একবার হাসপাতালের ‘হেড’, তো পরক্ষণেই ‘সিভিক ভলেন্টিয়ার’ পরিচয়ে রোগীর আত্মীয়ের কাছ থেকে চিকিৎসা-সংক্রান্ত সবরকম ‘সাহায্যে’র আশ্বাস দিয়েছিলেন এক যুবক। তাঁর বিনিময়ে চেয়েছিলেন বারোশো টাকা। তবে রোগীর পরিজনদের সচেতনতায় বর্ধমান শহরের রথতলার বিভূতি দত্ত নামে ওই দালালের ঠাঁই হয়েছে শ্রীঘরে।
বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক কল্লোল কবিরাজ বলেন, ‘‘টাকা হাতানোর জন্য রাতে ওই রোগীর পরিজনদের মদের ঠেকে যাওয়ারও প্রস্তাব দিয়েছিল ধৃত। এ নিয়ে বচসা হওয়ায় হাসপাতালের ক্যাম্পের সিভিক ভলেন্টিয়ারেরা হস্তক্ষেপ করে ওই দালালকে আটক করে।’’ পরে জিজ্ঞাসাবাদ করে বিভূতিকে বর্ধমান থানায় পাঠানো হয়। পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার গভীর রাতে ওই দালালকে ধরার সময় বর্ধমানের এক প্রভাবশালী কাউন্সিলরের ঘনিষ্ঠ বলেও সে পরিচয় দেয় এবং সে স্বীকার করে নেয়, মাঝেমধ্যেই রাতের বেলা বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রোগীর আত্মীয়দের ‘সাহায্য’ করে দু’পয়সা কামায় সে।
পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, বীরভূমের মহম্মদবাজারের নিমপাহাড়ি গ্রামের সোনামুখী হাঁসদা মঙ্গলবার দুপুরে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে বুকে ব্যাথা নিয়ে ভর্তি হন। বছর তিরিশের ওই তরুণীকে সন্ধ্যায় রাধারানি ওয়ার্ডের পাঁচ নম্বর ব্লকে সরানো হয়। তাঁর দাদা সুশীল হাঁসদা ও ভাই টুবুর হাঁসদা সেকানেই ছিলেন। রাত বাড়তেই তাঁদের সঙ্গে ভাব জমিয়ে ফেলেন ধৃত বিভূতি। রোগীর দাদা ও ভাইয়ের কথায়, “প্রথমে হাসপাতালের হেড, তার কিছুক্ষণপরেই সিভিক ভলেন্টিয়ার বলে পরিচয় দিয়েছিল লোকটা। গল্প করার ফাঁকে হাসপাতালের চিকিৎসা থেকে বিভিন্ন পরীক্ষা সহজে করিয়ে দেবে বলে ১২০০ টাকাও চায়। আমাদের মদ খাওয়ানোরও প্রস্তাব দেয়। তখনই সন্দেহ হয় আমাদের।’’
কয়েক দিন আগে হাসপাতাল সুপার নিজেই হাতেনাতে ধরে ফেলেছিলেন এক দালালকে। প্রকাশ্য তাঁকে ভর্ৎসনা করার পর হাসপাতালে আসতে নিষেধ করা হয়। সুপারের এই উদ্যোগকে সমর্থন করেন তৃণমূল প্রভাবিত হাসপাতালের কর্মচারী সংগঠন। এ দিন হাসপাতাল সুপার উৎপল দাঁ বলেন, ‘‘ওই রোগীর পরিজন সচেতন হওয়ায় অহেতুক টাকা খোওয়ানোর হাত থেকে বেঁচে গেলেন। অভিযুক্তকেও পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া গেল। আমরা চাই, প্রত্যেকে এ ভাবে এগিয়ে আসুক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy