বন্ধ সীতাহাটির স্বাস্থ্যকেন্দ্র। —নিজস্ব চিত্র।
ডাক্তার না থাকায় কোথাও প্রাথমিক চিকিৎসা করছেন নার্স ও ফার্মাসিস্টরা, কোথাও নিরাপত্তার অভাবে চুরি যাচ্ছে ওষুধপত্র — এমনই হাল কেতুগ্রামের তিনটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৬৪ সালে ছ’বিঘে জায়াগার উপরে তৈরি হয় সীতাহাটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি। এর উপরে নির্ভর করেন সীতাহাটি, নৈহাটি, কেউগুড়ি, শিলুড়ি, দত্তবাটি-সহ বিভিন্ন গ্রামের মানুষ। নদীর ওপারে নদিয়ার গোবরা, ফুলবাগান, ভাগ্যবন্তপুর প্রভৃতি এলাকা থেকেও অনেকে আসেন। কিন্তু বেশির ভাগ দিন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দরজাই খোলা থাকে না বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ। আরও অভিযোগ, দীর্ঘ তিন দশক ধরে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ডাক্তারের দেখা মেলে না। তা হলে আসেন কেন? স্থানীয় বাসিন্দা নুটু দাস, দীপু দাস, চায়না বন্দোপাধ্যায়েরা জানান, ‘‘স্বাস্থ্যকেন্দ্রে দু’জন নার্স আর এক জন করে ফার্মাসিস্ট, চতুর্থ শ্রেণির কর্মী রয়েছেন। তাঁরাই প্রাথমিক চিকিৎসা করেন।’’ তবে অবস্থা সামান্য জটিল হলেই কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে ছুটতে হয়়। শুধু তাই নয়, বন্ধ্যাকরণের পরিষেবাও মেলে না। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মূল ভবনটিও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বেহাল বলে দেখা গেল।
একই হাল কেতুগ্রাম ২ ব্লকের শিবলুন স্বাস্থ্যকেন্দ্রও। স্থানীয় বর্ণালী হাটুই, সন্দীপ চট্টোপাধ্যায়দের অভিযোগ, বছর চারেক ধরে নিয়মিত দেখা মেলে না ডাক্তারের। কোনও রকমে কাজ চালান দু’জন করে নার্স ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মী। শুধু তাই নয়, নিরাপত্তার অভাবে স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে মাঝেসাঝেই ওষুধও চুরি হয়ে যাচ্ছে বলেও তাঁদের দাবি। এই পরিস্থিতিতে এলাকার কেউ অসুস্থ হলে ভরসা একমাত্র ১০ কিলোমিটার দূরের কাটোয়া হাসপাতাল। কিন্তু রাতবিরেতে ট্রেন না থাকায় অবস্থা আরও কঠিন হয়ে যায় বলে জানান অম্বলগ্রাম, তরালসেনপাড়ার গ্রামের বাসিন্দারা।
কেতুগ্রাম ১ ব্লকের পাণ্ডগ্রাম স্বাস্থকেন্দ্রটিতে নার্স, ফার্মাসিস্ট রয়েছেন। চিকিৎসা পরিষেবা দেন আশাকর্মীরাও। কিন্তু দেখা নেই ডাক্তারের। স্থানীয় বাসিন্দা সুমন সাহা, প্রভাত চট্টোপাধ্যায়েরা জানান, আশেপাশের ১৪টি গ্রামের বাসিন্দারা এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রেির উপরে নির্ভর করেন।
বেহাল স্বাস্থ্যপরিষেবার কথা স্বীকার করে নিয়েই কেতুগ্রাম ২ ব্লকের ব্লক স্বাস্থ্য অধিকর্তা তাপস বাগ বলেন, ‘‘ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসক কম। তাই অনেক সময় প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে ডাক্তার ডাকতে হয়। তাই ডাক্তার মেলে না। অনেক সময়ে আবার ডাক্তারেরা ওই সব এলাকায় যেতেও চান না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy