বালির সঙ্গে গজি়য়ে উঠেছে আগাছাও। নিজস্ব চিত্র
এখন যত নজর ব্যারাজের ১ নম্বর গেটের দিকেই! কিন্তু সর্বশেষ অর্থাৎ ৩৪ নম্বর গেটটিরও যে বেহাল অবস্থা তা নিয়ে কোনও তরফেই কোনও হেলদোল নেই। দীর্ঘদিন ধরে ওই গেটটি ওঠানো-নামানো হয়নি। শুধু তাই নয়, গেটের সামনে বালি জমে তার উপরে আগাছা জন্মেছে।
দামোদরের বন্যা নিয়ন্ত্রণে দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন (ডিভিসি) বরাকর নদের উপর তিলাইয়া ও মাইথন, দামোদরের উপর তেনুঘাট ও পাঞ্চেত এবং কোনার নদীর উপর কোনার জলাধার গড়ে তোলে। ১৯৫৫ সালে এক মাত্র ব্যারাজটি তৈরি হয় দুর্গাপুরে। ব্যারাজটি লম্বায় ৬৯২ মিটার। গেটের সংখ্যা ৩৪। দামোদর-বরাকর অববাহিকায় প্রায় সাড়ে ১৯ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে এই ব্যারাজের ‘ক্যাচমেন্ট এরিয়া’ বা জলধারণের এলাকা। শুরুতে জলধারণ ক্ষমতা ছিল প্রায় সাড়ে ৬ মিলিয়ন কিউবিক মিটার। কিন্তু কেন্দ্রীয় জল কমিশনের হিসেবে বতর্মানে তা অর্ধেকে নেমে এসেছে। সেচ দফতর সূত্রে খবর, পলি সংস্কার না হওয়ায় এমনটা এসেছে। ফলে বেশি বৃষ্টি হলে বা উপরের জলাধারগুলি থেকে তুলনায় বেশি জল ছাড়লেই দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে সেই জল বের করে দিতে হয়। তা না হলে জলের চাপে ব্যারাজ ভেঙে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
ব্যারাজের জল পরিশোধন করেই দুর্গাপুর শহরে পানীয় জল হিসেবে সরবরাহ করা হয়। শিল্পাঞ্চলের শিল্প-কারখানাগুলিতেও দামোদরের জলই ভরসা। সম্প্রতি ১ নম্বর গেট বেঁকে গিয়ে ব্যারাজের জল বেরিয়ে গিয়ে দুর্গাপুরে পানীয় জলের সঙ্কটের ঘটনায় নড়েচড়ে বসে সেচ দফতর। বিশেষজ্ঞদের নিয়ে ব্যারাজ পরিদর্শনে এসে সেচমন্ত্রী জানিয়ে দেন, বিকল ১ নম্বর গেটের বদলে নতুন গেট লাগানো হবে। আপৎকালীন পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে আরও একটি নতুন গেট এনে রাখা হবে। কিন্তু ৩৪ নম্বর গেটটি নিয়ে কোনও প্রসঙ্গ না ওঠায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ব্যারাজের সঙ্গে যুক্ত সেচ দফতরের কর্মীদের একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, ‘‘৩৪ নম্বর গেটটিরও ভালই মেরামতির প্রয়োজন। সেটি দীর্ঘদিন ধরে ওঠানো-নামানো হয়নি। সামনে বালি জমে মজে গিয়েছে। হঠাৎ কোনও কারণে ওই গেটটি তোলার দরকার হলে সমস্যা হতে পারে।’’
ব্যারাজে গিয়ে দেখা গিয়েছে, ৩৪ নম্বর গেটটি বাঁকুড়ার দিকের প্রথম গেট। ব্যারাজের বাকি গেটগুলি দিয়ে সামান্য পরিমাণে জল জলাধার থেকে নীচে বয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এই গেটটি দিয়ে একটুও জল বেরোয় না। সামনে বালির স্তূপ। তার উপরে আগাছা জন্মেছে। দেখে মনে হচ্ছে, গেটটিকে বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। ব্যারাজের এক কর্মী বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন ধরেই এমন অবস্থায় পড়ে আছে গেটটি। হঠাৎ করে তুলতে গেলে বিপত্তি হতে পারে।’’
সেচ দফতরের এক আধিকারিক অবশ্য বলেন, ‘‘মন্ত্রী সম্পূর্ণ ব্যারাজেরই সংস্কারের পরিকল্পনা চূড়ান্ত করতে বলে গিয়েছেন। সব গেটই পরীক্ষা করে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy