Advertisement
১৮ মে ২০২৪

দুর্গাপুরে জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে স্লোগান সংগঠনেই

সোমবার দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্টের (ডিএসপি) ঘটনা। এই ঘটনার একটি ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়াতেও। তার পরেই শুরু হয় বিতর্ক।

দু’পক্ষের জটলা। চলল স্লোগান-পাল্টা স্লোগানও। কোকআভেন থানা চত্বরে মঙ্গলবার। ছবি: বিকাশ মশান।

দু’পক্ষের জটলা। চলল স্লোগান-পাল্টা স্লোগানও। কোকআভেন থানা চত্বরে মঙ্গলবার। ছবি: বিকাশ মশান।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০১৯ ০২:৫২
Share: Save:

আইএনটিটিইউসি-র জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে স্লোগান দিলেন সংগঠনেরই সদস্যেরা। সোমবার দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্টের (ডিএসপি) ঘটনা। এই ঘটনার একটি ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়াতেও। তার পরেই শুরু হয় বিতর্ক।

সোমবার কোকআভেন প্ল্যান্টে বিশেষ এক জন ঠিকাদারকে কাজ করতে দেওয়া হবে না বলে দাবি করে আইএনটিটিইউসি। সম্প্রতি ওই ঠিকাদার আইএনটিটিইউসি-র প্রাক্তন জেলা সভাপতি প্রভাত চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ করেন তৃণমূল নেতৃত্বের কাছে। প্রভাতবাবু অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে ওই ঠিকাদারের ‘বিজেপি ঘনিষ্ঠতা’ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তৃণমূলের পক্ষ থেকে থানায় ওই ঠিকাদারের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগও দায়ের করা হয়।

এ দিন আইএনটিটিইউসি-রই এক নেতা ওই ঠিকাদারকে কারখানায় ঢোকানোর চেষ্টা শুরু করেন বলে অভিযোগ সংগঠনের ঠিকাশ্রমিকদের। শুরু হয় বিক্ষোভ। কোকআভেন প্ল্যান্ট কার্যত অচল হয়ে যায়। সেখানে অভিযোগ ওঠে, ওই আইএনটিটিইউসি নেতা ও তাঁর সঙ্গী ঠিকাদার কাজ করছেন সংগঠনের বর্তমান জেলা সভাপতি বিশ্বনাথ পাড়িয়ালের মদতে। ভিডিয়োয় দেখা যায়, কাজের জায়গায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানানোর পাশাপাশি ‘বিশ্বনাথ পাড়িয়ালের কালো হাত ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও’, এমন স্লোগানও ওঠে। প্রায় ঘণ্টাচারেক বিক্ষোভ চলে।

ঘটনাচক্রে, রাজ্যে তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পরে থেকে ২০১৬-র মাঝামাঝি পর্যন্ত জেলার আইএনটিটিইউসি-র জেলা সভাপতির পদে ছিলেন প্রভাতবাবু। ওই সময়ে ডিএসপি-সহ নানা কারখানায় ঠিকাশ্রমিক নিয়োগ ঘিরে দুর্নীতির অভিযোগে আইএনটিটিইউসি-র গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বারবার প্রকাশ্যে আসে। ২০১৬-র বিধানসভা ভোটে দুর্গাপুরের দু’টি আসনই তৃণমূলের হাতছাড়া হওয়ার পরে আইএনটিটিইউসি-র সব কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়। তবে সংগঠন দেখভালের কাজে কার্যত পুরনোরাই রয়ে যান। ২০১৮-র জুনের শেষে আইএনটিটিইউসি-র জেলা সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পান দুর্গাপুরের ‘তৃণমূল ঘনিষ্ঠ’ কংগ্রেস বিধায়ক বিশ্বনাথবাবু। কিন্তু তার পরেও কোন্দলের ছবি সামনে আসে বারবার, জানান শ্রমিকেরাই। গত বছর ৩১ অগস্ট এএসপি-র কৌশলগত বিলগ্লিকরণের সিদ্ধান্ত-সহ কয়েকটি বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরোধিতা করে ডিএসপি-র সামনে সভা ডাকেন বিশ্বনাথবাবু। আসেননি প্রাক্তন জেলা সভাপতি প্রভাতবাবু। ১০ সেপ্টেম্বর সেই একই জায়গায় আলাদা সভা ডাকেন প্রভাতবাবু।

এ দিনের ভিডিয়ো ও বিক্ষোভ প্রসঙ্গে প্রভাতবাবু অবশ্য জানান, বিক্ষোভ সামাল দিতে কারখানা কর্তৃপক্ষ তাঁর সঙ্গে যোগাযাগ করেছিলেন। তিনি সাধ্যমতো সহযোগিতা করে বিষয়টি মিটিয়ে দেন। তবে তাঁর বক্তব্য, ‘‘বিক্ষোভে কী স্লোগান উঠেছে তা আমি বলতে পারব না। আমি সেখানে ছিলাম না। তবে প্ল্যান্টের সমস্ত আইএনটিটিইউসি কর্মীরাই ওই বিক্ষোভে যোগ দিয়েছিলেন।’’ সংগঠনের জেলা চেয়ারম্যান ভি শিবদাসন বলেন, ‘‘সংগঠনে কোনও রকম দ্বন্দ্ব মানা হবে না। ওই দিন ঘটেছে, তা দেখা হবে। দল খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE