Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
আসানসোল স্টেডিয়াম

ফাঁক গলে চরছে গরু, দুষ্কর্ম মাঠে

মূল গেট বন্ধ। কিন্তু ফাঁক কাঁটাতারের বেড়ায়। আর সেই ফাঁক দিয়ে ঢুকেই আসানসোল স্টেডিয়ামে অসামাজিক কাজকর্মের আসর বসায় কিছু লোকজন, অভিযোগ উঠেছে এমনই।

এ পথেই মাঠে যাতায়াত। নিজস্ব চিত্র।

এ পথেই মাঠে যাতায়াত। নিজস্ব চিত্র।

নীলোৎপল রায়চৌধুরী
আসানসোল শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০১৬ ০০:০০
Share: Save:

মূল গেট বন্ধ। কিন্তু ফাঁক কাঁটাতারের বেড়ায়। আর সেই ফাঁক দিয়ে ঢুকেই আসানসোল স্টেডিয়ামে অসামাজিক কাজকর্মের আসর বসায় কিছু লোকজন, অভিযোগ উঠেছে এমনই।

সম্প্রতি স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে রাতে মদ্যপানের আসর বসানোয় চার জন তরুণ-তরুণীকে বাধা দিতে গেলে স্টেডিয়াম কমিটির কয়েক জনকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। স্টেডিয়ামটির তিন দিক কাঁটাতার দিয়ে ঘেরা। এক দিকে কংক্রিটের দেওয়াল। শনি ও রবিবার সকালে দু’টি ক্রিকেট প্রশিক্ষণ শিবিরের আয়োজন হয় এই স্টেডিয়ামে। কমিটি সূত্রে জানা যায়, তারের কিছু জায়গা আশপাশের কিছু লোকজন কেটে দিয়েছে। সেখান দিয়ে গরু-ছাগল ঢুকে মাঠে চরে বেড়ায়।

বছর দেড়েক আগে প্রধানমন্ত্রীর একটি সভার জন্য স্টেডিয়ামের কংক্রিটের দেওয়ালের একাংশ ভেঙে মঞ্চ তৈরি হয়। স্টেডিয়াম কমিটির দাবি, আয়োজকেরা দেওয়ালটি নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিলেও তা করা হয়নি। সেই সময় তিনটি টাওয়ার ল্যাম্পও তুলে ফেলা হয়। এর জেরে মাঠের এক দিক অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে থাকে। সেই সুযোগে সন্ধ্যার পরে গ্যালারি ও মাঠে দুষ্কর্মের ঠেক বসে বলে অভিযোগ।

আরও অভিযোগ, স্টেডিয়াম প্রাঙ্গণে পার্কিং জোনে গাড়ি রাখার নামে সারা দিন মোটরবাইক, স্কুটারের যাতায়াতে মাঠের ক্ষতি হয়। রাধানগর ক্রিকেট কোচিং ক্যাম্পের কর্ণধার কিট্টু দত্ত অভিযোগ করেন, প্রশিক্ষণের সময়েও গরু, ছাগল আর দু’চাকার যানের জন্য পিচ নষ্ট হয়। মহকুমা ক্রীড়া সংস্থার সম্পাদক অমল সরকারের দাবি, স্টেডিয়াম কমিটিতে বিভিন্ন স্তরের প্রতিনিধি আছেন। সমস্যা হল, গঠনমূলক আলোচনা হলেও রূপায়িত হয় না। কারণ, যাঁদের দায়িত্ব দেওয়া হয় তাঁদের সময়ের অভাবে কাজ হতে অনেক দেরি হয়ে যায়। অনেক কাজ হয়ও না। অমলবাবু বলেন, “যে সব ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে সেগুলি জমা করে রেখেছি। কিন্তু নিলাম পর্যন্ত করা যায়নি। পাশেই ইন্ডোর স্টেডিয়াম লাগোয়া ফাঁকা মাঠ বিভিন্ন মেলা ও সাকার্সে ভাড়া দিয়ে কিছু আয় হতো। সেখানে এখন পরিববহণ দফতর গাড়ির নানা বিষয় নীরিক্ষণ করে। শহরে নো-এন্ট্রির কারণে বড় ট্রাকগুলি রাত ১০টা পর্যন্ত আটকে রাখা হয়। এর জেরে স্টেডিয়াম কমিটির দীর্ঘদিনের আয় মার খাচ্ছে। রক্ষণাবেক্ষণে সমস্যা হচ্ছে।’’ অমলবাবু জানান, পাঁচিলের ভাঙা অংশ তাঁরা নিজেরাই পুননির্মাণে উদ্যোগী হয়েছেন।

স্টেডিয়াম কমিটির দাবি, কোনও অসামাজিক কাজের অভিযোগ পেলে পুলিশ আসে। কিন্তু পুলিশ আসতে দেখেই পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। আবার ধরা পড়লেও কড়া শাস্তি হয় না। অমলবাবু বলেন, ‘‘পরিকাঠামোর সমস্যা দূর করে স্থায়ী সমাধান হোক। আলাদা জেলা গঠন হলে উন্নয়ন তহবিল থেকে সাহায্য মিলবে বলে আশা করছি। আর তাতে স্টেডিয়ামের আমূল পরিবর্তন করা যাবে।” মহকুমা প্রশাসনের তরফে আশ্বাস, স্টেডিয়ামের সমস্যা গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Asansol stadium Mismanagement
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE