি। পুরবোর্ড তাঁদের আড়াই লক্ষ টাকা ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখানেই শেষ নয়, কর্তব্যরত অবস্থায় দুর্ঘটনায় মৃত্যু হলেও এই টাকা তাঁদের নিকটাত্মীয় পাবেন। মেয়র আরও জানান, পুরসভার ‘রিপ্রোডাক্টিভ চাইল্ড হেল্থ’-এর ৩৩ জন কর্মী-সহ বেশ কিছু অস্থায়ী কর্মীর বেতন বৃদ্ধির প্রস্তাব হয়েছে। আগের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ বেতন হচ্ছে। সাফাই, নিকাশি-সহ কিছু দফতরে নতুন কর্মী নিয়োগের প্রস্তাব করা হয়েছে। পরিষেবা বৃদ্ধির এই উদ্যোগ প্রসঙ্গে মেয়র বিধান উপাধ্যায় বলেন, ‘‘অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের বেতন বাড়ানোর দরদি পদক্ষেপ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এই সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়ে পুরকর্মীদের বেতন বৃদ্ধিতে উদ্যোগী হয়েছি।’’
মেয়র জানান, গারুই নদীর প্লাবন রোধে গত বছর সংস্কার শুরু হয়েছে। এ বছরও সেই কাজ চালিয়ে যেতে প্রায় দেড় কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। মেয়রের দাবি, সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সমীক্ষায় দেশের প্রথম দশটি নোংরা শহরের তালিকায় আসানসোল থাকার দুর্নাম ঘোচাতে সাফাই ও নিকাশি ব্যবস্থার উপরে এ বার বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। নতুন কর্মী নিয়োগ থেকে সাফাইয়ে ব্যবহারে আধুনিক যন্ত্র আমদানি করা হবে। জলের সঙ্কট পুরসভা এলাকায় নতুন নয়। প্রায় পাঁচটি জলপ্রকল্প তৈরি হয়েছে। এর পরেও ক্রমবর্ধমান শহর এলাকায় জলের সঙ্কট মাথাচাড়া দিচ্ছে। তা মেটাতে বিশেষ ব্যয় বরাদ্দ হয়েছে বলে দাবি মেয়রের। শহরের সৌন্দর্যায়নে উদ্যান নির্মাণ ও একাধিক জায়গায় তোরণ বসানোর জন্যও বরাদ্দ হয়েছে।
তবে বুধবার পেশ হওয়া বাজেটে আয় বাড়ানোর কোনও দিশা দেখানো হয়নি বলে দাবি করেছে বিরোধীরা। বিজেপির পুরপ্রতিনিধি গৌরব গুপ্তের কথায়, ‘‘আয় না বাড়িয়ে ব্যয়! প্রস্তাবের এই বিপুল অঙ্কের টাকা কোথা থেকে আসবে? সবই ভাঁওতা।’’ কংগ্রেসের পুরপ্রতিনিধি গোলাম সরওয়ারের দাবি, ‘‘পুরসভার কোটি কোটি টাকা পাওনা পড়ে আছে বাজারে। সে সব টাকা তোলার কোনও উদ্যোগ নেই। এ দিকে, ব্যায় বৃদ্ধির প্রস্তাব নিছকই লোক দেখানো।’’ যদিও বিরোধীদের অভিযোগ উড়িয়ে পুরসভার অধ্যক্ষ অমরনাথ চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, রাজস্ব আদায় ও নিরীক্ষণ না হওয়া সম্পত্তিকর আদায়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার প্রস্তাবও বাজেটে রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy