Advertisement
০২ মে ২০২৪
Death

বজ্রাঘাতে বাড়ছে মৃত্যু, উদ্বেগও

শনিবার বাজ পড়ে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে মন্তেশ্বরে। পুলিশ জানায়, মৃত  সুবল ঘোষের (৫১) বাড়ি মরাইপিড়ি গ্রামে। দুপুরে তিনি মাঠে ধান কাটছিলেন। বাজ পড়লে আহত হন তিনি।

lightening.

বৃহস্পতি এবং শুক্রবার পূর্ব বর্ধমানে বাজ পড়ে মৃত্যু হয়েছে সাত জনের। প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান ও মন্তেশ্বর শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৩ ১০:০৫
Share: Save:

ঝড়-বৃষ্টির সময় বারবার মাঠে বা খোলা আকাশের নীচে না থাকার আবেদন জানায় প্রশাসন। এ নিয়ে প্রচারও চলে নিরন্তর। কিন্তু সেই প্রচারে কাজ যে বিশেষ হয় না, ফের সেই ইঙ্গিত দিল গত দু’দিনের দুর্যোগ। প্রশাসন সূত্রে খবর, বৃহস্পতি এবং শুক্রবার পূর্ব বর্ধমানে বাজ পড়ে মৃত্যু হয়েছে সাত জনের। আহত হয়েছেন তিন জন। মৃতদের মধ্যে রয়েছে মঙ্গলকোটের ১২ বছরের এক বালকও। বাজ পড়ে মৃত্যুর বেশির ভাগ ঘটনাই ঘটেছে মাঠে বা ফাঁকা জায়গায়।

শনিবার বাজ পড়ে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে মন্তেশ্বরে। পুলিশ জানায়, মৃত সুবল ঘোষের (৫১) বাড়ি মরাইপিড়ি গ্রামে। দুপুরে তিনি মাঠে ধান কাটছিলেন। বাজ পড়লে আহত হন তিনি। মন্তেশ্বর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে জানান।

গত দু’দিনে ভাতার এবং মঙ্গলকোটের দু’জন করে মোট চার জনের মৃত্যু হয়েছে বজ্রাঘাতে। বাকি তিন জন কালনা মন্তেশ্বর ও খণ্ডঘোষের বাসিন্দা। এই প্রেক্ষিতে ফের সচেতনতা প্রচারে জোর দিচ্ছে প্রশাসন। জেলা বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা দফতরের আধিকারিক প্রতীক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আগামী ২ মে মুখ্যসচিব এই সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে ভিডিয়ো কনফারেন্স করবেন। যে সব নির্দেশ আসবে, সেগুলি ব্লক স্তরে প্রচার করা হবে।’’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘বাজ পড়ে মৃত্যুর বেশির ভাগ ঘটনাই ঘটেছে ফাঁকা মাঠে। কৃষিকাজ করার সময় বজ্রাঘাতে মৃত্যু হয়েছে কয়েক জনের। সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য প্রচার শুরু করেছে জেলা প্রশাসন।’’ তাঁর দাবি, প্রত্যেক ব্লকে ব্যানার টাঙিয়ে এবং মাইকে প্রচার চালানো হচ্ছে। আবহাওয়া খারাপ থাকার পূর্বাভাস মিললে, ফাঁকা স্থান পরিত্যাগ করা, খোলা আকাশের নীচে না থাকা, নিরাপদ আশ্রয়ে বা বাড়ির ভিতরে চলে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

জেলা বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের রিপোর্ট বলছে, পূর্ব বর্ধমানে বজ্রাঘাতে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে। গত বছরের এপ্রিল থেকে অগস্টের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত জেলায় বাজ পড়ে মৃত্যু হয়েছিল ২৪ জনের। ওই সময়কালে বাঁকুড়ায় ১৩, বীরভূমে ১৫ জন, হুগলিতে ছয়, হাওড়ায় চার, মুর্শিদাবাদে ১১, নদিয়ায় আট, উত্তর ২৪ পরগনায় সাত, পশ্চিম মেদিনীপুরে আট, পূর্ব মেদিনীপুরে সাত, পুরুলিয়ায় ১৮, আলিপুরদুয়ারে এক এবং কোচবিহারে ন’জনের মৃত্যু হয়েছিল বজ্রাঘাতে। ২০২১-র তথ্য অনুযায়ী, পূর্ব বর্ধমানে বাজ পড়ে ৪৯ জনের মৃত্যু হয়েছিল।

বজ্রপাতের ঘটনা বাড়ার কারণ কী? বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক শ্রীমন্ত গুপ্তের মতে, ‘‘পরিবেশ দূষণের কারণে বাতাসে ভাসমান ধূলিকণার পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই ভাসমান ধূলিকণা অনেক সময় দাহ্যবস্তুতে পরিণত হয়। বজ্রপাতের সময় ওই সব দাহ্যবস্তুর কারণে বিকিরণ বেশি হয়। সে কারণেই প্রচুর মানুষ বজ্রপাতে মারা যাচ্ছেন। সচেতন হতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Death Lightening
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE