আসানসোলে একটি কেকের দোকানে। নিজস্ব চিত্র।
রাত পোহালেই বড়দিন। ২৫ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়ে ইংরেজি নববর্ষ পর্যন্ত থাকে উৎসবের মেজাজ। সঙ্গে চলে কেক, পেস্ট্রি, চকোলেট খাওয়া। তবে এ বার করোনার কারণে অনেকটাই ফিকে হয়েছে উৎসবও। এর প্রভাবও পড়েছে কেক, পেস্ট্রির বাজারেও। কেক প্রস্তুতকারক থেকে পাইকার ও খুচরো বিক্রেতা —প্রত্যেকের অভিমত, বিক্রি শুরু হয়েছে ঠিকই, কিন্তু অন্য বারের তুলনায় বেশ কম। তবে শেষ বেলায় বাজার উঠবে বলেই আশাবাদী তাঁরা।
আসানসোল, দুর্গাপুরের কেক প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলির কর্ণধারেরা জানালেন, ময়দা, চিনি ও ডিম এই তিনটি উপকরণ স্থানীয় বাজারে মেলে। এ ছাড়া, আরও অনেক উপকরণ ভিন্ রাজ্য থেকে আমদানি করতে হয়। যেমন, আইসিং সুগার, চকোলেট, কেক জেল, মার্জারিন-সহ আরও কিছু উপকরণ আসে বেঙ্গালুরু, হায়দরাবাদ, মুম্বই ও হরিদ্বার থেকে। দুর্গাপুরের একটি কেক প্রস্তুতকারী সংস্থার কর্ণধার শেখ আবু জাফর জানালেন, এ বার আমদানিকৃত এ সব সামগ্রী পেতে একটু সমস্যা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘করোনার জেরে গত আট মাস বাজার বসে গিয়েছে। অক্টোবর থেকে বাজার উঠছে। ফলে, কাঁচামালের দাম বেড়েছে।’’ তবুও তাঁরা দাম না বাড়িয়ে ভাল মানের কেক প্রস্তুত করছেন বলে দাবি। সাধারণত এ সময়ে কেক, পেস্ট্রির বাজার তুঙ্গে ওঠে। কিন্তু এ বার ততটা ভাল নয় বলে জানিয়েছেন আসানসোলের একটি সংস্থার কর্ণধার সৈবুল হক। তিনি বলেন, ‘‘এর মূল কারণই হল করোনা-অতিমারি। আশা করি, শেষবেলায় বাজার উঠবে।’’
কী বলছেন কেকের কাঁচামালের কারবারিরা? দেবাশিস দাস নামে এক কারবারি জানালেন, এখনও সে ভাবে দূরপাল্লার ট্রেন চলাচল করছে না। পরিবহণ সংস্থাগুলি ভাড়া বাড়িয়ে দিয়েছে। তাই জোগানে টান পড়েছে। জোগান কম বলে, দামও বেড়েছে।
কেক প্রস্তুতকারী সংস্থার কর্ণধার শেখ আবু জাফর জানালেন, কেকের একটা বড় অংশের ক্রেতা হল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পড়ুয়ারা। কিন্তু স্কুল-কলেজ এখনও বন্ধ থাকায় সেই সুযোগ হাতছাড়া হয়েছে। উৎসব পালনে ধর্মীয়স্থানেও ভিড় নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। এ সব নানা কারণে কেকের বিক্রি কমেছে। এই পরিস্থিতিতে অনলাইনে কেকে বিক্রির ব্যবস্থা করেছেন অনেকে। আবু জাফর বলেন, ‘‘একাধিক অনলাইন মার্কেটিং সংস্থার সঙ্গে গাঁটছাড়া বেঁধে আমরা ঘরে ঘরে কেক পাঠাচ্ছি।’’ তবে গত বারের তুলনায় এ বার এখনও কেকের বাজার না ওঠায় কপালে ভাঁজ বাজারের খুচরো বিক্রেতাদের। এমনই একজন বিক্রেতা নবীন কর জানান, কেকের দাম এ বার বাড়েনি। ন্যূনতম ৮০ টাকা ও সর্বোচ্চ সাড়ে ৩৫০ টাকা দরে এক পাউন্ডের কেক মিলছে। কিন্তু ক্রেতার দেখা সে ভাবে মিলছে না। আসানসোলের বাসিন্দা অরিত্র ভৌমিক বলেন, ‘‘করোনার প্রভাবে রোজগারে টান পড়েছে। উৎসব করব কী করে!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy