Advertisement
০১ মে ২০২৪
Jute Price Decreased

পাটের দরে পতন অব্যাহত, চিন্তায় চাষিরা

চাষিদের দাবি, এ বার বাজারে পাটের দাম গতবারের তুলনায় কুইন্টাল প্রতি প্রায় এক হাজার টাকা কম। গতবছর এক কুইন্টাল পাটের দাম ছিল ৫৭০০-৫৮০০ টাকা।

নাদনঘাট সেতুতে পাট শুকোতে দেওয়ার কাজ করছেন চাষি।

নাদনঘাট সেতুতে পাট শুকোতে দেওয়ার কাজ করছেন চাষি। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালনা শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৮:৫৭
Share: Save:

বাজারে পাটের দাম কমতে শুরু করেছে। পুজোর আগে চিন্তায় পড়েছেন জেলার বহু চাষি। তাঁদের অনেকেরই দাবি, প্রতি বিঘায় লোকসান হচ্ছে ৩-৬ হাজার টাকা।

পূর্ব বর্ধমানে পাটচাষ হয় কম-বেশি ১০ হাজার হেক্টর জমিতে। এরক মধ্যে কালনা মহকুমায় সাড়ে আট হাজার হেক্টর জমিতে পাটচাষ হয়। পাটচাষিরা জানাচ্ছেন, এ বার চাষের শুরু থেকেই নানা সমস্যায় জেরবার হতে হয়েছে তাঁদের। প্রথমে, বৃষ্টির অভাবে গাছের বৃদ্ধি কমে গিয়েছিল। কিছু জায়গায় শিলাবৃষ্টিতে গাছের মাথার অংশ ভেঙে যায়। পাটগাছ কাটার পরে তা পচানোর জল পেতেও সমস্যায় পড়তে হয়েছে চাষিদের। পুকুর ও অন্য ছোট জলাশয়ে স্বল্প জলে গাদাগাদি করে পাটের গাঁট ডুবিয়ে রাখতে হয়েছে অনেককে। স্বল্প জলে পচানোর কারণে পাটের গুণগত মান এ বার ভাল হয়নি।

পূর্বস্থলী ২ ব্লকের পাটচাষি ইউসুফ শেখের দাবি, অনেককে জল কিনে পাট পচাতে হয়েছে। মাঠ থেকে জলাশয় পর্যন্ত পাটগাছ আনা, পাট পচানো এবং তার পরে পাট ছাড়ানোর খরচও এ বার বেড়েছে। সব মিলিয়ে পাটচাশের খরচ গতবারের তুলনায় এ বার বেশ
কিছুটা বেশি।

চাষিদের দাবি, এ বার বাজারে পাটের দাম গতবারের তুলনায় কুইন্টাল প্রতি প্রায় এক হাজার টাকা কম। গতবছর এক কুইন্টাল পাটের দাম ছিল ৫৭০০-৫৮০০ টাকা। এ বার শুরুতে কুইন্টাল প্রতি পাট বিক্রি হয়েছিল ৪৮০০ টাকা দরে। এখন দাম কমে হয়েছে ৩৭০০-৪০০০ টাকা। ইউসুফের দাবি, বিঘা প্রতি তাঁর লোকসান হচ্ছে তিন থেকে ছ’হাজার টাকা। পাট ব্যবসায়ীদের দাবি, এ বার বেশির ভাগ পাটের গাঁটের গুণমান ভাল নয়। রং কালচে হওয়ায় দর কিছুটা কমেছে।

সামনেই দুর্গাপুজো। অনেকেই পাট বিক্রির টাকায় পুজোর বাজার করেন। তাঁদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। কালনার পাটচাষি গোপাল মোদক বলেন, ‘‘প্রত্যেক বার পাট বিক্রির টাকায় পরিবারের সদস্যদের জন্য নতুন জামাকাপড় কিনি। এ বার পাট বিক্রি করে লোকসান হওয়ায় চিন্তাই পড়েছি।’’ পাটের দাম কমায় চিন্তিত ব্যবসায়ীরাও। কালনার কাপড় ব্যবসায়ী বরুণ ঘোষের বক্তব্য, ‘‘চাষিদের কাছে নগদ টাকা থাকলে পুজোয় বিক্রি নিয়ে দুশ্চিন্তা থাকে না। এ বার পাট বিক্রি করে তাঁদের লাভ হয়নি। পুজোর বাজার কেমন হবে তা ঈশ্বরই জানেন।’’

জেলার এক কৃষি আধিকারিক পার্থ ঘোষ বলেন, ‘‘পাটের ফলন কেমন হয়েছে তা নিয়ে খোঁজখবর করা হচ্ছে। একটি বিশেষ ধরনের ব্যাকটেরিয়া রয়েছে যা দিয়ে পাট পচালে রং ভাল হয়। জলও কম লাগে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Jute
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE