গুলির চিহ্ন। নিজস্ব চিত্র প্রতীকী চিত্র।
শহরের অভিজাত এলাকাগুলির অন্যতম বলে পরিচিত দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারের অম্বুজা টাউনশিপ এলাকা। সেখানে রবিবার রাতে গুলি চলেছে বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় রীতিমতো আতঙ্কে এলাকাবাসী। পাশাপাশি বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেনবিরোধী নেতৃত্ব।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, টাউনশিপের ২৫ নম্বর স্ট্রিটের একটি বাড়িতে রয়েছে লোকেশ সিংহ, রীতেশ সিংহ ও জিতেশ সিংহ নামে তিন ভাইয়ের পরিবহণ সংস্থার কার্যালয়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সংস্থার অন্যতম কর্তা রীতেশ রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ বাইরের বারান্দায় দাঁড়িয়েছিলেন। সে সময় কেউ গুলি চালায়। রীতেশ দৌড়ে ঘরের ভিতরে চলে যান। পরে বেরিয়ে এসে দেখেন, মোটরবাইকে চেপে দু’জন চম্পট দিচ্ছেন। ঘটনার খবর পেয়েই পুলিশের বিশাল বাহিনী সেখানে চলে আসে। রীতেশকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। ঘটনার ঘণ্টা দুয়েক পরে রীতেশকে নিয়ে বেরিয়ে যায় পুলিশ। যদিও সংবাদমাধ্যমের সামনে তিনি মুখ খুলতে চাননি। তবে বিষয়টির সঙ্গে কয়লার ডেলিভারি অর্ডারের (ডিও) যোগ থাকতে পারে বলে অনুমান পুলিশের একাংশের।
কিন্তু যে এলাকায় গুলি চলেছে, সেটি মূলত বসতি এলাকা। রয়েছে বেশ কয়েকটি রেস্তরাঁ, হোটেল, বিভিন্ন বহুজাতিক সংস্থার অফিস। এমন জমজমাট এলাকায় গুলি চলে। তাতে কেউ হতাহত হননি ঠিকই। কিন্তু কী ভাবে এমন একটি ঘন-জনবসতিপূর্ণ এলাকায় এই ঘটনা ঘটল, তা নিয়ে আতঙ্কে এলাকাবাসী।
ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পরেও, আতঙ্কের পরিবেশ এমনই যে, স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রায় কেউই সংবাদমাধ্যমের কাছে মুখ খুলতে চাননি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তাঁদের কেউ-কেউ সংবাদমাধ্যমের একাংশের কাছে বলেন, “খুবই ভয় লাগছে। এ ভাবে কোনও সংস্থার কার্যালয়ে গুলি চালিয়ে পালিয়ে গেল দুষ্কৃতীরা। ভাবতেই পারছি না। পুলিশের কড়া নজরদারি থাকা দরকার।” পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, সর্বত্র ‘নাকা চেকিং’ চলছে। ঘটনাস্থল লাগোয়া বাড়িগুলির সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এ দিকে, শহর দুর্গাপুরে সাম্প্রতিক সময়ে পর পর নানা অপরাধমূলক ঘটনার অভিযোগ উঠছে। সপ্তাহখানেক আগেই ভিড়িঙ্গির চাষিপাড়া এলাকা থেকে হুগলির পান্ডুয়ায় গুলি করে গাড়ি চালক খুনের ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়। তার পরে, বাসে বিহার যাওয়ার পথে পুলিশ আগ্নেয়াস্ত্র-সহ গ্রেফতার করে অন্য এক যুবককে।
এই পরিস্থিতিতে সরব হয়েছেন বিরোধী নেতৃত্ব। বিজেপির অন্যতম রাজ্য সম্পাদক তথা দুর্গাপুর পশ্চিমের বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোড়ুইয়ের বক্তব্য, “দুর্গাপুরে এক ব্যবসায়ীকে তাক করে গুলি চালাল দুষ্কৃতীরা। অল্পের জন্য তিনি বেঁচে যান। আসানসোলে কয়েক দিন আগে হোটেলে ঢুকে সেটির মালিককে গুলি করে খুন করল দুষ্কৃতীরা। পুলিশ নিজের কাজ না করে শাসক দলের কথায় কাজ করলে এমনই হবে। দ্রুত এই পরিস্থিতির বদল দরকার।” সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পঙ্কজ রায় সরকারের অভিযোগ, “দুর্গাপুরে দুষ্কৃতী-রাজ চলছে। আগেই এ কথা বলেছি আমরা। শহরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অত্যন্ত খারাপ হয়ে গিয়েছে।” যদিও অভিযোগে আমল দেননি পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান তথা তৃণমূল নেতা অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, “পুলিশ সব জায়গায় নজরদারি চালাচ্ছে। কোনও ঘটনা ঘটলে তদন্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছে পুলিশ। অম্বুজার ঘটনারও দ্রুতকিনারা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy