এই ছবি পাল্টাতেই ব্যবস্থা। ছবি শৈলেন সরকার
আসানসোলে একটি নতুন বাসস্ট্যান্ড নির্মাণের জন্য ছ’কোটি টাকা মঞ্জুর করেছে রাজ্যের পরিবহণ দফতর। শুক্রবার কলকাতায় আসানসোলের পরিবহণ ব্যবস্থা নিয়ে একটি বৈঠকে রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী এই অর্থ মঞ্জুর করেছেন বলে জানান আসানসোলের মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি। তাঁর আরও দাবি, ১৫ দিনের মধ্যে এই টাকা মিলবে। বাসস্ট্যান্ড তৈরির প্রাথমিক প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে যাবে। এ ছাড়াও এলাকার পরিবহণ ব্যবস্থা ঢেলে সাজতে কিছু পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
আসানসোলের মতো বড় শহরে একটি আধুনিক বাসস্ট্যান্ড প্রয়োজন, এই দাবি রয়েছে গত ১৫ বছর ধরে। কিন্তু কোনও তরফে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, মাস আটেক আগে নতুন পুরবোর্ড গঠনের পরে মেয়র শহরের বাইরে একটি আধুনিক বাসস্ট্যান্ড তৈরির উপরে জোর দেন। একটি বিশদ প্রকল্প রিপোর্ট (ডিপিআর) তৈরি করে পরিবহণ দফতরে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়। মেয়র বলেন, ‘‘বিধানসভা ভোটের পরে নতুন সরকার গঠনের পরেই আমাদের সেই রিপোর্ট অনুমোদন করেছেন পরিবহণ মন্ত্রী। শীঘ্রই কাজে হাত পড়বে।’’
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, মূল শহরের বাইরে কালিপাহাড়ি এলাকায় এডিডিএ-র জমিতে স্ট্যান্ডটি তৈরি হবে। কিন্তু আধুনিক বাসস্ট্যান্ড শহরের বাইরে গড়া হচ্ছে কেন? মেয়র জানান, শহরের মাঝে যে সিটি বাসস্ট্যান্ড আছে সেখানে শহরের বাস, মিনিবাস ও দূরপাল্লার বাস, সবই দাঁড়ায়। কিন্তু স্ট্যান্ডটি এত অপরিসর যে অধিকাংশ বাস রাস্তায় দাঁড়াতে বাধ্য হয়। তাছাড়া প্রচুর বাস এক সঙ্গে ঢোকা-বেরনোয় শহরের ওই জায়গায় রীতিমতো যানজট হয়। ট্রাফিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে। শহরকে যানজটমুক্ত করতে পুলিশ হিমসিম খায়। শহরের বাইরে বাসস্ট্যান্ড তৈরি হলে এই সমস্যাগুলি থাকবে না বলে মেয়রের মত।
আধুনিক বাসস্ট্যান্ডে যাত্রীদের আরও ভাল পরিষেবা দেওয়া যাবে বলেও পুর কর্তৃপক্ষ মনে করছেন। কলকাতায় বৈঠকে এই এলাকার পরিবহণ ব্যবস্থা উন্নত করার পরামর্শ দিয়েছেন পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দুবাবু। মেয়র জিতেন্দ্রবাবু জানান, পুলিশের পরামর্শ মতো শহরের জনবহুল এলাকাগুলিতে সিসি ক্যামেরা বসানো হবে। জিটি রোড-সহ শহরের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার দু’পাশে দখল হয়ে থাকা জমি পুনরুদ্ধার করা হবে। তাতে রাস্তা চওড়া হবে, যানবাহন চলাচলে সুবিধা হবে।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘাঘরবুড়ি মন্দিরের কাছে একটি সুসংহত পাইকারি বাজার তৈরি হচ্ছে। সেটিও তাড়াতাড়ি চালু হয়ে যাবে। আসানসোলের মূল বাজারের পাইকার বাজারটি সেখানে তুলে নিয়ে যাওয়া হবে। তাতে বাজারের মধ্যে বড়-বড় লরি দাঁড় করিয়ে পণ্য খালাস করার অভ্যাস বন্ধ হবে বলে পুর কর্তৃপক্ষ মনে করছেন। ফলে, যানজটের সমস্যাও অনেকটা মিটবে।
যানজট কমাতে এর আগে শহরের বাইরে দু’নম্বর জাতীয় সড়ক লাগোয়া সেনর্যালে রোডে নিবেদিতা বাসস্ট্যান্ড তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু সেখানে কোনও দূরপাল্লা বাস দাঁড়ায় না। সেখান থেকে শহরের কোনও বাস যাতায়াত করে না। বর্তমানে ওই বাসস্ট্যান্ডটি দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ দফতরের ডিপো হয়ে উঠেছে। কালিপাহাড়িতে নতুন স্ট্যান্ড তৈরি হলে তারও একই হাল হবে কি না, যানজটে জেরবার শহরবাসীর কাছে সেটাই এখন প্রশ্ন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy