রাস্তার ধারই ভরসা। নিজস্ব চিত্র।
অভিযান হলে দিন কয়েক ঠিক থাকে। তার পরেই আবার ফিরে আসে আগের হাল। রাস্তা জুড়ে দাঁড়িয়ে থাকে গাড়ি। শহর ভোগে যানজটে।
গত কয়েক বছরে দুর্গাপুর শহরে নানা উন্নতির মাঝেও পার্কিং ব্যবস্থা পড়ে রয়েছে মান্ধাতা আমলে, এমনই অভিযোগ শহরবাসীর। কোথাও পার্কিংয়ের স্থায়ী ব্যবস্থা নেই, কোথাও আবার তা থাকলেও তোয়াক্কা করেন না চালকেরা। রাস্তা জুড়ে দাঁড়িয়ে থাকে গাড়ি, মোটরবাইক। পথ চলতে হোঁচট খান সাধারণ মানুষ।
দুর্গাপুর বাজারের ভিতরে ঘিঞ্জি রাস্তা দিয়ে হাঁটাচলা দায়। রাস্তা জুড়ে সার দিয়ে রাখা থাকে মোটরবাইক ও গাড়ি। বেনাচিতিতে নাচন রোডের দু’পাশে হাজার-হাজার দোকান। রয়েছে ব্যাঙ্ক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, হোটেল, নানা বেসরকারি সংস্থার অফিস। সারা দিন ভিড় লেগে থাকে। অথচ, গাড়ি রাখার কোনও পাকা ব্যবস্থা নেই। দোকান বা অফিসের সামনেই গাড়ি রাখতে হয়। ফলে, রাস্তা সংকীর্ণ হয়ে পড়ে। পথচারীরা সমস্যায় পড়েন। শুধু পুরনো বাজার নয়, আধুনিক সিটি সেন্টার এলাকাতেও ছবিটা এক রকম। রাস্তাতেই সার দিয়ে দাঁড় করানো থাকে মোটরবাইক, অটো, গাড়ি। ‘নো-পার্কিং’ বোর্ড থাকলেও প্রায় কেউই মানেন না। পার্কিংয়ের জন্য রাস্তার পাশে নির্দিষ্ট জায়গা আছে। তবে তা যথেষ্ট নয় বলে অভিযোগ। ফলে, জায়গা না মেলায় অনেকেই বাধ্য হন রাস্তায় গাড়ি-মোটরবাইক দাঁড় করাতে। ফলে, যানজট হয়। শহরের বাকি বাজারগুলিতেও এক পরিস্থিতি।
পুলিশ ও পরিবহণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সিটি সেন্টার এলাকায় চারটি পার্কিং জোন রয়েছে। শো দুয়েক চার চাকার গাড়ি এবং পাঁচশো মোটরবাইক রাখার ব্যবস্থা আছে। অথচ, এই এলাকায় দিনে কয়েক হাজার মোটরবাইক আসে। গাড়ির সংখ্যাও হাজারের নীচে নয়। ফলে, রাস্তাই ভরসা অনেকের কাছে। বেনাচিতি বাজারে আবার একটি মাত্র পার্কিং জোন। শ’খানেক গাড়ি রাখা যেতে পারে। কিন্তু বাজারে আসা মোটরবাইক ও গাড়ি মিলিয়ে সংখ্যাটা কয়েক হাজার। দুর্গাপুর বাজারে জায়গার অভাবে একটিও পার্কিং জোন গড়া যায়নি।
পার্কিং জোনে জায়গা থাকলেও অনেকে এড়িয়ে চলেন। তাঁদের অভিযোগ, জোনগুলি পরিচালনার দায়িত্বে থাকে বেসরকারি সংস্থা। চড়া ভাড়া নেয় তারা। নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে গেলে ভাড়া আরও বেড়ে যায়। তাই রাস্তায় দাঁড় করিয়ে রাখা গাড়ির সংখ্যা কমতে চায় না কিছুতেই।
পুরসভার ডেপুটি মেয়র অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, নতুন বাণিজ্যিক বাড়ি বা কমপ্লেক্স গড়ার অনুমতি দেওয়ার আগে নিজস্ব পার্কিং ব্যবস্থা গড়া হচ্ছে কি না তা খতিয়ে দেখা হয়। পুলিশ জানায়, মাঝে-মাঝেই অভিযান চলে। ক্রেন নিয়ে গিয়ে গাড়ি তুলে নিয়ে যাওয়া থেকে জরিমানা— সবই করা হয়। রাস্তায় মোটরবাইক, গাড়ি, অটো না রাখার আর্জি জানানো হয় লাউডস্পিকারে।
অভিযানের দিনগুলিতে নিয়মমাফিক চলে অনেক কিছুই। কিন্তু পাকাপাকি হাল ফিরবে কী উপায়ে, শহরবাসীর কাছে সেটাই প্রশ্ন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy