খাদ্য দফতর চাষিদের কাছ থেকে সরাসরি ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা ছুঁয়ে ফেলেছে। কিন্তু দফতরের বিভিন্ন এজেন্সি সংস্থা লক্ষ্যমাত্রা থেকে অনেকটাই পিছিয়ে। সে কারণেই সোমবার বিকেলে বৈঠক করে খাদ্য দফতর ঠিক করেছে, ‘ব্যর্থ’ এজেন্সিগুলিকে আর ধান কেনার ভার দেওয়া হবে না। তারা নিজেরাই সেন্ট্রাল প্রকিওরমেন্ট সেন্টার (সিপিসি) ও ডিরেক্ট পারচেজ সেন্টারের (ডিপিসি) মাধ্যমে বাকি ধান কিনবে। পাশাপাশি গুদামে চাল পড়ে থাকলেও তা নিয়ে যাওয়ার জন্যে খাদ্য দফতর বা এফসিআই গা করছে না বলে অভিযোগ করেছিল জেলা চালকল সমিতি, তা নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।
চালকল মালিকদের অভিযোগ ছিল, খাদ্য দফতর কিষাণ মান্ডি থেকে ধান ভাঙানোর জন্য চালকলে পাঠিয়েছে। তেমনি বিভিন্ন এজেন্সি সংস্থার মাধ্যমেও ধান এসেছে চালকলে। বস্তার পর বস্তা ধান ভেঙে চাল তৈরি হয়ে পড়ে রয়েছে চালকলে। অথচ তা নিয়ে যাওয়ার কোনও তাড়া নেই খাদ্য দফতরের। চাল বের না করলে আর ধান ঢোকানো যাবে না বলেও দাবি করেছেন তাঁরা। এ দিনও জেলা চালকল মালিক সমিতির কার্যকরী সভাপতি আব্দুল মালেক বলেন, ‘‘আপনারা চাল নিন, আমাদের ধান দিন। তা না হলে আমাদের পক্ষে সরকারের ধান নেওয়া সম্ভব নয়।’’
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, চালকলগুলি ১২ হাজার টন চাল নেওয়ার জন্যে এফসিআইকে চিঠি দিয়েছিল। কিন্তু গুদাম খালি নেই বলে জানিয়েছিল এফসিআই। আবার রাজ্য সরকারের তৈরি গুদাম গুলিতে ৯৪ হাজার টন চাল রাখার ব্যবস্থা থাকলেও খাদ্য দফতর তা নিচ্ছে না বলে দাবি চালকল মালিকদের। আব্দুল মালেকের দাবি, ১ লক্ষ ৮০ হাজার টন চাল উৎপন্ন হয়েছে। আর মাত্র ৩৯ হাজার টন ধান নিয়েছে রাজ্য সরকার। এফসিআই এক ছটাকও ধান নেয়নি। অতিরিক্ত জেলাশাসক অরিন্দম নিয়োগী জানান, আগামী বুধবার থেকে এফসিআই চাল নিতে শুরু করবে।
খাদ্য দফতর সূত্রে জানা যায়, ডিপিসি ও সিপিসির মাধ্যমে খাদ্য দফতরের ১ লক্ষ ৯০ হাজার টন ধান কেনার কথা ছিল। তার মধ্যে ১ লক্ষ ৮৭ হাজার টন ধান কেনা হয়ে গিয়েছে। বেনফেডের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২০ হাজার টন। তারাও ঘরে ঢুকিয়ে ফেলেছে ১৪ হাজার টন ধান। কিন্তু এই লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ডাঁহা ফেল করে গিয়েছে অত্যাবশকীয় পণ্য নিগম, কনফেড, এনসিসিএফ ও এনএএসিও। দফতরের দাবি, অত্যাবশকীয় পণ্য নিগমের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লক্ষ ৪০ হাজার মেট্রিক টন, সেখানে তারা কিনেছে ৫৩ হাজার মেট্রিক টন। কনফেডের কেনার কথা ছিল ৩০ হাজার মেট্রিক টন, তারা কিনেছে ৩ হাজার মেট্রিক টন। জেলার খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ মেহেবুব মণ্ডলের আশ্বাস বলেন, ‘‘এ দিনের বৈঠকে ঠিক হয়েছে, ওই দুই এজেন্সির বাকি ধান সিপিসি ও ডিপিসির মাধ্যমে কেনা হবে। আর এনসিসিএফ ও এনএএসিও-র ২০ হাজার মেট্রিক টন ধান কেনার বরাত দেওয়া হবে বেনফেডকে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy