আদালতের পথে অভিযুক্ত কনস্টেবল। নিজস্ব চিত্র
সিভিক ভলান্টিয়ার ‘করে দেওয়ার’ নাম করে টাকা হাতানো হয়েছে। এই অভিযোগে বৃহস্পতিবার সকালে বর্ধমান থানার কেশবগঞ্জ ফাঁড়ির ‘কনস্টেবল’ হরেন্দ্র পাণ্ডে ও তাঁর সঙ্গী শহরের শ্রীপল্লির বাসিন্দা গোপাল সিংহকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। জেলা পুলিশ জানায়, ৫১ বছরের ওই পুলিশকর্মীকে এ দিনই ‘সাসপেন্ড’ করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, দেওয়ানদিঘি থানার জিয়ারা গ্রামের অমর হাজরা বুধবার বিকেলে বর্ধমান থানায় ওই দু’জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। অভিযোগে জানান, সিভিক ভলান্টিয়ার করে দেওয়ার নাম করে ওই দু’জন তিন দফায় তাঁর কাছ থেকে ৭০ হাজার টাকা নিয়েছেন। অমরবাবু জানান, তাঁকে এ-ও জানানো হয়, প্রথমে বর্ধমান শহরে, পরে কলকাতায় বিশেষ প্রশিক্ষণ হবে এবং তার পরে কাজে যোগ দেওয়ানো হবে। তদন্তকারীরা জানান, অমর হাজরার কাছ থেকে জাল নিয়োগপত্র উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশের দাবি, জেরায় ধৃত দু’জনেই তাদের কাছে ঘটনার কথা স্বীকার করেছেন। জেরায় জানা গিয়েছে, কেশবগঞ্জের ওই পুলিশকর্মীই চাকরির আশ্বাস দিয়েছিলেন। ওই কনস্টেবলের হয়েই বাকি ‘কাজ’ সেরেছিলেন শ্রীপল্লির ওই বাসিন্দা, জানায় পুলিশ।
তদন্তকারীদের দাবি, গত বার পুজোর সময়ে বর্ধমানের রাস্তায় ‘প্রথম প্রশিক্ষণ’ও হয়েছিল অভিযোগকারীর। অভিযোগকারীর সূত্রে পুলিশ জানতে পেরেছে, তার পরে অভিযুক্তেরা বারবার কলকাতায় প্রশিক্ষণ দেওয়ার আশ্বাস দিচ্ছিলেন। অমরবাবু জানান, বেশ কয়েক দিন ধরে অভিযুক্তদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারা যাচ্ছিল না। এর পরেই তিনি বুধবার দুপুরে আসেন পুলিশলাইনে। সেখানে গিয়ে তিনি পুলিশ আধিকারিকদের বিষয়টি জানান। পুলিশ সূত্রে খবর, নিয়োগপত্র দেখিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমাকে সিভিক ভলান্টিয়ার হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে। গত বার পুজোর সময়ে বর্ধমানের রাস্তায় প্রশিক্ষণ নিয়েছি। কলকাতায় বিশেষ প্রশিক্ষণ হলেই আমি কাজে যোগ দিতে পারব।’’
এর পরেই বিষয়টি নিয়ে খবর যায় জেলা পুলিশের কর্তাদের কাছে। তাঁকে বোঝানো হয়, তিনি ‘ভুল খপ্পরে’ পড়েছেন। এ ভাবে টাকার বিনিময়ে কাজ পাওয়া যায় না। এর পরেই অমরবাবু বর্ধমান থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, গত পঞ্চায়েত ভোটে জিয়ারায় ‘ডিউটি’ করতে যান হরেন্দ্রবাবু। সেখানেই তাঁর সঙ্গে অমরবাবুর আলাপ হয়। কথা প্রসঙ্গে সিভিক ভলান্টিয়ারের নিয়োগের বিষয় উঠলে অভিযুক্ত পুলিশকর্মী জানান, এ বিষয়ে তাঁর ‘হাত’ রয়েছে। তার পরে সেই ‘নিয়োগের’ জন্য পুলিশকর্মীর হয়ে টাকা নিয়েছিলেন গোপাল। ধৃতদের এ দিন আদালতে তোলা হলে তাঁদের তিন দিন পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy