Advertisement
১৮ মে ২০২৪
West Bengal Panchayat Election 2023

গ্রামের ভোটে আলাদা চিত্র হিন্দিভাষী বুথে

কাঁকসা পঞ্চায়েতে ৩০টি আসনের মধ্যে ১৮টি তৃণমূল, ১০টি বিজেপি ও ২টিতে সিপিএম প্রার্থীরা জিতেছেন। পানাগড় বাজার লাগোয়া বুথগুলি বেশিরভাগ গিয়েছে বিজেপির দখলে।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

নীলোৎপল রায়চৌধুরী, বিপ্লব ভট্টাচার্য
কাঁকসা, রানিগঞ্জ শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২৩ ০৮:১৮
Share: Save:

জেলার হিন্দিভাষী এলাকার ভোটে ভিন্ন চিত্র এ বারের পঞ্চায়েত ভোটে। অন্ডাল-রানিগঞ্জে হিন্দিভাষী এলাকাগুলিতে যেখানে তৃণমূলের একচ্ছত্র দাপট দেখা গিয়েছে, সেখানে কাঁকসার হিন্দিভাষী এলাকায় উল্টো ছবি। সেখানে ভাল ফল করেছে বিজেপি।

কাঁকসা পঞ্চায়েতে ৩০টি আসনের মধ্যে ১৮টি তৃণমূল, ১০টি বিজেপি ও ২টিতে সিপিএম প্রার্থীরা জিতেছেন। পানাগড় বাজার লাগোয়া বুথগুলি বেশিরভাগ গিয়েছে বিজেপির দখলে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই এলাকায় হিন্দিভাষী বহু মানুষের বাস। মূলত ব্যবসায়িক কারণে এখানে বিভিন্ন ভাষার মানুষ থাকেন। এই এলাকার ৮টি আসনে জিতেছে বিজেপি।

বিজেপি সূত্রের দাবি, এক সময়ে এই এলাকায় সিপিএমের ভাল প্রভাব ছিল। গত পঞ্চায়েত ভোটেও এর মধ্যে দু’টি আসনে সিপিএম প্রার্থীরা জেতেন। কিন্তু ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের পর থেকে চিত্রটা বদলাতে থাকে। সে বার প্রতিটি বুথে বিজেপি এগিয়েছিল। এলাকার বিজেপি নেতা রমন শর্মার দাবি, শুধু হিন্দিভাষীরা নয়, সব ভাষার ভোটারেরাই এ বার বিজেপিকে ভোট দিয়েছেন। কারণ তাঁরা বুঝেছেন, তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বিজেপিকেই দরকার। তাঁর আরও দাবি, ‘‘শুধু এই এলাকা নয়, কাঁকসা পঞ্চায়েতের আরও আসনে জিততে পারতেন বিজেপি প্রার্থীরা। কিন্তু সিপিএম কিছু ভোট কেটে নেওয়ায় তাঁরা হেরে গিয়েছেন।’’ তৃণমূলের কাঁকসা ব্লক সভাপতি ভবানী ভট্টাচার্যের মতে, ‘‘হিন্দিভাষী মানুষজনের মধ্যে বিজেপির প্রতি একটা ঝোঁক রয়েছে। তবে ভবিষ্যতে তৃণমূল ওই এলাকায় ভাল ফল করবে।’’

পাণ্ডবেশ্বরের হরিপুর পঞ্চায়েতের ২২-২৫ এবং ৩০-৩৫ নম্বর বুথ, অন্ডালের খান্দরা পঞ্চায়েতের ২৬-৩৬ এবং ৪৭-৪৯ নম্বর সংসদ, রানিগঞ্জের রতিবাটি পঞ্চায়েতে পাঁচটি বুথে হিন্দিভাষী বাসিন্দার প্রাধান্য রয়েছে। হরিপুরে গত লোকসভা ভোটে বিজেপি এবং বিধানসভা ভোটে তৃণমূল এগিয়ে ছিল। রতিবাটিতে ওই দুই ভোটেই বিজেপি এগিয়ে ছিল। খান্দরায় লোকসভায় তৃণমূল ও বিধানসভায় সিপিএম এগিয়ে ছিল। দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের ইছাপুর পঞ্চায়েতের সরপির একটি বুথে বেশিরভাগই হিন্দিভাষী ভোটার। লাউদোহা পঞ্চায়েতের দু’টি বুথ, গোগলা পঞ্চায়েতের দু’টি সংসদেও বেশির ভাগ বাসিন্দা হিন্দিভাষী। ইছাপুর, লাউদোহা পঞ্চায়েতে গত লোকসভা ও বিধানসভা ভোটে তৃণমূল এবং গোগলায় বিজেপি এগিয়ে ছিল। কিন্তু এ বার পঞ্চায়েত ভোটে এই সব এলাকায় বিরোধীদের খাতা খোলেনি। সব আসনই তৃণমূলের দখলে।

বিজেপির আসানসোল জেলা সভাপতি দিলীপ দে দাবি করেন, তৃণমূলের সন্ত্রাসের কারণেই এই ফল হয়েছে। বিজেপি হিন্দিভাষী মানুষজনের সমর্থন হারিয়েছে, তা এই ফল দেখে বলা উচিত নয় বলে তাঁর দাবি। সিপিএম নেতা পার্থ মুখোপাধ্যায়েরও একই দাবি। তৃণমূলের পশ্চিম বর্ধমান জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী অবশ্য বলেন, ‘‘সব ভাষার মানুষই বুঝেছেন, উন্নয়নের কান্ডারি শুধু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারই প্রতিফলন হয়েছে পঞ্চায়েত ভোটে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE