নানা কারণে বছরের পর বছর বন্ধ চালকলগুলি খুলতে উদ্যোগী হচ্ছে রাজ্য, শনিবার বর্ধমানে এসে জানালেন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তাঁর কথায়, “মুখ্যমন্ত্রী দিল্লি থেকে ফেরার পরে এ নিয়ে আর এক দফা কথা হবে। তার পরে অর্থমন্ত্রী, ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করব। চালকলগুলি কী ভাবে খোলা যায়, সে নিয়ে আমাদের দফতর উদ্যোগী হবে।”
খাদ্য দফতর সূত্রে জানা যায়, রাজ্যে এখন ১২৪৬টি চালকল রয়েছে। তার মধ্যে প্রায় অর্ধেক বর্ধমান জেলায়। এই চালকলগুলির মধ্যে ৩১৮টি বন্ধ। ২০০৪ থেকে একে-একে সেগুলি বন্ধ হয়ে পড়েছে। দফতরের এক কর্তার কথায়, “প্রধানত অংশীদারিত্বের সমস্যা ও ব্যাঙ্কের ঋণ শোধ করতে না পারার জন্য এই অবস্থা। এ ছাড়া কয়েক জায়গায় শ্রমিক-সমস্যার কারণে চালকল বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছেন মালিকেরা।” বিধানসভা ভোটের পরে রাজ্যের চালকল মালিক সংগঠন ‘বেঙ্গল রাইস মিলার্স অ্যাসোসিয়েশন’ মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে। তখনই তিনি জানতে পারেন, বন্ধ চালকলগুলির কথা। তার পরেই মন্ত্রী আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলে সেগুলি খুলতে পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত নেন বলে খাদ্য দফতর সূত্রে খবর।
এ দিন বর্ধমান জেলা পরিষদের হলে খাদ্য দফতরের আধিকারিক, জেলা পরিষদের কর্তা ও জেলার মন্ত্রী স্বপন দেবনাথকে নিয়ে বৈঠক করেন খাদ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, “আমরা প্রতিদিন কয়েকজন মালিককে ডেকে কেন চালকল বন্ধ রাখতে হয়েছে, তা জেনে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করব। আমার ধারণা, ৭৫-৮০ শতাংশ চালকলের সমস্যা মিটিয়ে ফেলা যাবে।” হঠাৎ এই উদ্যোগ কেন? মন্ত্রীর কথায়, “৯ কোটি ২০ লক্ষ মানুষকে আমরা রেশনের মাধ্যমে চাল দিচ্ছি। প্রতি মাসে আমাদের বিপুল চাল সংগ্রহ করতে হয়। ওই সব চালকলগুলি খুলে গেলে আমাদের সুবিধা। এ ছাড়া একটি চালকলকে কেন্দ্র করে অনেকের জীবিকা জড়িয়ে রয়েছে। চালকল ফের খুললে তাঁদেরও সুবিধা।”
বেঙ্গল রাইস মিলের কর্তা আব্দুল মালেক বলেন, “বন্ধ চালকলের সমস্যা মিটিয়ে সেগুলি খোলার ব্যবস্থা হলে বহু মানুষ উপকৃত হবেন।” এ দিন বৈঠকে চালকল মালিকেরা খাদ্যমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ করেন, কৃষি-বিপণন দফতর তাঁদের কাছে ১৯৭২ সালের নিয়মে মোটা অঙ্কের কর আদায় করার নোটিস জারি করেছে। তা দিতে হলে খুব সমস্যায় পড়তে হবে। আব্দুল মালেক বলেন, “খাতায়-কলমে নিয়ম থাকলেও কোনও দিন কর আদায় হয়নি। আমরা প্রশাসনের সব স্তরে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে, এই কর আদায় হলে চালকল বন্ধ হয়ে যাবে।” খাদ্যমন্ত্রী বিষয়টি দেখার আশ্বাস দেন বলে খবর।
গলসিতে খাদ্য দফতরের একটি গুদামে ইভিএম রাখা নিয়ে এ দিন ক্ষোভ প্রকাশ করেন খাদ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “আমরা চাল রাখতে পারছি না, সেখানে ৫ হাজার মেট্রিক টনের গুদাম দখল করে ইভিএম যন্ত্র রাখা হয়েছে! মন্ত্রী স্বপন দেবনাথকে জেলাশাসকের সঙ্গে কথা বলে গুদাম ফেরানোর ব্যবস্থা করতে বলেছি।” প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, গলসিতে খাদ্য দফতরের তিনটি গুদামে জেলার ইভিএম রেখেছিল নির্বাচন কমিশন। ইতিমধ্যে দু’টি খালি করা হয়েছে। জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন বলেন, “মুখ্য নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কথা হয়েছে। দ্রুত ওই গুদামও খালি করা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy