Advertisement
১৯ মে ২০২৪

পুরসভায় অনিয়ম, ব্যবস্থা দুই ইঞ্জিনিয়ারের বিরুদ্ধে

কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে দু’জন ইঞ্জিনিয়ারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আসানসোল পুরসভা কর্তৃপক্ষ। আপাতত এক জনকে অনির্দিষ্ট কাল ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। অন্য জনকে কারণ দর্শানোর নোটিস ধরানো হয়েছে। যদিও ওই দুই ইঞ্জিনিয়ারের দাবি, এই অভিযোগ ঠিক নয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০১৬ ০২:১৬
Share: Save:

কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে দু’জন ইঞ্জিনিয়ারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আসানসোল পুরসভা কর্তৃপক্ষ। আপাতত এক জনকে অনির্দিষ্ট কাল ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। অন্য জনকে কারণ দর্শানোর নোটিস ধরানো হয়েছে। যদিও ওই দুই ইঞ্জিনিয়ারের দাবি, এই অভিযোগ ঠিক নয়।

অভিযুক্ত এই দুই ইঞ্জিনিয়ারের বিরুদ্ধে পদক্ষেপের কথা সম্প্রতি পুরসভার বোর্ডের বৈঠকে জানান মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি। পুরসভা সূত্রের খবর, সেখানে হাজির বেশির ভাগ কাউন্সিলরই হাত তুলে মেয়রের এই সিদ্ধান্ত সমর্থন করেন। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, সাবেক আসানসোল পুর এলাকার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের মহিশীলা ও অরবিন্দপল্লিতে জওহরলাল নেহরু ন্যাশানাল আরবান রিনিউয়াল মিশনের অন্তর্গত তৃতীয় পর্যায়ের বস্তি উন্নয়নের কাজ হাতে নেওয়া হয়েছিল। সে জন্য এলাকায় পানীয় জল সরবরাহ করতে পাইপলাইন বসানো হচ্ছিল। পাইপলাইন বসানোর কাজ দেখভালের দায়িত্বে ছিলেন পুরসভার ইঞ্জিনিয়ার অভিজিৎ অধিকারী। ইতিমধ্যে রানিগঞ্জ, কুলটি ও জামুড়িয়াকে আসানসোলের সঙ্গে জুড়ে নতুন পুরসভায় ভোটের পরে নতুন পুরবোর্ড ক্ষমতায় আসে।

পুরসভা সূত্রে জানা যায়, এর পরেই পুরনো কাজের খতিয়ান দেখতে গিয়ে নজরে আসে, মহিশীলা ও অরবিন্দপল্লি এলাকায় বেশ কিছুটা অঞ্চলে জল সরবরাহের পাইপ বিছানোই হয়নি। অথচ, গত ২০১৪ সালে এই কাজের খরচ বাবদ ঠিকাদার সংস্থাকে অভিজিৎবাবুর সম্মতিক্রমে এক লক্ষেরও বেশি টাকা দেওয়া হয়েছে। এর পরেই নড়েচড়ে বসেন পুর কর্তৃপক্ষ। কেন তাঁর বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে না জানতে চেয়ে অভিজিৎবাবুকে একটি কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়া হয়েছে। সাত দিনের মধ্যে জবাবও তলব করা হয়েছে।

আসানসোলের মুর্গাসোল এলাকায় একটি বড়সড় বহুতল গড়ে উঠেছে। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, সেটি একটি অবৈধ নির্মাণ বলে উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণ তাঁদের হাতে এসেছে। পুর কর্তৃপক্ষের তরফে দাবি করা হয়েছে, এই নির্মাণের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছেন পুরসভার ইঞ্জিনিয়ার সুকুমার মুখোপাধ্যায়। কী ভাবে এই অবৈধ নির্মাণটি হল, তার তদন্ত শুরু হয়েছে। তা শেষ না হওয়া পর্যন্ত সুকুমারবাবুকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে বলে পুর কর্তৃপক্ষ জানান।

মেয়র জিতেন্দ্রবাবু বলেন, ‘‘পুরসভার তরফে এই দু’টি ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। দুই ইঞ্জিনিয়ারের বিরুদ্ধে প্রাথমিক পদক্ষেপ করা হয়েছে।’’ যদিও অভিযুক্ত ইঞ্জিনিয়ার অভিজিৎবাবু দাবি করেন, ‘‘আমার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ঠিক নয়। পাইপ বিছানো হয়েছে।’’ আর এক অভিযুক্ত সুকুমারবাবুও বলেন, ‘‘পুর কর্তৃপক্ষের এই রকম কোনও নির্দেশ হাতে পাইনি।’’

এখানেই শেষ নয়। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, সাবেক কুলটি পুরসভাতেও নানা বেনিয়ম হয়েছে বলে অভিযোগ মিলেছে। বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডে উন্নয়নমূলক কাজ না করেও ঠিকাদারকে খরচের টাকা পাইয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। পুরসভার এক আধিকারিক বলেন, ‘‘ওই সব কাজ কোন ইঞ্জিনিয়ারের অধীনে বা ঠিকাদারের নামে ছিল, তা চিহ্নিত করা হচ্ছে।’’ ফলে, আরও কয়েক জন ইঞ্জিনিয়ারকে শাস্তির মুখে পড়তে হতে পারে বলে পুরসভা সূত্রের খবর।

পুর কর্তৃপক্ষের এই পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানিয়েছে বিরোধীরাও। পুরসভার বিরোধী নেতা সিপিএমের ওয়াসিমুল হকের বক্তব্য, ‘‘রাজনৈতিক রং না দেখে স্বচ্ছতা আনলে আমরাও সহযোগিতা করব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

municipality engineers
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE