Advertisement
১৯ মে ২০২৪

রক্ত-সঙ্কট মেটাতে প্রস্তুতি শুরু

রাজ্যে রক্ত সঙ্কট মেটাতে সম্প্রতি নদিয়ার কৃষ্ণনগরে প্রশাসনিক সভা থেকে পুলিশকেও মাঠে নামার নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রশাসন সূত্রে খবর, তাঁর নির্দেশেই ২০ থেকে ২৬ মে রাজ্যের প্রতিটি থানায় একটি করে রক্তদান শিবির হবে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০১৭ ১৩:১৫
Share: Save:

রাজ্যে রক্ত সঙ্কট মেটাতে সম্প্রতি নদিয়ার কৃষ্ণনগরে প্রশাসনিক সভা থেকে পুলিশকেও মাঠে নামার নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রশাসন সূত্রে খবর, তাঁর নির্দেশেই ২০ থেকে ২৬ মে রাজ্যের প্রতিটি থানায় একটি করে রক্তদান শিবির হবে। তারপরে ৭ জুন পর্যন্ত পুরসভাগুলি শিবিরের আয়োজন করবে। তবে সংগৃহিত রক্ত যাতে কোনও ভাবেই ফেলে দিতে না হয়, সে বিষয়ে বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পূর্ব বর্ধমানের জেলা প্রশাসনের কর্তারা।

মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মেনে রক্তদান শিবিরগুলি কী ভাবে আয়োজন করা হবে, তা ঠিক করতে গত শুক্রবার বর্ধমানের বৈঠকে যোগ দেন প্রশাসন, স্বাস্থ্য দফতর ও পুলিশের কর্তারা। সূত্রের খবর, সেখানেই জানানো হয়, বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, কাটোয়া ও কালনা মহকুমা হাসপাতাল-সহ গোটা জেলায় প্রায় পাঁচ হাজার ইউনিট রক্ত মজুত করার ব্যবস্থা রয়েছে।

তবে রক্ত যাতে নষ্ট না হয় সে বিষয়টি নজর দেওয়ার কথা জানিয়েছেন কর্তারা। বৈঠকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার উৎপল দাঁ ও ডেপুটি সুপার অমিতাভ সাহা বলেন, “রক্ত যাতে নষ্ট না হয়, সে দিকটা আমাদের দেখতে হবে।” কারণ, স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের মতে, ৩৫ দিন পেরিয়ে গেলে রক্ত ফেলে দেওয়া ছাড়া উপায় থাকবে না। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রক্তের উপাদান পৃথীকরণের ব্যবস্থা রয়েছে। সেখানে গড়ে ৪৭ শতাংশ রক্ত পৃথকীকরণ করা যায়। কিন্তু সংগৃহিত অনুচক্রিকা ঠিক থাকে মাত্র পাঁচ দিন। গত বছর জেলায় ১৭ হাজার ইউনিট রক্তের প্রয়োজন হয়েছিল। গোটা বিষয়টিতে যাতে ভারসাম্য থাকে, তার জন্য সরকারি স্তর ছাড়া ১৮ মে থেকে ১০ জুন পর্যন্ত জেলায় আর কোনও ক্ষেত্রে শিবির আয়োজন করা যাবে না বলে জানিয়েছেন জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব। তিনি আরও বলেন, ‘‘স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বা অন্য কোনও স্তরে শিবির আয়োজনের জন্য যাঁরা অনুমোদন নিয়েছিলেন, তাঁদেরকেও শিবির পিছিয়ে দিতে বলা হয়েছে।”

রক্তের ঘাটতি যাতে না হয়, তার জন্য রাজ্যের অতিরিক্ত স্বাস্থ্য সচিব সৌমিত্র মোহন রক্তদানের ‘বার্ষিক ক্যালেন্ডার’ তৈরির নির্দেশ দিয়েছিলেন। প্রশাসন সূত্রের খবর, প্রতিটি ব্লাড ব্যাঙ্ককে এক সপ্তাহের মধ্যে ‘বার্ষিক ক্যালেন্ডার’ তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসকও।

কী ভাবে হবে শিবিরগুলি? ঠিক হয়েছে, আপাতত শিবিরগুলি হবে সন্ধে ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত। একই দিনে দু’টি শিবির থাকলে সকাল ৮টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত তা চলবে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত প্রশস্ত ঘরে রক্তদান শিবিরগুলি করতে হবে। কিন্তু শুক্রবারের বৈঠকে ঠিক হয়েছে, ফাঁড়ি বা থানায় এমন প্রশস্ত ঘর পাওয়া কঠিন। তাই ব্লক অফিসে শিবিরগুলি করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তা-ও না সম্ভব হলে যথেষ্ট সংখ্যায় ফ্যান ও কুলারের ব্যবস্থা করা হবে। পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল বলন, “প্রতিটি থানা ও ফাঁড়িকে শিবিরে ৫০ জন করে রক্তদান করবেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Blood Crisis
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE