Advertisement
১৮ মে ২০২৪
Coal India

খনি-ধর্মঘটের ‘সক্রিয়’ বিরোধিতায় কেকেএসসি

বিক্ষোভে যোগ দেন সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায়।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল ও দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২০ ০৩:০২
Share: Save:

পূর্ব ঘোষণা মতোই কয়লা শিল্পে কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠনগুলির ডাকা ধর্মঘটের প্রথম দিন, বৃহস্পতিবার ‘সক্রিয়’ বিরোধিতায় দেখা গেল তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি প্রভাবিত কেকেএসসি-কে। পাশাপাশি, ‘কমার্শিয়াল মাইনিং’-এর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ডাকা ধর্মঘট ‘সফল’ কি না, তা নিয়ে মতান্তর রয়েছে ইসিএল, কেকেএসসি এবং কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠনগুলির মধ্যে।

এ দিন, ফরিদপুর (লাউদোহা) থানার ইসিএলের ঝাঁঝরা প্রজেক্টে ধর্মঘটের সমর্থনকারী সিটু, বিএমএস, এইচএমএস, আইএনটিইউসি, এআইটিইউসি-র মতো কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগটনগুলির সঙ্গে ধর্মঘটের বিরোধিতা করা কেকেএসসি নেতা-কর্মীদের বচসা ও হাতাহাতি হয় বলে স্থানীয় সূত্রের দাবি। পুলিশ কয়েকজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় বলে অভিযোগ কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠনগুলির।

এর পরেই কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠনগুলি থানার সামনে বিক্ষোভ শুরু করে। বিক্ষোভে যোগ দেন সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌরাঙ্গ চট্টোপাধ্যায়। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে সরব হন তিনি। বিএমএস নেতা তাপস ঘোষ বলেন, ‘‘কেকেএসসি-র লোকজন আমাদের উপরে চড়াও হল। অথচ, পুলিশ আমাদেরই ধরে আনল।’’ কেকেএসসি নেতা পলাশ পাণ্ডের অবশ্য দাবি, ‘‘আমরা কোনও গোলমালে জড়াইনি। যাঁরা কাজ করতে এসেছিলেন তাঁদের সাহায্য করেছি।’’ পুলিশ জানায়, শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হয়। যাঁদের আটক করা হয়েছিল, পরে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

এ দিন সকাল থেকেই জেলার বিভিন্ন খনিতে পাঁচটি কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠনের তৈরি ‘জয়েন্ট অ্যাকশান কমিটি’ (জ্যাক) ধর্মঘটের সমর্থনে ‘পিকেটিং’ করে। খনিকে বেসরকারিকরণের বিরোধিতা করলেও এ দিনের ধর্মঘটের বিরোধিতায় পাল্টা ‘পিকেটিং’ করে কেকেএসসি-ও। বিষয়টি নিয়ে কেকেএসসি-র সাধারণ সম্পাদক হরেরাম সিংহ বলেন, “কিছু এলাকায় জোর করে শ্রমিকদের কাজে নামতে বাধা দেয় অন্য শ্রমিক সংগঠনগুলি। আমরা তাতে বাধা দিয়েছি। কোলিয়ারির উত্তোলন স্বাভাবিক।”

যদিও ধর্মঘট সফল দাবি করে আইএনটিইউসি নেতা চণ্ডী বন্দ্যোপাধ্যায়, সিটু নেতা বংশগোপাল চৌধুরীরা কেকেএসসি-র এমন ‘সক্রিয়’ ধর্মঘট বিরোধিতার তীব্র সমালোচনা করেছেন। পাশাপাশি, বিএমএস-এর ইসিএল শাখার সম্পাদক বিনোদ সিংহ বলেন, “খুব বেশি হলে স্বাভাবিকের তুলনায় ২০ শতাংশ উত্তোলন হয়েছে এ দিন।”

ইসিএল-এর সিএমডি প্রেমসাগর মিশ্র অবশ্য দাবি করেন, “গত কয়েকদিন আমরা কাজে যোগ দেওয়ার আর্জি জানিয়েছিলাম। শ্রমিকেরা সেই আবেদনে খুব ভাল সাড়া দিয়েছেন। যাঁরা কোনও কারণে বৃহস্পতিবার কাজে যোগ দিতে পারেননি, তাঁরাও আগামী দিনে কাজে যোগ দিন।” তবে, ইসিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, ঝাড়খণ্ডের রাজমহল, এসপি মাইনস ও মুগমা এরিয়ার সাতটি খনিতে ধর্মঘটের প্রভাব পড়েছে। তবে পশ্চিমবঙ্গের খনিগুলিতে তেমন কোনও প্রভাব পড়েনি বলেই দাবি ইসিএল কর্তৃপক্ষের। ইসিএল-এর সিএমডি-র কারিগরি সচিব নীলাদ্রি রায় বলেন, “বৃহস্পতিবার প্রথম দু’টি ‘পালি’ (শিফট)-তে শ্রমিক উপস্থিতি প্রায় ৬১ শতাংশ। তবে কতটা উত্তোলন হয়েছে বা লাভ-ক্ষতি এখনই বলা সম্ভব নয়।”

যদিও ইসিএল-এরই একটি সূত্রের মতে, সংস্থার দৈনিক গড় কয়লা উত্তোলন প্রায় ১.১০ লক্ষ টন। ৬১ শতাংশ হাজিরা থাকলেও উত্তোলনে প্রভাব পড়তেই পারে।।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coal India Strike Mining
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE