Advertisement
০৫ মে ২০২৪
Burdwan University

অন্তর্বর্তী অডিট বন্ধের তদন্তে বিশেষ কমিটি

বর্ধমানের জেলখানা মোড়ে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখায় বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি স্থায়ী আমানত ভেঙে তিন বারে ১ কোটি ৯৩ লক্ষ ৮৯ হাজার ৮৭৬ টাকা অন্য এক জনের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়েছে।

বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়।

বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৭:১৮
Share: Save:

১০ বছর ধরে বন্ধ থাকা অন্তর্বর্তী অডিট করাতে বিশেষ কমিটি গঠন করল বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়। বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অরিন্দম গুপ্তের নেতৃত্বে ছ’জনের কমিটি গঠন করে দ্রুত রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্য গৌতম চন্দ্র। শুক্রবার বিকেলে তাঁর কাছে বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি করে ‘বর্ধমান ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন’ বা বুটা। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দাবি, সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া আর্থিক-দুর্নীতি নিয়ে পুলিশের পাশাপাশি বিচার বিভাগীয় তদন্ত করা যায় কি না, পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে।

বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার সুজিত চৌধুরী বলেন, “অডিট করার জন্য ছ’জনের বিশেষ কমিটি গঠন হয়েছে। বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কমার্সের অধ্যাপক অরিন্দম গুপ্তকে চেয়ারম্যান করা হয়েছে। ওই কমিটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব পরীক্ষক, গুসকরা কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ স্বপনকুমার পানও আছেন।”

বর্ধমানের জেলখানা মোড়ে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখায় বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি স্থায়ী আমানত ভেঙে তিন বারে ১ কোটি ৯৩ লক্ষ ৮৯ হাজার ৮৭৬ টাকা অন্য এক জনের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিযোগ, জাল সই ও জাল নথি জমা দিয়ে ব্যাঙ্কের গাফিলতিতে টাকা স্থানান্তর করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ বিভাগের প্রশ্ন, স্থায়ী আমানত ভেঙে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা সংস্থার সেভিংস অ্যাকাউন্ট ছাড়া টাকা পাঠানো যায় না। তা ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় চিঠি দিয়ে স্থায়ী আমানত পুনর্নর্বীকরণ করতে বলেছিল। তার পরেও ব্যাঙ্ক কী ভাবে ওই টাকা স্থানান্তর করল। বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি, ব্যাঙ্ক তাদের প্রশ্নের জবাবে কোনও চিঠি পাঠায়নি। তবে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্যাঙ্কের ওই শাখার তরফে পুলিশ সুপার আমনদীপকে একটি চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ বিভাগের কর্মী ও জনৈক এক ব্যক্তি ষড়যন্ত্র করে ব্যাঙ্কের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। পুলিশ সুপারের কাছে তাদের দাবি, সই মিলিয়েই আইন মাফিক তারা কাজ করেছেন। একই সঙ্গে ব্যাঙ্কের প্রশ্ন, টাকা পাঠানোর জন্য অনুমতি চিঠি পাঠানো হলেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কেন এত দিন চুপ ছিলেন?

এ দিন বিকেলে বুটার সদস্যেরা দাবি করেন, প্রায় দু’কোটি টাকার আর্থিক দুর্নীতি হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই আধিকারিকের সই জাল করা হয়েছে। বুটার নেতা ভাস্কর গোস্বামী বলেন, “পুরো ঘটনায় কেউ তদন্তের ঊর্ধ্বে নন। নিরপেক্ষ ভাবে তদন্ত হওয়া দরকার। আমরা বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছি।” বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ বিভাগ সব ব্যাঙ্ককে চিঠি দিয়ে স্থায়ী আমানতগুলি কী অবস্থায় রয়েছে তার বিস্তারিত তথ্য চেয়ে পাঠিয়েছে।

জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “তদন্ত শুরু হয়েছে। অর্থ দফতর, ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলা হবে। স্থায়ী আমানতের নথিও খতিয়ে দেখবে তদন্তকারী। অভিযুক্তদের খোঁজ চলছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Burdwan Audit
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE