Advertisement
২৫ মে ২০২৪

আলোয় ফিরছে কার্জন গেট

শহরবাসীর মতে গেটের গায়ে রঙের খেলা ভালই খুলেছে। পুরসভা জানায়, মূল গেটের অংশ সবুজ, স্তম্ভগুলি বেগুনি ও দু’টি খিলান সাদা-হলদেটে আলোয় সাজানো হয়েছে।

ঝলমলে: আলোয় সেজেছে কার্জন গেট। —নিজস্ব চিত্র।

ঝলমলে: আলোয় সেজেছে কার্জন গেট। —নিজস্ব চিত্র।

সৌমেন দত্ত
বর্ধমান শেষ আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০১৮ ০০:৫৮
Share: Save:

এ যেন অন্ধকার থেকে আলোয় ফেরা। গ্র্যান্ড ট্রাঙ্ক রোড থেকে বিজয়চাঁদ রোডে ঢোকার মুখে শতাব্দী প্রাচীন বর্ধমানের ‘কার্জন গেট’ অবশেষে স্থায়ী ভাবে আলোকিত হতে চলেছে। বর্ধমান পুরসভার দাবি, সব ঠিক থাকলে ২২ জানুয়ারি, সরস্বতী পুজোর দিনই কার্জন গেটের দু’দিকেই জ্বলবে আলো। দেরিতে হলেও অবশেষে বর্ধমান শহরের ‘স্টার’ হিসেবে দাঁড়িয়ে থাকা এই গেট আলোকিত হওয়ায় খুশি বর্ধমানবাসীও।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আপাতত জিটি রোডের দিকে কার্জন গেটের আলো জ্বলছে। ২২ জানুয়ারি থেকে অন্য দিক, অর্থাৎ বিজয়চাঁদ রোডের (বিসি রোড) দিকেও আলো জ্বলবে বলে আশ্বাস বর্ধমান পুরসভার।

শহরবাসীর মতে গেটের গায়ে রঙের খেলা ভালই খুলেছে। পুরসভা জানায়, মূল গেটের অংশ সবুজ, স্তম্ভগুলি বেগুনি ও দু’টি খিলান সাদা-হলদেটে আলোয় সাজানো হয়েছে। মাথার অংশ, যেখানে লেখা ‘বিজয়তোরণ’, তা সেজেছে নীল রঙে। গেটের উপরে থাকা নারীমূর্তিগুলি সাজছে সাদা আলোয়। এ ছাড়া ৫০টি ‘এলইডি স্টিক’ বসানো থাকছে গেটের চার দিকে। আটটি ‘স্পট-লাইট’ও থাকবে। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, এই মুহূর্তে সন্ধ্যে ছ’টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত আলো জ্বালানো হবে। ঠিকাদার সংস্থা গেটের আলোর কাজ শেষ করার পরে এখানে ‘সেন্সার’ও বসানো হবে। তা অনুযায়ী স্বয়ংক্রিয় ভাবে আলো জ্বলবে-নিভবে।

ইতিহাসের বহু আলোছায়ার সাক্ষী এই তোরণ। কিন্তু লন্ডনের সিয়ন হাউসের গেটের ধাঁচে এক বছরের বেশি সময় ধরে তৈরি হওয়া বর্ধমানের এই গেটে আলোকসজ্জা কখনও দেখা যায়নি, অন্তত তেমনটাই দাবি শহরবাসীর। তাঁদেরই কেউ কেউ জানান, ২০০০ সালের পর থেকে ‘বর্ধমান উৎসব’-এর সময় ছাড়া, কার্জন গেটকে আলাদা ভাবে আলো দিয়ে সাজানো হয়েছে, এমন দৃশ্য দেখা যায়নি। তাই শেষমেশ এই গেট আলোকিত হওয়ায় খুশি বর্ধমানবাসী। আইনজীবী কমল দত্তের মতে, ‘‘নাগরিক আন্দোলনের এটা একটা বিরাট জয়। লাগাতার ভাবে লেগে থাকার জন্যই পুরসভা বাধ্য হয়েছে আলো বসাতে।’’ বর্ধমানের রাজ পরিবারের ইতিহাস নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে চর্চা করা গবেষক নিরোদবরণ সরকারও বলেন, ‘‘অনেক আগে টিমটিম করে আলো জ্বলত কার্জন গেটে। সেই আলো নিভে গিয়েছিল। এখন ফের আধুনিক আলো বসছে দেখে ভাল লাগছে।’’ একই কথা বলেন বর্ধমান ড্রামা কলেজের অধ্যক্ষ ললিত কোনারও। তাঁর কথায়, ‘‘অন্ধকারে থাকা কার্জন গেটের দিকে কেউ তাকাত না। এ বার বর্ধমানবাসীর চোখ টানবে কার্জন গেট।’’

পুরসভার চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল (আলো) সাহাবুদ্দিন খান বলেন, ‘‘আলো লাগাতে চার লাখ সত্তর হাজার টাকা খরচ হয়েছে। মানুষের দাবি মেনে কার্জন গেটকে আলোকিত করা হল।’’ পুরপ্রধান স্বরূপ দত্তও বলেন, ‘‘আমরা কথা দিয়েছিলাম, ঐতিহ্যবাহী কার্জন গেটের সৌন্দর্যায়ন করা হবে। সেই কাজের প্রথম ধাপ শেষ হওয়ার পথে। দ্বিতীয় পর্যায়ে গেটের চার দিকে নানা রঙের ফুলের গাছ লাগাব বলে ঠিক করেছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Lord Curzon Gate Light
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE