Advertisement
০১ নভেম্বর ২০২৪
bardhaman

টর্চ জ্বেলে, মশার কামড় খেয়ে পুকুর পাহারায় পুলিশ

দিন কয়েক আগে বেশ কিছু নোট উদ্ধার হয়েছে ওই পুকুর থেকে। পুলিশও জাল ফেলে বেশ কিছু টাকা তোলে। তারপর থেকে সবাই তক্কে তক্কে রয়েছেন ঝুপ করে জলে ঝাঁপ দেওয়ার।

পুকুরপাড়ে মোতায়েন সিভিক ভলান্টিয়ার। নিজস্ব চিত্র

পুকুরপাড়ে মোতায়েন সিভিক ভলান্টিয়ার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেমারি শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০২:১০
Share: Save:

পুকুরে ডুব দিলেই ফিরছিল যৌবন। পাঁচ গায়ের ছেলেবুড়ো লাইন দিয়েছিলেন পুকুর পাড়ে। ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘৮০তে আসিও না’ সিনেমায় এমন স্বপ্ন দেখেছিলেন নায়ক। বাস্তবে যৌবন না ফিরলেও টাকার খোঁজে পুকুরে ডুব দিচ্ছেন মেমারির মোশগড়িয়া গ্রামের লোকজন।
দিন কয়েক আগে বেশ কিছু নোট উদ্ধার হয়েছে ওই পুকুর থেকে। পুলিশও জাল ফেলে বেশ কিছু টাকা তোলে। তারপর থেকে সবাই তক্কে তক্কে রয়েছেন ঝুপ করে জলে ঝাঁপ দেওয়ার। পরিস্থিতি সামলাতে শুক্রবার থেকে মাস্ক পরে, মশার কামড় খেয়ে ২৪ ঘণ্টা পুকুর পাহারা দিচ্ছেন সিভিক ভলান্টিয়ারেরা।
মেমারি থানার পুলিশের দাবি, সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ভিড় হচ্ছে। কখনও দু’জন, কখনও তিন জন পুলিশ পাহারা দিচ্ছেন। ওই ‘পাহারাদারদের’ কথায়, ‘‘সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চোখে চোখে রাখতে হচ্ছে। একটু এ-দিক, ও-দিক হলেই কেউ ঝুপ করে জলে লাফিয়ে পড়বেন! ভিড়ের চাপে দুর্ঘটনাও ঘটে যেতে পারে।’’ মেমারি থানার এক পুলিশ আধিকারিকের দাবি, গ্রামের বাচ্চারা পুকুর পাড়ে ভিড় করছে। সেটাই সবচেয়ে ভয়ের কারণ।
পুকুর পাড়ের চারদিক অন্ধকার। গাছপালায় ঢাকা। কিছুটা গা-ছমছমে পরিবেশ। এক সিভিক ভলান্টিয়ার বলেন, ‘‘রাতের বেলা মশা আর আমরা দু’জন সিভিক থাকছি। চারদিকে অন্ধকার। তার মধ্যেও কেউ কেউ জলে নামার চেষ্টা করছেন। টর্চ হাতে তাড়া করতে হচ্ছে।’’ রাত ১২টার পর থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত মাঝেমাঝেই টর্চ ঘুরিয়ে চারপাশ দেখছেন তাঁরা। মোটরবাইকেই গা এলিয়ে, মোবাইলে ভিডিয়ো গেম খেলে, গল্প করে আর মশার কামড় খেয়ে রাত কাটাচ্ছেন তাঁরা। এক সিভিক ভলান্টিয়ারের কথায়, ‘‘বাড়ি থেকে খাবার নিয়ে আসি। রাতে খাওয়ার পরে গ্রামবাসীদের সঙ্গে রাত ১২টা পর্যন্ত কেটে যায়। তারপরে মোটরবাইকে বসে মোবাইলে খুটখাট করি। আর মশা মারতে থাকি। পুকুরের পাশে বসে ডেঙ্গির ভয়ও লাগে!’’
দিনের বেলা অবশ্য জিরোনোর ফুরসত থাকে না। একে-তাকে পুকুরের ধার থেকে সরানো, কেউ জাল ফেলার চেষ্টা করলে আটকানো চলতে থাকে। ওই গ্রামের এক যুবক শেখ শাহরুখ বলেন, ‘‘সবাই চায়ছে যদি ফাঁক গলে কিছু টাকা মেলে। পুলিশ চলে গেলেই জলে নেমে টাকার খোঁজ শুরু হয়ে যাবে।’’
এলাকার জেলা পরিষদের সদস্য মহম্মদ ইসমাইল বলেন, ‘‘পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত সিভিক ভলান্টিয়ারদের পাহারা থাকাই ভাল।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Bardhaman Memari
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE