কালনার পোলট্রিতে চলছে পরিচর্যা। নিজস্ব চিত্র।
প্রায় এক যুগ আগে জেলায় ছড়িয়ে পড়েছিল ‘বার্ড ফ্লু’ রোগ। মঙ্গলকোটের দুরমুটে প্রথম ওই রোগ ধরা পড়ে। তার পরে, তা জেলার নানা এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছিল। এখন দেশের পাঁচ রাজ্যে বহু লক্ষ পাখির মৃত্যুর পরে ‘বার্ড ফ্লু’ সংক্রান্ত সতর্কতা জারি হওয়ায়, নতুন করে দুশ্চিন্তা তৈরি হয়েছে জেলার মুরগি-পালকদের মধ্যে। প্রাণিসম্পদ দফতরের যদিও দাবি, এখনই আতঙ্কের কিছু নেই। তবে সতর্ক থাকতে হবে। রাজ্য থেকে প্রতিটি জেলায় খামারগুলিতে নিবিড় সতর্কতা ও মুরগির অ্যান্টিবডি পরীক্ষার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রাজ্যের প্রাণিসম্পদ দফতরের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘সতর্কতা ও নজরদারির জন্য প্রতিটি জেলাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জৈব নিরাপত্তায় আরও বেশি করে জোর দেওয়া হচ্ছে।’’ বৃহস্পতিবারই দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে কলকাতায় বৈঠক করেছেন বলে জানান মন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের রাজ্যে এখনও পর্যন্ত বার্ড ফ্লু-র প্রবেশ ঘটেনি।’’ পোলট্রি ফেডারেশনের পূর্ব বর্ধমান জেলা সভাপতি স্বপন সরকার বলেন, ‘‘যে সব রাজ্যে বার্ড ফ্লু দেখা দিয়েছে, সে সব রাজ্যে মুরগিতে ওই ভাইরাস এখনও ধরেনি।’’
তবে সিঁদুরে মেঘে ভয় পাচ্ছেন মুরগি খামার মালিকদের একাংশ। মঙ্গলকোটের বাসিন্দা শেখ সইফুলের কথায়, ‘‘২০০৮ সালে ওই রোগ হয়েছিল। তখন বহু মুরগি মেরে গর্তে পুঁতে রাখা হচ্ছিল। আবার ওই রোগ হচ্ছে শুনছি। আমার খামারে প্রচুর মুরগি রয়েছে। পরিচর্যাও নিয়মিত করা হয়। তার পরেও কী হবে বুঝতে পারছি না!’’ প্রায় একই কথা বলেন ভাতার, কেতুগ্রাম, মেমারির মুরগি খামারের মালিকদের অনেকে। তাঁদের কথায়, ‘‘সে বার শিক্ষা পেয়েছিলাম। তার পর থেকে প্রাণিসম্পদ দফতরের কথা মতো পরিচর্যা করা হয়। এর পরেও মুরগি ওই রোগে আক্রান্ত হলে, আমাদের অবস্থা খারাপ হয়ে যাবে।’’ ভুক্তভোগী খামার-মালিকদের একাংশের দাবি, ২০০৮ সালেও পরিযায়ী পাখির মধ্যে ওই ভাইরাস দেখা দিয়েছিল। গুরুত্ব না দেওয়ার ফল ভুগতে হয়েছিল সে বার। তাই সতর্ক থাকতে হবে।
জেলা প্রাণিসম্পদ দফতর সূত্রে জানা যায়, পূর্ব বর্ধমানে প্রায় ৮৫ হাজার মুরগি খামার রয়েছে। সেখানে প্রায় এক কোটি ২২ লক্ষ মুরগি রয়েছে। তাদের দেখভালের জন্য প্রাণিবন্ধু ও প্রাণিমিত্রা মিলিয়ে ১,৫৪২ জন রয়েছেন। এ ছাড়া, প্রতিটি ব্লকে চিকিৎসক-কর্মীরা রয়েছেন। জেলার উপ-অধিকর্তা প্রবীর পাঠক বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত স্তর পর্যন্ত আমাদের নজর রয়েছে। প্রতিটি খামার মালিককে সতর্ক করা হয়েছে। অ্যান্টিবডি পরীক্ষার কাজও নিয়মিত করা হয়। এখন সেই পরীক্ষা আরও বাড়ানো হচ্ছে।’’ তবে পোলট্রি ফেডারেশন মুরগি খামারের মালিকদের অহেতুক আতঙ্কিত হতে নিষেধ করছে। ওই সংস্থার জেলা সম্পাদক নিমাইচন্দ্র কুণ্ডুর দাবি, ‘‘সরকারের সঙ্গে প্রতিটি সংস্থাও মুরগি পালনে জোর দিচ্ছে। আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy