ডিপিএল। নিজস্ব চিত্র
রাজ্য দুর্গাপুরে নতুন আটশো মেগাওয়াটের একটি বিদ্যুৎ ইউনিট তৈরি করতে চলেছে। সপ্তম বেঙ্গল গ্লোবাল বিজ়নেস সামিটে (বিজিবিএস) মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দফতরের সচিব ও তথা রাজ্য বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমের সিএমডি পিবি সেলিম এই কথা জানিয়েছেন। তবে, এর পরেই বিরোধীদের প্রশ্ন, পুরনো কারখানা বন্ধ হওয়া এবং নতুন শিল্প গড়ে না ওঠার ফলে শিল্পে বিদ্যুতের চাহিদাই কমে গিয়েছে। সেখানে নতুন ইউনিট গড়ে কী হবে। সেই বিদ্যুৎ কিনবে কে।
দুর্গাপুরে রাজ্যের একটিই বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, দুর্গাপুর প্রজেক্টস লিমিটেড (ডিপিএল) রয়েছে। সুতরাং নতুন ইউনিটটি ডিপিএলেই হবে বলে সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি। যদিও, ডিপিএলের জনসংযোগ আধিকারিক স্বাগতা মিত্রের বক্তব্য, “ডিপিএলে নতুন ইউনিট গড়ার বিষয়ে চিন্তাভাবনা চলছে বলে আগে শুনেছিলাম। তবে নিশ্চিত করে এ বিষয়ে কিছু জানা নেই।” নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডিপিএলের এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, পুরনো ইউনিটগুলি ‘স্ক্র্যাপ’ করে বিক্রি করে দেওয়ার পরে ভিতরে অনেক জায়গা ফাঁকা হয়েছে। সেখানেই নতুন ইউনিট গড়া হবে বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে।
১৯৬০-এ তৈরি ডিপিএলে বর্তমানে দু’টি ইউনিট চালু আছে। ২০১৯-এর ১ জানুয়ারি থেকে ডিপিএলের মালিকানা চলে গিয়েছে রাজ্য বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমের হাতে। একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্য সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিমাণ বাড়াতে চাইছে। তাই নতুন ইউনিট তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। সেলিম জানিয়েছেন, বক্রেশ্বরে ৬৬০ মেগাওয়াট, সাঁওতালডিহিতে ৮০০ মেগাওয়াটের দু’টি এবং দুর্গাপুরে ৬০০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎকেন্দ্র গড়া হবে। সেগুলিতে মোট ২০-২৫ হাজার কোটি টাকা লগ্নির সম্ভাবনা রয়েছে।
কিন্তু বিরোধীদের দাবি, এমনিতেই বিদ্যুৎ মাসুলের হার কম হওয়ায় শিল্প সংস্থাগুলি ডিভিসির থেকে বিদ্যুৎ কিনতে বেশি আগ্রহী। ডিভিসি ইতিমধ্যেই ডিটিপিএসে আটশো মেগাওয়াটের নতুন ইউনিট গড়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। বিরোধীদের অভিযোগ, দুর্গাপুরে গত কয়েক বছরে বহু কারখানা বন্ধ হয়েছে। যেগুলি চালু রয়েছে, সেগুলিতে উৎপাদনের পরিমাণ অনেকটাই কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে, শিল্পে দিন দিন বিদ্যুতের চাহিদা কমছে। প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক বিপ্রেন্দু চক্রবর্তী বলেন, “গত কয়েক বছরে পর পর কারখানা বন্ধ হওয়ায় ধুঁকছে শহর। নতুন শিল্প আনার ক্ষমতা নেই। নজর ঘোরাতে নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্র গড়ার কথা বলা হচ্ছে।” বিজেপির বর্ধমান সদর জেলার সহ-সভাপতি চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, “সামনে লোকসভা ভোট। পুরভোটও হয়নি। তাই এখন নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরির কথা বলা হচ্ছে। কখনই তা বাস্তবায়িত হবে না। তা ছাড়া, শিল্প নেই। বিদ্যুৎ নিয়ে হবেটা কী? কিনবে কে?”
বিরোধীদের বক্তব্যে আমল দিচ্ছেন না দুর্গাপুরের তৃণমূল নেতা তথা পুর-প্রশাসকমণ্ডলীর ভাইস চেয়ারম্যান অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, “রাজ্য সরকার সুসংহত পরিকল্পনা নিয়ে উন্নয়ন করছে। শিল্প নিয়ে বিরোধীদের মিথ্যাচার বিজিবিএস-এ ধূলিসাৎ হয়ে গিয়েছে। তাই বিরোধীরা কী বলবেন বুঝে উঠতে পারছেন না!”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy