কথায় বলে বই মানুষের বন্ধু। আর নির্ধারিত পাঠ্যক্রমের বাইরে গিয়ে বই ও পাঠকের মেলবন্ধন ঘটায় গ্রন্থাগার। কিন্তু কাটোয়ার অন্যতম প্রাচীন মহকুমা গ্রন্থাগারই কর্মী সঙ্কটে ধুঁকছে। গ্রন্থাগার সূত্রে জানা গিয়েছে, বিগত পাঁচ বছরে কোনও কর্মী নিয়োগ না হওয়ায় সমস্যায় পড়েছেন কর্তৃপক্ষ।
কাটোয়া মহকুমার সরকারি পৃষ্টপোষকতা প্রাপ্ত ৩০টি গ্রন্থাগারের মধ্যে কাটোয়া শহরের এই মহকুমা গ্রন্থাগারের ইতিহাস যেমন উজ্জ্বল তেমনই পুরাতন ও সমৃদ্ধ। জানা যায়, ১৯৬২ সালে জেলা, মহকুমা ও অঞ্চল্র ভিত্তিতে গ্রন্থাগার বিস্তারের কর্মসূচী নিয়েছিলেন ডক্টর বিধানচন্দ্র রায়। তাঁরই অনুমোদনে কালিম্পং ও কাটোয়ায় রাজ্যের প্রথম মহকুমা গ্রন্থাগার নির্মিত হয়। পরে বহু গুণী ও সুদক্ষ প্রশাসকের অধীনে এই গ্রন্থাগার কাটোয়া-সহ পার্শ্ববর্তী নদিয়া, মুর্শিদাবাদ জেলার পাঠকদের কাছেও প্রিয় হয়ে ওঠে।
গ্রন্থাগার সূত্রে জানা গিয়েছে, ঐতিহাসিক ভাবে সমৃদ্ধ এই গ্রন্থাগারে এখন চার জন অনুমোদিত কর্মী থাকার কথা। কিন্তু সহকারী গ্রন্থাগারিক ও রাত পাহারাদারের পদ দুটি শূন্য। কাজেই দুই কর্মীর অভাব নিয়েই গয়ংগচ্ছ করে চলছে মহকুমা গ্রন্থাগার। মহকুমা গ্রন্থাগারিক রামকৃষ্ণ সিংহ জানান, বছরখানেক আগে ডিজিটাইলাইজেশন হয়েছে, ৩টি কম্পিউটারও আছে। কিন্তু ইন্টারনেট সংযোগ না পাওয়ায় আধুনিকীকরনের সুবিধা লাভের কোনও সুযোগই নেই। ফলে স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে দীর্ঘক্ষণ ধরে বই খুঁজে বই পড়ার চাহিদা কমছে। তিনি আরও জানান, রাজ্য সরকারের গ্রন্থাগার পরিষদের তরফে ২৯ লক্ষ টাকা ভবন নির্মাণের জন্য অনুমোদিত হলেও এখনও পর্যন্ত সেই কাজ শেষ হয়নি। তবে ৭৫ শতাংশ কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে বলে জানালেন রামকৃষ্ণবাবু। তাঁর কথায়, ‘‘রিডিং রুমে কোনও কিয়স্ক নেই, যেখানে বই দেখা যাবে। আধুনিকীকরণের জন্য যদি শীতাতপনিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করা যায় তাহলে পাঠকদের আকর্ষণ বাড়বে।’’ গ্রন্থাগার সূত্রে জানা গিয়েছে, ২২, ৭০০ বই রয়েছে এখানে। তার মধ্যে প্রতিদিন ২৫-২৬টি বই ইস্যু হয়। তবে তার বেশিরভাগই চাকরি সংক্রান্ত বই ও পাঠ্যপুস্তক। পাঠকদের মধ্যে গল্প উপন্যাস ও শিশুসহিত্য পড়ার চাহিদা ক্রমশ কমছে বলেও গ্রন্থাগারের কর্মীদের দাবি। তবে মূল সমস্যা কর্মীর অভাব বলেই জানাচ্ছেন তাঁরা। গ্রন্থাগারিকের আশা, নবনির্বাচিত গ্রন্থাগারমন্ত্রী যখন মঙ্গলকোট বিধানসভার তথা কাটোয়া মহকুমারই বিধায়ক তখন তিনি এই গ্রন্থাগারের আধুনিকীকরণ ও কর্মী সমস্যা মেটানোর উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy