পিকনিক: আসানসোলের ধেনুয়া গ্রাম লাগোয়া এলাকায়। —নিজস্ব চিত্র।
পিকনিক করতে গিয়ে ঝক্কি নেই জ্বালানি জোগাড়ের। কারণ, হাতের কাছেই মজুত রয়েছে আগুন। একটু খোঁজ করলেই দেখা যাবে, দামোদরের পাড়ে বালির চর, পাথরের খাঁজে মাটি ফুঁড়ে বেরিয়ে আসছে আগুন। তার উপরে চলছে হাঁড়ি চড়ানো। বেশ কয়েক দিন ধরে এমনটাই ঘটছে আসানসোলের ধেনুয়া গ্রাম লাগোয়া এলাকায়। খনি কর্তৃপক্ষের দাবি, মাটি থেকে মিথেন বেরিয়ে আসার ফলেই এমনটা ঘটছে।
মঙ্গলবার ওই এলাকায় দামোদরের চরে গিয়ে দেখা হিরাপুরের কয়েক জন বাসিন্দার সঙ্গে। দেখা গেল, কয়েকটা ইট সাজিয়ে উনুন তৈরি করে তার উপরে চাপানো হয়েছে মাংসের হাঁড়ি। তাঁদের দাবি, ‘‘এর ফলে পিকনিকের বাজেটটাই অনেকটা কমে গিয়েছে।’’ রান্না কেমন হচ্ছে? জিজ্ঞেস করতেই এক জনের জবাব, ‘‘ঢিমে আঁচে মাংস রান্নার মজাই আলাদা’’।
এ দিন স্থানীয় বাসিন্দা প্রদীপ মাঝিও দামোদরের চরে এসেছিলেন। কথা বলে জানা গেল, প্রায়ই তাঁরা কয়েক জন এমন পিকনিক করেন। একমাত্র বর্ষার সময় ছাড়া বছরভরই এখানে এমন প্রাকৃতিক উনুন থাকে বলেই দাবি তাঁর।
ইসিএলের প্রবীণ খনিকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, ওই এলাকায় মাটির তলায় প্রচুর পরিমাণে মিথেন রয়েছে। মাটি ফুঁড়ে সেই মিথেনই বাতাসের সংস্পর্শে এসে আগুন ধরাচ্ছে। কিন্তু কী ভাবে বোঝা যায় প্রাকৃতিক উনুনের স্থান? রান্না সেরে আগুনের উপরে মাটি, বালি চাপা দিতে দিতে আসানসোল শহর থেকে আসা একটি দল জানায়, বালির চর, পাথরের খাঁজে যেখানে লালচে রং দেখা যায়, সেখানেই মিথেন বের হয়। সেখানে গাছের শুকনো পাতা বা কাগজের টুকরো ফেলে দেওয়া মাত্র দপ করে জ্বলে ওঠে আগুন।
তবে এই আগুনে রান্না কতটা বিপজ্জনক, সে প্রশ্নও উঠেছে। যদিও প্রাক্তন খনি আধিকারিক তথা ইসিএলের মানবসম্পদ দফতরের প্রশিক্ষক রঞ্জিত লায়েক বলেন, ‘‘বিপদের সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে। কারণ মিথেন ভূগর্ভ থেকে বের হলে খুব সহজেই বাতাসে মিলিয়ে যায়। খনিতে মিথেন ও বাতাসের সংস্পর্শে আগুন ধরলে বড়সড় বিপদের সম্ভাবনা থাকে। কারণ সে ক্ষেত্রে কয়লা স্তরে আগুন ধরে যায়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy