Advertisement
০১ নভেম্বর ২০২৪

নিকাশির জলে বাঁচছে ধান, পেঁয়াজ

এক সময়ে শহরের নোংরা নিকাশির জলে ক্ষতি হত ফসলের। এখন তা ধরে রেখেই ফসল বাঁচাচ্ছেন চাষি। 

পাম্পের সাহায্যে জল তুলে ব্যবহার করা হচ্ছে জমিতে। নিজস্ব চিত্র

পাম্পের সাহায্যে জল তুলে ব্যবহার করা হচ্ছে জমিতে। নিজস্ব চিত্র

কেদারনাথ ভট্টাচার্য
কালনা শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:৫৩
Share: Save:

এক সময়ে শহরের নোংরা নিকাশির জলে ক্ষতি হত ফসলের। এখন তা ধরে রেখেই ফসল বাঁচাচ্ছেন চাষি।

কালনা শহরের জল-যন্ত্রণার ছবি বহু পুরনো। শহরের বহু গলিতেই হাঁটু জল জমে যেত অল্প বৃষ্টিতে। দূরের বেহুলা নদীতে মেশার আগে কাঁচা নালা দিয়ে যাওয়া সেই নোংরা জল উপচে বিঘের পর বিঘে জমির ফসলেরও ক্ষতি করত। সম্প্রতি সমস্যা সমাধানে প্রায় দেড় কোটি টাকা খরচ করে গভীর পাকা নালা তৈরি করে কালনা পুরসভা। ৬ ফুট গভীর, দেড় কিলোমিটার লম্বা এই নালায় শহরের বড় অংশের নিকাশির জল আটকে সেচের সমস্যা মিটছে কালনা ১ ব্লকের চার গ্রামের। কৃষি দফতরের যদিও দাবি, সেচের জন্য দূষণমুক্ত জল ব্যবহার করা উচিত।

শহর ছাড়িয়ে কিছুটা এগোলেই রয়েছে রামেশ্বরপুর, ওমরপুর, কোলডাঙা এবং মিরপুর গ্রামের ৫০০ বিঘার বেশি জমি। এই চার গ্রামের চাষিদের বিকল্প সেচ ব্যবস্থা হিসাবে গড়ে তোলা হয়েছিল গভীর নলকূপ। কিন্তু বর্তমানে তা অকেজো। অথচ মাঠে সারা বছরই আমন ধান, পেঁয়াজ, সর্ষে, পাটের মত নানা ফসল থাকে। চাষিরা জানান, এ বার আমন মরসুম জুড়ে ভাল বৃষ্টি হয়নি। মুশকিল আসান ছিল পুরসভার নালা। দিনরাত এই নালা দিয়ে বয়ে যায় শহরের বাসিন্দাদের ব্যবহার্য জল। চাষিরা আবর্জনা পরিষ্কার করে ছোট ছোট যন্ত্রের মাধ্যেমে সেই জল তুলে ব্যবহার করেন আমনে। চাষিদের দাবি, অন্য বার রবি মরসুমের আগে কিছুটা বৃষ্টি হয়। এ বার তাও নেই। এই পরিস্থিতিতে পেঁয়াজ-সহ নানা আনাজ বাঁচানো হচ্ছে নালা থেকে জল তুলে। বেহুলামুখী নালার শেষ প্রান্তে লকগেটের মাধ্যমে জল আটকে রাখা হচ্ছে। তাতেই মিটছে অজস্র চাষির প্রয়োজন। চিরঞ্জিৎ দাস, বাপ্পা দাস, গৌতম দাসেরা বলেন, ‘‘এ বছর যা পরিস্থিতি তাতে নালাটি না থাকলে ধান বাঁচানো যেত না।’’ তাঁদের দাবি, পাকা নালাটি গভীর হওয়াই বর্ষাতেও এলাকার চাষের জমি ডুবে যাবার ভয় নেই। ফলে লাভ দু’দিকেই।

কালনা পুরসভার দাবি, দীর্ঘদিন ধরে ওই নিকাশি নালাটি তৈরির ভাবনা ছিল। তবে প্রথমে মাঠের উপর দিয়ে নালা তৈরির জন্য চাষিরা জমি দিতে চাইছিলেন না। বছর খানেক আগে তাঁদের বোঝানো সম্ভব হয়। পুরপ্রধান দেবপ্রসাদ বাগ বলেন, ‘‘মাস আটেক আগে চাষিরা জমি দিতে এগিয়ে আসেন। শহর ও গ্রামের মানুষদের উপকারে তৈরি হয়েছে নালাটি।’’ তাঁর দাবি, শহরের নিকাশি ব্যবস্থার উন্নতির জন্য রেল লাইনের পাশ দিয়েও একটি নালা তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে।

জেলার এক সহ কৃষি অধিকর্তা পার্থ ঘোষ বলেন, ‘‘সেচের কাজে নালার জল ব্যবহারের আগে দেখে নিতে হবে সেখানে কোনও প্লাস্টিক বা দূষিত বর্জ্য যাতে না থাকে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Cultivation Irrigation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE