Advertisement
০৪ মে ২০২৪

‘মার্কেটিং’-এর দৌড়ে এখনও পিছিয়ে পানাগড়ের বেকারি

স্থানীয় সূত্রে জানা গেল, পানাগড় বাজারে একসময় ছোটবড় বেশ কয়েকটি বেকারি ছিল। কেক, বিস্কুট, পাঁউরুটি তৈরি হতো সেখানে। সেখান থেকে খাবার নিয়ে সাইকেলে করে গ্রামে গ্রামে ফেরি করতেন ফেরিওয়ালারা। ভাল ভাবেই চলত বেকারিগুলিও।

পানাগড়ের এক বেকারিতে চলছে কেক তৈরি। নিজস্ব চিত্র

পানাগড়ের এক বেকারিতে চলছে কেক তৈরি। নিজস্ব চিত্র

বিপ্লব ভট্টাচার্য
কাঁকসা শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:৪১
Share: Save:

সামনেই বড় দিন। বহুজাতিক সংস্থার তৈরি কেক দখল নিয়েছে বাজারের। এই পরিস্থিতিতে প্রতিযোগিতায় এঁটে ওঠাটাই সমস্যার বলে জানান তাঁরা। কারণ, অতীতের তুলনায় বিক্রিও ঠেকেছে তলানিতে, অন্তত তেমনটাই দাবি পানাগড়ের স্থানীয় বেকারি ব্যবসায়ীদের।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেল, পানাগড় বাজারে একসময় ছোটবড় বেশ কয়েকটি বেকারি ছিল। কেক, বিস্কুট, পাঁউরুটি তৈরি হতো সেখানে। সেখান থেকে খাবার নিয়ে সাইকেলে করে গ্রামে গ্রামে ফেরি করতেন ফেরিওয়ালারা। ভাল ভাবেই চলত বেকারিগুলিও। কিন্তু এ সবই এখন অতীত বলে আক্ষেপ করছিলেন হাজি মহম্মদ মজিবুল মিদ্যা-সহ নানা বেকারি মালিকেরা।

কেন এমনটা? পানাগড় বাজার ঘুরে দেখা গেল, বহুজাতিক সংস্থার কেক বিপণিগুলি থরে থরে সাজিয়ে রেখেছে পসরা। নতুন প্রযুক্তি, গুণমান এবং প্যাকেজিংও নজরকাড়়া সে সব কেকের। ফলে এ ধরনের সংস্থার কেকগুলিরই বেশি চাহিদা।

ফলে সমস্যা বেড়েছে সাবেক বেকারির। কথা বলে জানা গেল, পুরনো বেকারি ব্যবসায়ীরা অনেকেই পেশা পরিবর্তন করেছেন। কেউ বা নিজেদের তৈরি কেক সরাসরি তুলে দিচ্ছেন ওই সব সংস্থার বিপণিতে। পানাগড় বাজারের পুরনো বিডিও অফিসপাড়ায় প্রায় তিন দশক ধরে বেকারি চালান মজিবুল। তিনি জানান, বড়দিনের মাস দুয়েক আগে থেকে কর্মব্যস্ততা শুরু হয়ে যায় কারখানায়। এই মুহূর্তে তাঁর বেকারিতে রয়েছেন প্রায় ৫০ জন কর্মী। বড়দিনের মরসুমে সেই সংখ্যাটা আরও বাড়ে। দুই বর্ধমান, বীরভূম, পুরুলিয়া তো বটেই এমনকী ঝাড়খণ্ড, ওডিশাতেও এই কারখানা থেকে কেক, বিস্কুট যায় বলে জানা যায়। কিন্তু গত কয়েক বছরে প্রতিযোগিতার বাজার এমনই যে, ব্যবসায় ভাল রকম প্রভাব পড়ছে বলে জানান মজিবুল।

এ ছাড়াও ব্যবসা চালাতে বেশ কিছু সমস্যা হচ্ছে। পানাগড়ের নানা বেকারি মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, হয়তো গুণমানে একই ধরনের কেক তৈরি করেছে কোনও নামী সংস্থা এবং স্থানীয় বেকারি। কিন্তু বাধ্য হয়ে দামের ক্ষেত্রে অনেকটাই ছাড় দিতে হয় বলে জানান তাঁরা। তা ছাড়া আধুনিক প্রযুক্তি, ‘মার্কেটিং’ কৌশল-সহ নানা কারণেও বড় সংস্থাগুলির সঙ্গে প্রতিযোগিতায় এঁটে ওঠা মুশকিল বলে দাবি ওই সব সংস্থার মালিকদের।

এই পরিস্থিতিতে আমানুল্লা খানের মতো অনেকেই বেকারি তুলে দিয়ে বাইরে থেকে কেক এনে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন বলে জানা গেল। তা ছাড়া এই ব্যবসায় লাভ কম দেখে ভবিষ্যৎ প্রজন্মও এই পেশায় আসতে চাইছে না বলে দাবি।

সমস্যার সমাধানে মজিবুল, আমানুল্লা সকলেই চাইছেন সরকারি সহযোগিতা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE