—প্রতীকী ছবি।
এলাকার উন্নয়নে বারবার আবেদন জানিয়ে প্রতিশ্রুতি ছাড়া কিছু মেলেনি। এখন আবার জমি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্যে জীবন ওষ্ঠাগত। এই জাঁতাকলে চূড়ান্ত অশান্তিতে দিন কাটাচ্ছেন তাঁরা, অভিযোগ কুলটির লছিপুর লাগোয়া মহত্মা গাঁধী কুষ্ঠপল্লি এলাকার বাসিন্দাদের। প্রশাসনের তরফে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) তথা আসানসোলের মহকুমাশাসক প্রলয় রায়চৌধুরীর আশ্বাস, নির্দিষ্ট আবেদন পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কুলটিতে জিটি রোডের ধারে এই কুষ্ঠপল্লিটি গড়ে ওঠে ১৯৫৭ সালে। মহকুমা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর সূত্রে জানা যায়, তখন রাজ্য সরকার ৩৮১ ও ৩৮২ নম্বর অংশটি কুষ্ঠরোগীদের বাসের জন্য দেয়। জানা গিয়েছে, রাজ্য সরকারের অনুরোধে এই দুই অংশের জমি দিয়েছিল সীতারামপুরের রায় পরিবার। এখানে বাস করতে শুরু করা রোগীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করে আসানসোল মাইন্স বোর্ড অব হেল্থ। এখন যাঁরা বাস করছেন তাঁরা সকলেই সুস্থ ও বিপিএল তালিকাভুক্ত।
বহু বছর বাস করলেও এলাকার কোনও উন্নয়ন হয়নি বলেই অভিযোগ বাসিন্দাদের। তাঁরা জানান, উন্নয়ন বলতে বেশ কয়েক বছর আগে তৈরি হয়েছে একটি কংক্রিটের রাস্তা, বসেছে একটি জলের কল। আশপাশে এখনও বহু কাঁচা নর্দমা ও গলি রয়ে গিয়েছে। সর্বত্র আবর্জনার স্তূপ। বাসিন্দারা জানান, পুর-কর্তৃপক্ষের কাছে তাঁরা বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার আবেদন করেছিলেন। কিন্তু কেউ কানে তোলেননি। স্থানীয় বাসিন্দা মিনা ক্ষেত্রপাল ভিক্ষে করে দিন চালান। খড়ের চালের এক চিলতে ঘরে থাকেন। তাঁর কথায়, ‘‘মাথার উপরের ছাদটা যে কোনও দিন ধসে যেতে পারে। সরকারি খরচে একটা বাড়ি বানিয়ে দিলে বেঁচে যেতাম।’’
বাসিন্দাদের অভিযোগ, এখন এলাকার অনুন্নয়নের সঙ্গে যোগ হয়েছে দুষ্কৃতী ও জমি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য। ছোট-ছোট প্লট করে বিক্রির উদ্দেশ্যে এলাকার একমাত্র পুকুরটি আবর্জনা ফেলে ভরাট করছে কয়েক জন মাফিয়া। প্রতিবাদ করায় খুনের হুমকিও শুনতে হয়েছে বলে অভিযোগ এলাকার অনেকের। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক বাসিন্দার অভিযোগ, ‘‘ভিটেমাটি দখল করে নেওয়ার হুমকি দিচ্ছে ওই দুষ্কৃতীরা।’’
কেন এই দৌরাত্ম্য চালানো হচ্ছে? এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কুষ্ঠপল্লির পাশে যৌনপল্লির কিছু অংশে ঘাঁটি গেড়ে থাকে এক দল দুষ্কৃতী। তারাই জমি মাফিয়াদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে এলাকায় দখলদারি করে জমি বিক্রি করছে। এমন ভাবেই বিক্রি হওয়া একফালি জায়গায় ঘর তৈরি করে থাকা এক মহিলা দাবি করলেন, স্থানীয় এক দালালের কাছে জমি কিনেছেন তিনি।
এই পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা চেয়ে আসানসোলের মহকুমাশাসকের কাছে তাঁরা লিখিত আবেদন করেছেন বলে জানান কুষ্ঠপল্লির বাসিন্দারা। মহকুমাশাসক প্রলয়বাবু অবশ্য বলেন, ‘‘আবেদন হাতে পাইনি। তবে পেলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy