মনোসেক্স তেলাপিয়া।নিজস্ব চিত্র
তাড়াতাড়ি বেড়ে ওঠে, লাভও মেলে বেশি। পড়ে থাকা পুকুরে তেলাপিয়ার একটি বিশেষ প্রজাতি (মনোসেক্স তেলাপিয়া) চাষ করে এমনই লাভের আশা করছে পূর্বস্থলী ১ ব্লক কৃষি দফতর। কর্তাদের দাবি, এলাকায় এই মাছ চাষ প্রথম।
কৃষি দফতরের দাবি, এটি মূলত থাইল্যান্ডের মাছ। মাস তিনেক আগে আত্মা প্রকল্পে জাহান্নগর পঞ্চায়েতের বেকপুকুর এলাকায় সুমিত দেবনাথের বিঘে দুয়েকের পুকুরে ওই মাছ চাষ শুরু করা হয়। প্রথমে ওষুধ দিয়ে রাক্ষুসে মাছ মেরে জলে হিউমিক অ্যাসিড (জলে উদ্ভিদ কণা বাড়ায়) প্রয়োগ করা হয়। তারপরে কয়েকটি চারাপোনা ছেড়ে দেখা হয়, পুকুরটি তৈরি হয়েছে কি না। এরপরেই মে মাসের গোড়ায় উত্তর চব্বিশ পরগনা থেকে এনে সাড়ে আট হাজার তেলাপিয়ার ডিম পোনা ছাড়া হয়। কর্তাদের দাবি, এই চাষে শুধু পুরুষ মাছই ছাড়া হয় পুকুরে। মাছের ওজনের তিন থেকে চার গুন খাবার দেওয়া হয়। কৃষি দফতর থেকে খরচ করা হয় ৫৪ হাজার টাকা। সুমিতবাবু খরচ করেন আরও ৪০ হাজার টাকা।
দু’মাসের মাথায় পুকুরে জাল ফেলতে দেখা যায় মাছের ওজন ছাড়িয়েছে ১০০ গ্রাম। আত্মা প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত এক আধিকারিক নিবিড় মজুমদার বলেন, ‘‘তিন মাসের পর থেকে মাছের ওজন আরও দ্রুত বাড়ে। মাস ছয়েকের মাথায় মাছের ওজন হবে অন্তত সাড়ে চারশো গ্রাম।’’ তিনি জানান, সারা বছরই এই ধরনের মাছের পাইকারি দর থাকে ১০০ থেকে ১২০ টাকা প্রতি কেজি। ফলে সুমিতবাবু এই প্রকল্প থেকে অন্তত আড়াই লক্ষ টাকার মাছ বিক্রি করতে পারবেন বলেও তাঁর দাবি। প্রকল্পের ব্লক টেকনোলজি ম্যানেজার সন্দীপ মণ্ডল বলেন, ‘‘বছরে দু’বার মনোসেক্স তেলাপিয়া অনায়াসে চাষ করা যায়। অনেকেই পুকুর খালি ফেলে রাখেন। তাঁরা এই চাষ করে মোটা লাভ ঘরে তুলতে পারেন।’’
পুকুরটির সঙ্গে পুকুর পাড়ের জমিও নানা কাজে ব্যবহার করেছেন সুমিতবাবু। প্রায় ২৫ কাঠা জমিতে তিনি টিসু কালচার লেবু, পাতিলেবু এবং কলা চাষ করেছেন। ইতিমধ্যে কলা গাছে ফলনও শুরু হয়ে গিয়েছে। সুমিতবাবু বলেন, ‘‘গতানুগতিক চাষ করে অনেক মার খেয়েছি। আশা করছি পুকুর এবং পাড় থেকে ভাল লাভ পাব।’’ ব্লক কৃষি আধিকারিক পরিতোষ মণ্ডল বলেন, ‘‘চিরাচরিত চাষ থেকে চাষিদের সরিয়ে আনতে মনোসেক্স তেলাপিয়া চাষের মতো বেশ কিছু উদ্ভাবনী ক্ষেত্র তুলে ধরা হচ্ছে। এতে সাফল্যও মিলছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy