বেহাল জিআরও অফিস। নিজস্ব চিত্র
ঘরে আলো বাতাস ঢোকে না। নোনা ধরা দেওয়ালের নানা জায়গায় লম্বা ফাটল। বৃষ্টি হলেই চাদ চুইয়ে জল পড়ে মেঝেয়। সিমেন্টের চাঙর খসে বিপদের আশঙ্কাও কম নয়। বছরের পর বছর এ অবস্থাতেই রয়েছে কালনা আদালতের জিআরও কার্যালয়। আইনজীবীদের দাবি, বহু গুরুত্বপূর্ণ মামলার নথি নষ্ট হয়ে গিয়েছে ওই ঘরে থেকে।
সাধারণ ভাবে বিভিন্ন মামলার চার্জশিট জমা দেওয়ার পরে কেস ডায়েরি রাখা হয় এই ঘরে। মামলা আদালতে উঠলে নানা সময়ে নথিগুলির প্রয়োজন হয়। জিআরও কার্যালয়ের কর্মীদের দাবি, ছোট ঘরের মেঝে, টেবিল, তাক, আলমারি সব জায়গা কাগজে ভরে গিয়েছে। এমনকী, যে সাত জন কর্মী রয়েছেন তাঁদেরও ঘরের ভিতর বসে কাজ করার জায়গা নেই। বছর দুয়েক ধরেই ঘরের সামনে টিনের শেডের নীচে টেবিল-চেয়ার নিয়ে দৈনন্দিন কাজকর্ম সারেন তাঁরা। আইনজীবীদের অভিযোগ, ঘরের স্যাঁতসেতে আবহাওয়ায় বহু নথিতে উই ধরেছে। জল পড়েও নষ্ট হয়েছে অনেক কাগজ। আইনজীবী পার্থসারথী করের দাবি, মন্তেশ্বর থানার ১৯৯৫ সালের একটি চুরির মামলার শুনানি শুরু হওয়ার কথা ছিল ২৯ জুন। কিন্তু জিআরও কার্যালয় থেকে মামলার কোনও নথি মিলছে না। তাঁরা লিখিত ভাবে জানিয়েও দিয়েছেন সে কথা। এখন অন্য কোথাও থেকে নথি না পাওয়া গেলে পুরো পদ্ধতিটাই পিছিয়ে যাবে বলে তাঁর আশঙ্কা। অন্য আইনজীবীদেরও দাবি, নথি না মেলায় বহু মামলা শুরু হতে দেরি হচ্ছে।
জিআরও কার্যালয়ের পাশে মালখানা, লকআপের বেহাল দশা নিয়েও অভিযোগ রয়েছে। পুলিশ কর্মীদের দাবি, আদালতে তোলার আগে বিভিন্ন থানা থেকে আসা অভিযুক্তদের ওই লকআপে রাখা হয়। জনা কুড়ি অভিযুক্তকে পাশাপাশি দাঁড় করিয়ে রাখার জায়গা রয়েছে সেখানে। তার মধ্যে গাদাগাদি করে তিরিশ জনকেও রাখতে হয় বলে তাঁদের দাবি। আর মহিলা অভিযুক্তদের বসিয়ে রাখা হয় টিনের একটি ঘরে। লকআপের গরম কাটাতে বাইরে থেকে ফ্যান চালাতে হয় বলেও পুলিশ কর্মীদের দাবি। আইনজীবীরা জানান, জেলা জজ, আইনমন্ত্রী-সহ বহু আধিকারিককে বারবার পরিকাঠামো উন্নতির কথা বলা হয়েছে। কিন্তু কাজ হয়নি।
মহকুমা প্রশাসনের এক আধিকারিকের যদিও দাবি, জিআরও কার্যালয়ের সংস্কার-সহ বেশ কিছু কাজের জন্য ৪৫ লক্ষ টাকার একটি প্রকল্প বিচার বিভাগে পাঠানো হয়েছে। তবে অনুমোদন মিলেছে কি না, বা কাজ শুরু হবে কবে তা জানাতে পারেননি তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy