Advertisement
০৩ মে ২০২৪

স্ট্রেচার ঠেলতে হচ্ছে, ক্ষুব্ধ রোগীর পরিজন

সম্প্রতি ওই হাসপাতালে গিয়ে এমনই কিছু ছবি দেখা গিয়েছে। আসানসোলের রাসডাঙা এলাকার সঞ্জয় মণ্ডল তাঁর অসুস্থ বৃদ্ধা মা’কে নিয়ে এসেছিলেন হাসপাতালে। আপৎকালীন বিভাগে বৃদ্ধার স্বাস্থ্যপরীক্ষা হওয়ার পরে চিকিৎসকেরা তাঁকে ভর্তি করানোর পরামর্শ দেন।

আসানসোল জেলা হাসপাতালে। নিজস্ব চিত্র

আসানসোল জেলা হাসপাতালে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০১৮ ০১:১৬
Share: Save:

দশ টাকা দিলেই মেলে স্ট্রেচার। কিন্তু যাঁরা সেই টাকা নেন বলে অভিযোগ, সেই কর্মীরা টাকা নিয়েই বেপাত্তা। এই পরিস্থিতিতে রোগীকে নিয়ে স্ট্রেচার বা হুইলচেয়ার ঠেলতে হয় পরিজনদেরই। এমনই অভিযোগ উঠেছে আসানসোল জেলা হাসপাতালে।

সম্প্রতি ওই হাসপাতালে গিয়ে এমনই কিছু ছবি দেখা গিয়েছে। আসানসোলের রাসডাঙা এলাকার সঞ্জয় মণ্ডল তাঁর অসুস্থ বৃদ্ধা মা’কে নিয়ে এসেছিলেন হাসপাতালে। আপৎকালীন বিভাগে বৃদ্ধার স্বাস্থ্যপরীক্ষা হওয়ার পরে চিকিৎসকেরা তাঁকে ভর্তি করানোর পরামর্শ দেন। কিন্তু মা’কে স্ট্রেচারে চাপিয়ে প্রায় তিরিশ মিটার দূরের সুপার স্পেশ্যালিটিতে নিয়ে যাওয়ার জন্য তিনি কোনও কর্মীর দেখা পাননি বলেই অভিযোগ। সঞ্জয়বাবুর কথায়, ‘‘যাকেই অনুরোধ করেছি, যাবেন না বলেছেন। তাই আমিই স্ট্রেচার ঠেললাম।’’ একই অভিজ্ঞতা জামুড়িয়ার শিবপুর এলাকার ইটভাটার এক মহিলাকর্মীর সহকর্মীদেরও।

সম্প্রতি জেলা হাসপাতালের মাল্টি সুপার স্পেশ্যালিটি বিভাগে চিকিৎসাধীন সাকিলা খাতুনের এক্স-রে করানোর জন্য প্রায় একশো মিটার দূরে পুরনো হাসপাতাল ভবনে যেতে হত। কিন্তু তাতে কারও সাহায্য পাননি বলে অভিযোগ আফসানা খাতুন নামে সাকিলার এক আত্মীয়ার।

রোগীর পরিজনদের অভিযোগ, এমন একটা-দু’টো ঘটনা নয়। এটা হাসপাতালের রোজের কপি। কখনও ইমার্জেন্সি থেকে হাসপাতালের ওয়ার্ড, আবার কখনও ওয়ার্ড থেকে অন্য কোনও দফতরে যাতায়াতের জন্য এমন ভোগান্তির মুখে পড়তে হচ্ছে। তেমনই এক আত্মীয়ের অভিজ্ঞতা, ‘‘ট্রলির জন্য দশ টাকা দিলাম এক কর্মীকে। কিন্তু ট্রলিটা একটু ঠেলে দেওয়ার জন্য বলতেই তিনি কেটে পড়লেন।’’ পুরনো হাসপাতাল ভবনের সামনে বৃদ্ধ স্বামীকে হুইলচেয়ারে বসিয়ে রেখে হাঁপাচ্ছিলেন কলাবতী দেবী। তিনি বলেন, ‘‘চেয়ারটা কোনও রকমে জোগাড় করেছি। কিন্তু তা ঠেলার মতো কাউকেই পেলাম না।’’

বিষয়টি নিয়ে হাসপাতালের সুপার নিখিলচন্দ্র দাস বলেন, ‘‘চতুর্থ শ্রেণির কর্মীরাই এই কাজটি করেন। কিন্তু কর্মী সংখ্যা এত কম যে, সবসময় ট্রলি, স্ট্রেচার, হুইলচেয়ার ঠেলার লোক মেলে না। তবুও আমরা রোগীদের ট্রলি বা হুইলচেয়ার ঠেলার জন্য লোক দেওয়ার চেষ্টা করি। তবে ট্রলি বা হুইলচেয়ার ঠেলার জন্য কর্মীদের টাকা চাওয়ার অভিযোগ কখনও পাইনি।’’

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, অন্তত ১৫০ জন চতুর্থ শ্রেণীর কর্মী প্রয়োজন। সেই জায়গায় রয়েছেন মাত্র ৩০ জন। নিখিলবাবু জানান, নতুন জেলা ও মাল্টি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে হওয়ায় রোগীদের ভিড় অনেক বেড়েছে। অনেক বেশি পরিষেবা দিতে হচ্ছে। তাই কর্মী সংখ্যাও বাড়ানো উচিত। তিনি জানান, গুরুতর অসুস্থ রোগীদের ইমার্জেন্সি থেকে ওয়ার্ডে বা অন্য কোনও বিভাগে নিয়ে যাওয়ার জন্য দু’টি ব্যাটারিচালিত গাড়ি আনার তোড়জোড় শুরু হয়েছে। ব্যবস্থা হচ্ছে ইমার্জেন্সি থেকে মাল্টি সুপার স্পেশ্যালিটি বিভাগ পর্যন্ত যাওয়ারও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Stretcher Patient Hospital
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE