Advertisement
০২ মে ২০২৪
TMC Internal Conflict

শ্রমিক নিয়োগ ঘিরে হাতাহাতি, ‘কোন্দল’ তৃণমূলে

বিক্ষোভকারীদের প্রায় সকলেই আইএনটিটিইউসি’র ব্লক সভাপতি ইন্দ্রজিৎ কোনারের অনুগামী বলে এলাকায় পরিচিত। তাঁদের অভিযোগ, জমিহারাদের কাজে না নিয়ে বাইরের লোকজনকে নিয়োগ করছেন ঠিকাদার।

পানাগড়ে গোলমাল নিয়ন্ত্রণে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র

পানাগড়ে গোলমাল নিয়ন্ত্রণে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাঁকসা শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৯:২৩
Share: Save:

শ্রমিক নিয়োগকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের দুই ‘গোষ্ঠীর’ হাতাহাতিতে উত্তেজনা ছড়াল পানাগড় শিল্পতালুকের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার গ্যাস বটলিং প্ল্যান্ট সংলগ্ন এলাকায়। তবে পুলিশের হস্তক্ষেপে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার সূত্রপাত হয় সকাল ৯টা নাগাদ। কারখানায় কাজের বরাত পাওয়া এক ঠিকাদার তাঁর কর্মীদের নিয়ে কাজ করতে আসেন। তাঁদের বাধা দেন কোটা গ্রাম-সহ শিল্পতালুক সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ। তাঁদের মধ্যে অনেক মহিলাও ছিলেন। শিল্পতালুকের জন্য যাঁরা জমি দিয়েছেন, তাঁদের কাজে নেওয়ার দাবি তোলেন তাঁরা।

বিক্ষোভকারীদের প্রায় সকলেই আইএনটিটিইউসি’র ব্লক সভাপতি ইন্দ্রজিৎ কোনারের অনুগামী বলে এলাকায় পরিচিত। তাঁদের অভিযোগ, জমিহারাদের কাজে না নিয়ে বাইরের লোকজনকে নিয়োগ করছেন ঠিকাদার। তাঁকে এই কাজে মদত দিচ্ছেন তৃণমূল ব্লক সভাপতি শেখ আব্দুল লালনের অনুগামীরা। ওই কারখানায় যাঁরা কাজ করেন, তাঁদের বেশির ভাগও ইন্দ্রজিতের ‘অনুগামী’। তাঁদের অভিযোগ, কারখানায় দলেরই সমান্তরাল একটি শ্রমিক সংগঠন চলছে। কিছু না জানিয়ে ওই সংগঠনের মাধ্যমে কারখানায় নিয়োগ হচ্ছে। বিক্ষোভকারীদের দাবি, ‘‘শিল্পতালুকের জন্য বহু মানুষ জমি দিয়েছে। অথচ তাঁরা কাজ পাচ্ছেন না। বহিরাগতদের কাজে নেওয়া হচ্ছে। তা মেনে নেওয়া যায় না।’’

কারখানার ফটকের বাইরে বিক্ষোভ শুরু হতেই রাস্তার অন্য প্রান্তে জড়ো হন ব্লক সভাপতির অনুগামীরাও। চলে স্লোগান-পাল্টা স্লোগান। অশান্তির আশঙ্কায় ঘটনাস্থলে মোতায়েন করা হয় পুলিশ বাহিনী। পুলিশের সামনেই চলতে থাকে বিক্ষোভ। আচমকা দু’পক্ষের হাতাহাতি শুরু হলে উত্তেজনা ছড়ায়। পুলিশ দ্রুত হস্তক্ষেপ করায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। এই ঘটনা সম্পর্কে কারখানা কর্তৃপক্ষ বা ঠিকাদারের প্রতিক্রিয়া মেলেনি।

তৃণমূল ব্লক সভাপতির অনুগামী বলে পরিচিত জগন্নাথ বাউরি বক্তব্য, ‘‘নতুন এক ঠিকাদার কাজের বরাত পেয়েছেন। এ দিন কাজ শুরুর কথা ছিল। বহিরাগতদের নিয়োগের কোনও বিষয় এখানে নেই। যাঁরা কাজ করতে এসেছিলেন, তাঁরা সকলেই এই এলাকারই বাসিন্দা। ইন্দ্রজিতের ইন্ধনে এই ঘটনা ঘটেছে কি না বুঝতে পারছি না।’’ ইন্দ্রজিতের দাবি, ‘‘এ দিনের ঘটনায় শ্রমিক সংগঠনের কোনও যোগ নেই।’’ একাধিক বার ফোন করে যোগাযোগ করা যায়নি তৃণমূল ব্লক সভাপতির সঙ্গে।

এই ঘটনা নিয়ে তৃণমূলকে বিঁধেছে বিরোধীরা। সিপিএমের শ্রমিক সংগঠন সিটুর পূর্ব বর্ধমান জেলা কমিটির সদস্য কোহিনুর গঙ্গোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘সম্প্রতি তৃণমূলের ব্লক সভাপতি বদল হয়েছে। কারখানাগুলির ক্ষমতা দখল করতে উঠেপড়ে লেগেছে এক পক্ষ। এ ভাবে এলাকা অশান্ত হলে শিল্পপতিরা শিল্পতালুক থেকে মুখ ঘুরিয়ে নেবেন।’’ বিজেপির বর্ধমান (সদর) সহ-সভাপতি রমন শর্মার কটাক্ষ, ‘‘এই শিল্পতালুকে যত কারখানা আছে, তার থেকে বেশি রয়েছে তৃণমূলের গোষ্ঠী। এ ভাবে চলতে থাকলে সব কারখানা বন্ধ হয়ে শিল্পতালুক মরুভূমিতে পরিণত হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kanksa
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE