এই রেল ইয়ার্ডই নিমচায় স্থানান্তরিত করার দাবি। নিজস্ব চিত্র
ইয়ার্ড রয়েছে। কিন্তু জায়গার অভাবে গুদামঘর তৈরি করা যায়নি রানিগঞ্জ স্টেশন লাগোয়া ইয়ার্ডের পাশে। গুদাম না থাকায় পণ্য রাখা যায় না। মালগাড়ি থেকে তা সরাসরি বাজারজাত করতে হয়। এই পরিস্থিতিতে রানিগঞ্জ শহর থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে নিমচা ‘ব্লকহাট’ (যেখানে শুধু রেলকর্মীদের জন্য ট্রেন দাঁড়ায়)-এর কাছে রেল ইয়ার্ডটি স্থানান্তরিত করার দাবি উঠেছে।
কয়লাশিল্পের জাতীয়করণের আগে দিল্লি-হাওড়া রেললাইনের ধারে নিমচা ‘ব্লকহাট’-এর কাছে পূরণমল কোলিয়ারির রেল সাইডিং ছিল। পরে সেই সাইডিংটি বন্ধ হয়ে যায়। এই মুহূর্তে ওই এলাকাতেই রানিগঞ্জের ইয়ার্ডটি স্থানান্তরিত করার দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ী তথা জেমারি পঞ্চায়েতের সদস্য তারকেশ্বর সিংহ জানান, বছরখানেক আগে তাঁরা ইয়ার্ড স্থানান্তরিত করার জন্য ডিআরএম (আসানসোল)-এর কাছে লিখিত আর্জি জানিয়েছিলেন। পরে রেলের প্রতিনিধিদলও এলাকাটি পরিদর্শন করে। কিন্তু ইয়ার্ড স্থানান্তরিত হয়নি। তারকেশ্বরবাবু বলেন, “আমরা চাই, ‘পিপিপি’ মডেলে ইয়ার্ড তৈরি হোক।”
কিন্তু এই এলাকাতেই স্থানান্তরিত করার দাবি কেন? এর প্রথম কারণ, দূরত্বগত। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রানিগঞ্জ রেল স্টেশন থেকে ২ নম্বর জাতীয় সড়কের দূরত্ব চার কিলোমিটার। নিমচা থেকে সেই দূরত্ব মাত্র দু’কিলোমিটার। দ্বিতীয় তথা প্রধান কারণ, রেললাইনের পাশে পর্যাপ্ত জায়গা থাকায় সেখানে ইয়ার্ড হলে প্রচুর গুদামঘর তৈরি করা যাবে।
রানিগঞ্জ স্টেশন লাগোয়া ইয়ার্ডে এই মুহূর্তে ফি দিন মালগাড়ি থেকে আকরিক লোহা, কয়লা, সিমেন্ট, স্পঞ্জ আয়রন কারখানার জন্য জরুরি নানা সামগ্রী বোঝাই ও খালি করার কাজ করা হয়। কিন্তু এখানে জায়গার অভাবে ইয়ার্ডের পাশে গুদাম তৈরি করা যায়নি। ফলে যাবতীয় জিনিসপত্র মালগাড়ি থেকে খালি করে সরাসরি বাজারে নিয়ে যেতে হয়। নিমচায় ইয়ার্ড তৈরি হলে সেখানে গুদামঘরে জিনিসপত্র রেখে প্রয়োজনমতো তা বাজারজাত করা যাবে। একাধিক মালগাড়ি ইয়ার্ডে দাঁড়াতে পারবে। ফলে এক দিকে ব্যবসায়ীরা যেমন লাভবান হবেন, তেমনই অসংগঠিত ক্ষেত্রে কর্মসংস্থানও হবে।
রানিগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি সন্দীপ ভালোটিয়া জানান, রানিগঞ্জ শহর অপরিকল্পিত ভাবে তৈরি হয়েছে। ফলে বহু পরিকাঠামোগত সমস্যা রয়েছে। স্টেশনের পাশেই শহরের মূল বাসস্ট্যান্ড, বাজার। ফলে ইয়ার্ড থেকে পণ্য খালির পরে তা পরিবহণ করতে গেলে মূল রাস্তাতেই ব্যাপক যানজট হয়। ইয়ার্ডটি অন্যত্র স্থানান্তরিত করা হলে সেই সমস্যা অনেকটাই কমবে। ইয়ার্ড স্থানান্তরিত করার জন্য সাংগঠনিক ভাবে বারবার রেলের কাছে আর্জি জানিয়েছে রানিগঞ্জের ওই বণিক সংগঠনটিও।
তবে এ বিষয়ে পূর্ব রেলের আসানসোল ডিভিশনের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমার্শিয়াল ম্যানেজার রাহুল রঞ্জন বলেন, “এই মুহূর্তে ইয়ার্ড স্থানান্তরিত করার কোনও পরিকল্পা নেই। তবে ভবিষ্যতে বিষয়টি খতিয়ে দেখা যেতে পারে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy