প্রেমিকের সঙ্গে ছক কষে করে শ্বশুরবাড়ি থেকে গয়না চুরি করানোর অভিযোগে গ্রেফতার হলেন এক সদ্য বিবাহিতা। ওই বধূ সোনামণি মণ্ডল ও তাঁর ‘প্রেমিক’ মহব্বত শেখকে গ্রেফতার করেছে পূর্ব বর্ধমানের গুসকরা ফাঁড়ির পুলিশ। বৃহস্পতিবার আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক ধৃতদের পাঁচ দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
গত ২১ সেপ্টেম্বর গুসকরার হাটতলায় তাঁর বাড়ি থেকে প্রায় ১২ ভরি সোনার গয়না চুরি গিয়েছে বলে ফাঁড়িতে অভিযোগ করেন স্থানীয় বাসিন্দা তপন মণ্ডল। গত মে মাসে তপনবাবুর ছেলে প্রতীক মণ্ডলের সঙ্গে বিয়ে হয় বীরভূমের পাড়ুইয়ে কসবার সোনামণির। প্রতীকবাবুর গয়নার দোকান রয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, তদন্তে তারা দেখে, চুরি হলেও বাড়ির অন্য কোনও ঘরে তছনছের চিহ্ন নেই। যে আলমারি থেকে গয়না চুরি গিয়েছে, শুধু সেটা খোলা। তদন্তকারীদের সন্দেহ হয়, বাড়ির কেউ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন।
বাড়ির লোকজনের মোবাইলের ‘কল লিস্ট’ ধরে কে, কাকে, কত বার ফোন করেছেন, তা পরীক্ষা করা হয়। দেখা যায়, সোনামণিদেবীর নম্বর থেকে ঘটনার আগে ও পরে একটি নম্বরে ক্রমাগত ফোন হয়েছে। ওই নম্বরটি নিয়ে তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, আউশগ্রামেরই জয়কৃষ্ণপুরের মহব্বত শেখের সঙ্গে কথা বলেছেন সোনামণিদেবী।
বছর কুড়ির ওই বধূ বীরভূমের একটি কলেজের কলা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। মহব্বতও ওই কলেজেরই তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। পুলিশ মহব্বতকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য আউশগ্রাম থানায় ডাকে।
জেলা পুলিশের এক কর্তার দাবি, জেরার মুখে মহব্বত তাঁদের জানান, ২১ সেপ্টেম্বর শ্বশুরবাড়িতে তাঁকে ঢোকার বন্দোবস্ত করে দেন সোনামণি। যে ঘরের আলমারিতে গয়না ছিল, সে ঘরেই ঘুমোচ্ছিলেন বধূটির স্বামী। ঘরে ঢুকে আলমারি থেকে গয়না হাতিয়ে মহব্বত পালান। সে গয়না তাঁর কাছেই রয়েছে বলেও পুলিশের কাছে মেনেছেন ওই যুবক।
পুলিশ এর পরে বধূটিকে জেরায় ডাকে। ওই পুলিশ-কর্তার দাবি, বধূটি পুলিশকে বলেছেন, মহব্বতের সঙ্গে তাঁর ‘ঘনিষ্ঠতা’ থাকলেও বাড়ির লোকের কথায় তিনি অন্যত্র বিয়ে করতে বাধ্য হন। শ্বশুরবাড়ি থেকে পালানোর পরিকল্পনা ছিল বধূটি এবং তাঁর ‘প্রেমিকের’। সেই মতলবেই ওই চুরি করা হয়েছিল। তবে ধৃতদের পক্ষের আইনজীবী বরুণ বিশ্বাসের দাবি, ‘‘অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।’’
বধূটির শ্বশুর তপন মণ্ডল জানান, চুরির ঘটনার পরে প্রায় এক মাস শ্বশুরবাড়িতে ছিলেন তাঁর পুত্রবধূ। তপনবাবু বলেন, ‘‘বউমা-র হাবভাব দেখে তো কিছুই বোঝার উপায় ছিল না।’’ প্রতীকবাবুর প্রতিক্রিয়া, ‘‘যাকে বিশ্বাস করেছিলাম, সে এমন ভাবে ঠকাবে কী করে জানব!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy