Advertisement
২১ মে ২০২৪
অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট

বিলগ্নিকরণ প্রশ্নে সংসদে সরব ঋতব্রত

অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট-এর (এএসপি) কৌশলগত বিলগ্নিকরণের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে শুক্রবার রাজ্যসভায় সরব হলেন সিপিএম সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিন রাজ্যসভার ‘জিরো আওয়ার’-এ বিষয়টি তোলেন ঋতব্রত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০১৭ ০১:৫০
Share: Save:

অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্ট-এর (এএসপি) কৌশলগত বিলগ্নিকরণের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে শুক্রবার রাজ্যসভায় সরব হলেন সিপিএম সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিন রাজ্যসভার ‘জিরো আওয়ার’-এ বিষয়টি তোলেন ঋতব্রত। সার্বিক ভাবে ধুঁকতে থাকা দুর্গাপুর ও আসানসোল শিল্পাঞ্চলের বর্তমান পরিস্থিতি তিনি এ দিন রাজ্যসভায় তুলে ধরেন।

বিশেষ ধরনের প্রায় পাঁচশো রকমের মিশ্র ইস্পাত উৎপাদন হয় এএসপিতে। প্রতিরক্ষাক্ষেত্রে সাব-মেরিন, ক্ষেপনাস্ত্র তৈরি, হাইস্পিড রেলওয়ে-সহ নানা জায়গায় এই ইস্পাত ব্যবহৃত হয়। লাগাতার লোকসানে চলা এই কারখানার ভবিষ্যৎ নিয়েই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার অলাভজনক সংস্থা চালানোর ব্যাপারে আর উৎসাহী নয় বলে ঘোষণা করেছে। ভদ্রাবতী, সালেমের ইস্পাত কারখানা এবং দুর্গাপুরের এএসপি কারখানার কৌশলগত বিলগ্নিকরণের সিদ্ধান্ত আর্থিক বিষয়ক (ইকোনমিক অ্যাফেসার্স) ক্যাবিনেট কমিটি অনুমোদন করেছে। সম্প্রতি কারখানার মূল্য নির্ধারণ এবং অন্য আনুসঙ্গিক বিষয় চূড়ান্ত করার জন্য টেন্ডারও ডাকা হয়েছে। এমন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কর্মী সংগঠনগুলি টানা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে।

সম্প্রতি এ বিষয়ে উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বাম বিধায়ক সুজন চক্রবর্তী চিঠি দেন মুখ্যমন্ত্রীকে। শুক্রবার রাজ্যসভায় বিষয়টি উল্লেখ করে অবিলম্বে সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের দাবি জানান বাম সাংসদ ঋতব্রত। তিনি জানান, দুর্গাপুর শহর ও আশপাশের এলাকার অর্থনীতি এএসপি-র উপরে অনেকটাই নির্ভরশীল। সে কথা মাথায় রেখে এবং শ্রমিক স্বার্থ সুরক্ষিত রাখতে বিলগ্নিকরণ করা যাবে না। দেশের বিভিন্ন ইস্পাত কারখানার আধুনিকীকরণের জন্য সেইল ৭২ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করলেও এএসপি-র জন্য এক টাকাও দেওয়া হয়নি। ইতিমধ্যেই এএসপি-র কর্মী সংখ্যা ৭৪০০ থেকে ৯৫৪ তে নেমে এসেছে। অথচ সেইলের বহু সংস্থার তুলনায় এএসপি-র লোকসান সামান্যই। ইস্পাত মন্ত্রকের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিলেই তা সামাল দেওয়া সম্ভব। দেশের জাতীয় ক্ষেত্রে কাজে লাগে এমন মূল্যবান সংস্থাকে কোনও ভাবেই বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়া উচিত নয় বলে দাবি করেন ঋতব্রত। পাশাপাশি দুর্গাপুর ইস্পাতের (ডিএসপি) উৎপাদন ক্ষমতা বাড়ানোরও
দাবি তোলেন।

এ দিন ঋতব্রত দুর্গাপুরের বন্ধ রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা এমএএমসি, এইচএফসিএল, বিওজিএল-সহ নানা কারখানা বন্ধের প্রসঙ্গ তোলেন। দাবি করেন, এমএএমসি খোলার ব্যাপারে স্পষ্ট কোনও উদ্যোগ নেই। এইচএফসিএল চালুর ব্যাপারেও নির্দিষ্ট পদক্ষেপ করা হয়নি। অন্য দিকে, রাজ্য সরকার ডিসিএলের বিলগ্নিকরণ এবং ডিপিএলের কোকওভেন প্ল্যান্ট বন্ধ করে দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে। সব মিলিয়ে দুর্গাপুরের আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি তলানিতে এসে ঠেকেছে। এ ছাড়া আসানসোলের ইস্কো কুলটি গ্রোথ সেন্টার, বার্ন স্ট্যান্ডার্ড ওয়াগন কারখানা, হিন্দুস্থান কেবলস লিমিটেড-সহ অন্য কারখানার উল্লেখ করে বর্ধমান জেলার স্বার্থে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান তিনি। সংসদের আর্জি, ‘‘দুর্গাপুরের শ্রমিকেরা শিল্প বাঁচানোর দাবিতে ১০৪ কিলোমিটার লং-মার্চ করেছেন। ৯ কিলোমিটার লম্বা মানববন্ধন কর্মসূচী নিয়েছেন। শিল্পাঞ্চলের স্বার্থে এ বার কেন্দ্রীয় সরকার এগিয়ে আসুক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Alloy Steels Plant Ritabrata Banerjee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE