বিলের জলে খাবারের খোঁজে পরিযায়ী পাখিরা। নিজস্ব চিত্র।
গত বছর থেকে পূর্বস্থলী ১ ব্লকের বাঁশদহ বিলে শীতের মরশুমে দেখা মিলছে দেশি-বিদেশি নানা প্রজাতির পাখির। রবিবার এলাকার বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রাণীসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের আবেদনে সেখানে পাখি গণনা করল বন দফতরের কাটোয়া রেঞ্জের একটি দল। এ দিন ঘণ্টা তিনেক ধরে নৌকায় বিলের বিভিন্ন প্রান্ত ঘুরে চলল গণনার কাজ।
বন দফতরের দাবি, এখানে প্রায় ২৭টি প্রজাতির প্রায় সাড়ে ছ’হাজার পাখির দেখা মিলেছে। বিরল প্রজাতির ইয়ল বিটান প্রজাতির পাখি ছাড়াও কটন পিগমিগুলস, কমনকুট, ব্লাকডঙ্গ, প্রেসেনটিলজাকানা, কমনমুরহ্যানের মতো বেশ কিছু প্রজাতির পাখি নজরে এসেছে বন দফতরের দলটির। দেখা গিয়েছে দেশি মাছ রাঙা, পানকৌড়ি, কাঠ ঠোকরার মতো পাখিও। এই পাখিদের ওজন ভাল থাকায় বন দফতের অনুমান এলাকায় তাদের যথেষ্ট খাবারের যোগান রয়েছে।
এ দিন সকাল আটটা নাগাদ বন দফতরের কাটোয়ার রেঞ্জার শিবপ্রসাদ সিংহ, পাখি বিশেষজ্ঞ নব্যেন্দু পাল-সহ ৮ জনের দলটি বিলে পৌঁছয়। তাঁদের সঙ্গে ছিল দূরবীন, বড় লেন্সের ক্যামেরা-সহ নানা সরঞ্জাম। পূর্বস্থলী ২ ব্লকের চুপির পাখিরালয়ে পাখি গণনায় লেসার হুইসেলিং ডাক নামে একটি প্রজাতির পাখির দেখা মিলেছিল। পরিদর্শক দলের সদস্যরা জানান, বাঁশদহ বিলে ঝাঁকে ঝাঁকে এই প্রজাতির পাখি দেখা গিয়েছে। অনুমান, চুপির পাখিরালয় থেকে এই পাখির একাংশ উড়ে এসেছে এই বিলে।
রেঞ্জার শিবপ্রসাদ বলেন, “কাটোয়া রেঞ্জে পাখিদের প্রজাতির সংখ্যা চুপি, ছাড়িগঙ্গায় বেশি হলেও দেখা যাচ্ছে এই বিলে পাখির সংখ্যা সব থেকে বেশি।” নব্যেন্দুর বক্তব্য, “ইয়ল বিটান নামে পাখিটি এখন আর তেমন দেখা যায় না। অথচ এখানে আমরা দেখতে পেয়েছি। এখানকার পরিবেশের জন্যেই ভবিষ্যতে আরও পরিযায়ী পাখি আসার সম্ভাবনা রয়েছে।”
এ দিন পাখি গণনার যাত্রা উদ্বোধন করে মন্ত্রী স্বপন বলেন, “এখানে পাখিদের যাতে কোনও ভাবে বিরক্ত না করা হয় তার জন্যে লাগাতার প্রচার চলে। পর্যটকদের জন্য বাঁশদহ বিলের পাড়ে তৈরি হয়েছে দু’টি গেস্ট হাউস। রাস্তা, আলো, সেতু, বসার জায়গা-সহ নানা পরিকাঠামো গড়া হয়েছে। পরিযায়ী পাখিদের নিয়ে এ বার যাতে পাখিরালয় গড়ে ওঠে সে চেষ্টা করা হচ্ছে।” মন্ত্রী আরও জানান, পাখিরালয় হলে এক দিকে যেমন বাড়বে পর্যটকের সংখ্যা, অন্য দিকে স্থানীয়দের কর্মসংস্থানও বাড়বে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy