আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতে নিয়ে আসা হল অনুব্রত মণ্ডলকে। ছবি: পাপন চৌধুরী
ফের ‘জয় বাংলা’ ও ‘গরু চোর’। বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে লক্ষ করে এমন স্লোগানই উড়ে এল বুধবার। এ দিন অনুব্রতকে কলকাতা থেকে আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতে আনা হয়।
এর আগে অনুব্রতকে দু’বার আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতে তোলা হয়েছিল। দু’বারই নানা উত্তেজনার পরিস্থিতি তৈরি হয়। সে মতো, এ দিন সকাল থেকেই পুলিশ-প্রশাসন আঁটোসাঁটো নিরাপত্তার ব্যবস্থা রাখে। তবে, এ দিন বৃষ্টি পড়ছিল আসানসোলে।
এ দিন পথে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের পাশে, শক্তিগড়ের আমড়ার একটি ধাবায় প্রাতরাশের জন্য নিয়ে আসা হয় অনুব্রতকে। অনুব্রতকে দেখতে বহু মানুষ ধাবার সামনে ভিড় জমান। পথচারী এবং বিভিন্ন গাড়ির চালক, যাত্রীরাও দাঁড়িয়ে পড়েন। প্রায় আধ ঘণ্টা পরে, ধাবা থেকে সিআরপি জওয়ান ও সিবিআই আধিকারিকদের ঘেরাটোপে বেরিয়ে আসেন অনুব্রত। তাঁকে দেখতে পেয়েই জটলা থেকে কয়েক জন ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেন। প্রত্যুত্তরে হাতও নাড়তে দেখা যায় অনুব্রতকে। তবে স্থানীয় বর্ধমান উত্তরের তৃণমূল বিধায়ক নিশীথ মালিক বলেন, “কেউ অতি উৎসাহে স্লোগান দিয়ে থাকতে পারেন। আমরা তাঁদের চিনি না, জানিও না। দলীয় কোনওকর্মসূচি ছিল না।”
এর পরে দুপুর পৌনে ১টা নাগাদ অনুব্রতকে আসানসোল আদালত চত্বরে আনা হয়। ঘটনাচক্রে, এ দিনই আদালত লাগোয়া মহকুমাশাসকের কার্যালয়ে আসানসোল পুরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের উপনির্বাচনের ফল ঘোষণা ছিল। এই পরিস্থিতিতে এ দিন সকাল সাড়ে ৮টা থেকেই আদালত চত্বরের দখল নেয় পুলিশ। সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী আদালত চত্বরে আসেন। দেখা যায়, তিনি সোজা জেলা জজের চেম্বারে যান। মিনিট ১৫ সেখানে থাকার পরে, এজলাসে যান বিচারক।
গত দু’দিন আদালত চত্বরে বিরোধী রাজনৈতিক দলের লোকজনকে দেখা গিয়েছিল। কিন্তু এ দিন সে ভাবে বিরোধীদের দেখা যায়নি। তবে বেঙ্গল সৃষ্টি মোড়ের কাছে কংগ্রেস কর্মীদের একাংশকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। অনুব্রতকে নিয়ে সিবিআই কনভয় যাওয়ার সময়ে কংগ্রেস কর্মীদের ‘গরু চোর’ স্লোগান দিতেও শোনা গিয়েছে। কংগ্রেস নেতা প্রসেনজিৎ পুইতন্ডি বলেন, “অনুব্রত মণ্ডল হলেন তৃণমূলের দুর্নীতির অন্যতম মুখ। আমরা সাধারণ মানুষের হয়ে তাঁকে বিক্ষোভ দেখিয়েছি।” আদালত চত্বরে অনুব্রত অনুগামী হিসেবে পরিচিত লোকজনকে অবশ্য দেখা গিয়েছে। সন্ধ্যায় তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সম্পাদক ভি শিবদাসন বলেন, “আইন আইনের পথে চলবে। বাকি এ বিষয়ে যা বলার ঊর্ধ্বতননেতৃত্ব বলবেন।” অনুব্রতকে আসানসোল সংশোধনাগারে পাঠানো হবে, বিচারকের এই নির্দেশের কথা জানাজানি হয় বিকেলে। তার পরে দেখা যায়, সংশোধনাগারের মূল গেটে এবং ঘড়ি মোড় লাগোয়া এলাকায় অনেকেই ভিড় জমিয়েছেন। ভিড়ে একসময় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তবে পুলিশের ব্যারিকেড থাকায় অনুব্রতের যাতায়াতের রাস্তায় সাধারণ মানুষজন প্রবেশ করতে পারেননি।
(তথ্য সহায়তা: জয়ন্ত বিশ্বাসও সুপ্রকাশ চৌধুরী)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy