Advertisement
১৬ মে ২০২৪
factory

factory: দু’বছর ধরে মেলেনি জমি, থমকে প্রকল্প

এডিডিএ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই বেসরকারি কারখানার পাশের জমিতে শিল্প স্থাপনের জন্য ২০০১-এ একটি সংস্থা প্রস্তাব জমা দেয়।

কারখানা লাগোয়া এই জমি ব্যবহার করার জন্য বিভিন্ন দফতরে আবেদন করা হয়েছে, দাবি কর্তৃপক্ষের।

কারখানা লাগোয়া এই জমি ব্যবহার করার জন্য বিভিন্ন দফতরে আবেদন করা হয়েছে, দাবি কর্তৃপক্ষের। নিজস্ব চিত্র।

সুব্রত সীট
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০২১ ০৮:২২
Share: Save:

জমি চেয়েও মেলেনি। তাই দু’বছর ধরে বেসরকারি ইস্পাত কারখানার সম্প্রসারণ প্রকল্প থমকে রয়েছে। এমনই অভিযোগ উঠেছে দুর্গাপুরে। বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন বিরোধীরা। দ্রুত সমস্যা মেটানোর আশ্বাস দিয়েছে আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ (এডিডিএ)।

দুর্গাপুরের কাঞ্জিলাল অ্যাভিনিউয়ে রয়েছে একটি বেসরকারি ইস্পাত কারখানা। কর্তৃপক্ষের দাবি, ১৩৮ কোটি টাকা ব্যয়ে কারখানার সম্প্রসারণ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু প্রয়োজনীয় জমি না মেলায়, দু’বছর ধরে কাজ থমকে রয়েছে। এর ফলে, তাঁদের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। কারখানা সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রসারণ প্রকল্পের জন্য মোট পাঁচ একর জমি দরকার। এক একর জমি কারখানার বর্তমান সীমানার মধ্যেই রয়েছে। সে জমিতে সম্প্রসারণ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। দরকার, আরও চার একর জমি। কারখানার পাশেই একটি জমি দীর্ঘদিন ধরে ফাঁকা পড়ে রয়েছে। সেখান থেকে চার একর জমি পেলে প্রয়োজন মেটে। এডিডিএ-কে চিঠি এবং প্রকল্পের রূপরেখা জমা দিয়ে সেই আবেদন জানানো হয়েছে ২০১৯-এ। কিন্তু এ পর্যন্ত জমি পাওয়ার বিষয়ে কোনও ইতিবাচক ইঙ্গিত মেলেনি বলে অভিযোগ কারখানা কর্তৃপক্ষের।

কারখানার আধিকারিক সুদীপ্ত ভট্টাচার্যের অভিযোগ, “সম্প্রসারণের কাজ শুরু করতে যত দেরি হচ্ছে, তত বাড়ছে নির্মাণ খরচ। করোনা-পরিস্থিতিতে অতিরিক্ত ‘প্রজেক্ট কস্ট’ সামাল দেওয়া রীতিমতো চ্যালেঞ্জের হয়ে দাঁড়াচ্ছে।” নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অন্য এক আধিকারিক বলেন, “বর্তমান বাজার দরে জমি কিনে সম্প্রসারণের কাজ করতে চাই আমরা। কিন্তু দিনের পর দিন তা পিছিয়ে গেলে, এক সময় হাত গুটিয়ে নেওয়া ছাড়া কিছু করার থাকবে না।”
এই পরিস্থিতিতে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপান-উতোরও। বিজেপির অভিযোগ, দুর্গাপুরে গত কয়েক বছরে নতুন কোনও কারখানা সে ভাবে গড়ে ওঠেনি। বরং, বেশ কিছু কারখানায় উৎপাদন বন্ধ হয়ে গিয়েছে বা সঙ্কুচিত হয়েছে। সরকারি ক্ষেত্রে ডিপিএলের কোকআভেন ইউনিট বন্ধ হয়ে গিয়েছে। দুর্গাপুর কেমিক্যালস কারখানার বিলগ্নিকরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। ফলে, শিল্প-কারখানায় কাজের সুযোগ কমছে। এই পরিস্থিতিতে এই বেসরকারি কারখানার সম্প্রসারণ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে, কিছু কর্মসংস্থান হত। দলের আসানসোল জেলা সভাপতি তথা দুর্গাপুর পশ্চিমের বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোড়ুইয়ের অভিযোগ, “বহু দিন ধরেই রাজ্যে শিল্পের করুণ দশা। তৃণমূল রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পরে, সব শেষ হয়ে গিয়েছে। শিল্প গড়ার নামে কোটি-কোটি টাকা খরচ করে শুধু শিল্প সম্মেলন হচ্ছে। সেখানে কারখানার সম্প্রসারণ করতে চেয়েও জমি পাচ্ছেন না কর্তৃপক্ষ।” পাল্টা তৃণমূলের দুর্গাপুরের আহ্বায়ক মৃগেন্দ্রনাথ পাল বলেন, “রাজ্য সরকার শিল্প স্থাপনে সব সময় সচেষ্ট। পানাগড় শিল্পতালুকের প্রায় সব জমি বিলি হয়ে গিয়েছে। বিজেপির অপপ্রচারে তাই কারও কিছু আসে যায় না।”

এডিডিএ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই বেসরকারি কারখানার পাশের জমিতে শিল্প স্থাপনের জন্য ২০০১-এ একটি সংস্থা প্রস্তাব জমা দেয়। নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ (‌টোকেন মানি) জমা দিয়ে জায়গাটি আটকে রাখে সংস্থাটি। পরে, সেই সংস্থা আর সেখানে কারখানা গড়েনি। কিন্তু জমিটিও ছেড়ে দেয়নি। তাই এই সমস্যা তৈরি হয়েছে। যদিও বিষয়টি নিয়ে এডিডিএ-র চেয়ারম্যান তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “যে সংস্থা কারখানা গড়ার জন্য জমি নিয়ে আটকে রেখেছে, সেই সংস্থাকে ইতিমধ্যেই চিঠি দিয়ে বক্তব্য জানতে চাওয়া হয়েছে। জবাব পেলে, পরবর্তী পদক্ষেপ করবে এডিডিএ।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

factory
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE