Advertisement
১৮ মে ২০২৪
খাদানে অভিযানের জের

সরকারি কর্মীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ

দিন দুয়েক আগেই বালি খাদানে অভিযান চালিয়ে চারটি বালি তোলার যন্ত্র ও দুটি বালিবোঝাই ট্রাক আটক করেছিলেন প্রশাসনের আধিকারিকেরা। কিন্তু পুলিশের সঙ্গে ‘ভুল বোঝাবুঝি’তে অভিযানটাই ভেস্তে যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাটোয়া শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০১৬ ০২:১১
Share: Save:

দিন দুয়েক আগেই বালি খাদানে অভিযান চালিয়ে চারটি বালি তোলার যন্ত্র ও দুটি বালিবোঝাই ট্রাক আটক করেছিলেন প্রশাসনের আধিকারিকেরা। কিন্তু পুলিশের সঙ্গে ‘ভুল বোঝাবুঝি’তে অভিযানটাই ভেস্তে যায়। বালি তোলার যন্ত্রগুলি ছিনিয়ে নিয়ে যায় স্থানীয় বাসিন্দারা। একটি ট্রাক শুধুমাত্র কেতুগ্রাম থানায় আটক করে রাখা হয়। বৃহস্পতিবার নিজেকে ওই ট্রাকের মালিক দাবি করে মহকুমাশাসকের কাছে হাজির হন এক ব্যক্তি। প্রথমে ওই অভিযানে থাকা ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের বিরুদ্ধে ঘুষ চাওয়ার অভিযোগ করেন তিনি। পরে বয়ান বদলে জানান, পুরো অভিযোগটাই কেতুগ্রাম থানায় কথায় করেছেন। মহকুমাশাসক শেষমেশ ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে মানহানির উদ্দেশ্যে কর্তব্যরত সরকারি কর্মীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ অবশ্য কিছু জানাতে চায়নি।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন কেতুগ্রামের চরখি গ্রামের বাসিন্দা বাণেশ্বর মাঝি মহকুমাশাসকের কাছে এসে অভিযোগ করেন, গত মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটে নাগাদ ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট বিপ্লব সরকার চার জন কর্মী নিয়ে চরখি ঘাটে এসে ঘাটে রাখা জেসিবি মেশিনটি তুলে নিয়ে যাওয়ার ভয় দেখিয়ে তাঁর চালকের কাছ থেকে পঁচিশ হাজার টাকা উপঢৌকন চান। ভয়ে চালক ওই টাকাও দিয়ে। পরে ম্যাজিস্ট্রেট বাণেশ্বরবাবুর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ফের পঁচিশ হাজার টাকা ঘুষ চান ও না দিলে ‘মিথ্যা কেসে ফাঁসিয়ে দেওয়া হবে’ বলে হুমকিও দেন বলে তাঁর অভিযোগ। তবে তিনি চিৎকার করে লোক জড়ো করলে প্রশাসনের আধিকারিকেরা চলে যান। যাওয়ার সময় চরখি বাসস্ট্যান্ড থেকে একটি ট্রাক আটক করে নিয়ে যাওয়া হয় বলেও দাবি করেন তিনি। কিন্তু অভিযোগ জমা দেওয়ার পরেই বাণেশ্বরবাবুকে ধরে রেখে খুঁটিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন ওই দফতরের আধিকারিকেরা। তাঁদের দাবি, বাণেশ্বরবাবু জানান, পুরো অভিযোগটিই মিথ্যা। কেতুগ্রাম থানার আইসি আবু সেলিমের পরামর্শেই তিনি এই অভিযোগ করেছেন বলেও স্বীকার করেন বাণেশ্বরবাবু। এমনকী, মহকুমাশাসককে মুচলেকা দিয়ে জানান, ‘অতিরিক্ত বালিবোঝাই ট্রাক ছাড়াতে গিয়ে আইসির সঙ্গে দেখা করলে তিনি তাঁকে অভিযানকারী দলের বিরুদ্ধে উপঢৌকন চাওয়ার অভিযোগ করার পরামর্শ দেন।’ বাণেশ্বরবাবু বলেন, ‘‘থানা থেকে একটি চিঠি টাইপ করে আমাকে দিয়ে সই করিয়ে নিয়ে বলা হয় মহকুাশাসকের কার্যালয়ে জমা দিয়ে আসতে। সেইমতো মিথ্যা অভিযোগ অভিযোগ করি। পুরো পরিকল্পনাটাই কেতুগ্রাম থানার পুলিশের।’’

এ দিন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট বিপ্লববাবু বলেন, ‘‘ঘুষ চাওয়ার অভিযোগ যে সম্পূর্ণ মিথ্যা তা অভিযোগকারী স্বীকার করেছে। তবে পুলিশ এর সঙ্গে জড়িত কি না তা তদন্ত করা হোক।’’ কাটোয়ার মহকুমাশাসক খুরশিদ আলি কাদরি বলেন, ‘‘অভিযোগকারীকে দেখে মাদকাসক্ত মনে হচ্ছিল। বারবার বয়ান বদলানোয় দফতরের তরফে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে।’’ যদিও এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি কেতুগ্রামের আইসি আবু সেলিম। এস়ডিপিও শচিন মাঁকড় বলেন, ‘‘অভিযোগ পেলে বিষয়টি বিস্তারিত খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

public employee conspiracy
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE