Advertisement
১৮ জুন ২০২৪

ডিপিএলের ছাইয়ে ভোগান্তি গ্রাম জুড়ে

ডিপিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, কারখানার বর্জ্য ছাই জড়ো হয় কারখানার পিছনে কালীপুর গ্রামের পাশের একটি পুকুরে। ছাই জলে ভিজে যাওয়ায় আর তা বাতাসে ওড়ে না। ডিপিএল সেই ছাই ধাপে ধাপে ঢাকা দেওয়া ডাম্পারে করে বিভিন্ন জায়গায় পাঠিয়ে দেয়।

ছাই উড়ে আসে এখান থেকেই। নিজস্ব চিত্র

ছাই উড়ে আসে এখান থেকেই। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০১৮ ০১:২৭
Share: Save:

‘দুর্গাপুর প্রজেক্টস লিমিটেড’-র (ডিপিএল) ছাই ঢুকছে চোখে। হচ্ছে শ্বাসকষ্টও। — এমনটাই অভিযোগ কারখানা লাগোয়া এলাকার বাসিন্দাদের। তাঁদের অভিযোগ, বিষয়টি বারবার ডিপিএল কর্তৃপক্ষের নজরে আনা হলেও কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি।

ডিপিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, কারখানার বর্জ্য ছাই জড়ো হয় কারখানার পিছনে কালীপুর গ্রামের পাশের একটি পুকুরে। ছাই জলে ভিজে যাওয়ায় আর তা বাতাসে ওড়ে না। ডিপিএল সেই ছাই ধাপে ধাপে ঢাকা দেওয়া ডাম্পারে করে বিভিন্ন জায়গায় পাঠিয়ে দেয়। কিন্তু কালীপুর গ্রামের বাসিন্দাদের অভিযোগ, গ্রীষ্মে প্রতি বছর ছাই ওড়ার সমস্যায় ভুগতে হয় তাঁদের। এ বারেও গত কয়েক দিনে সমস্যা বে়ড়েছে। বাতাসে শুকনো ছাই উড়ছে। আর তা ঢুকছে বাড়িতে। কুয়ো, পুকুরের জলেও মিশছে ছাই। ফলে সেই জল আর ব্যবহার করা যাচ্ছে না। গাছপালা, ঘাসে ছাই জমায় সমস্যায় পড়ছে গবাদি পশুরাও।

বাসিন্দাদের অভিযোগ, গত কয়েক দিন আবার রাতের দিকে মাঝেসাঝে আঢাকা ট্রাক্টরে করে ছাই নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। যাওয়ার সময় ও রাস্তায় পড়ে থাকা ছাই বাতাসে উড়ে সমস্যা আরও বাড়িয়েছে। এ ছাড়া ছাইয়ের গাদা কাটার পরে সেখান থেকেও উড়ছে ছাই। শুক্রবার রাতে তাঁরা দু’টি ট্রাক্টর ও একটি মাটি কাটার যন্ত্র আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেন। যদিও ডিপিএল কর্তৃপক্ষের দাবি, ঢাকা দেওয়া ডাম্পারে করেই গ্রামের বাইরের রাস্তা দিয়ে সাবধানে ছাই নিয়ে যাওয়া হয়। ট্রাক্টর দু’টিতে সম্ভবত চুরি করে ছাই নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল বলেও অভিযোগ। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

বাসিন্দারা জানান, দু’দিন ধরে জোর বাতাস বইছে। ছাই পুকুরে (অ্যাশপন্ড) পর্যাপ্ত জল না থাকায় দিনভর শুকনো ছাই বাতাসে মিশছে। স্থানীয় এক বাসিন্দার ক্ষোভ, ‘‘এক এক সময় ধুলো ঝড়ের মতো হয়ে যাচ্ছে আশপাশ। দিনভর বাড়ির দরজা-জানলা বন্ধ রাখতে হচ্ছে। উঠোনে ছাইয়ের পুরু আস্তরণ পড়ছে।’’ বাইরে বেরোলে চোখে চশমা, নাকে রুমাল দিতে হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, ‘‘এ ভাবে দিনের পর দিন ভুগছি আমরা। কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। বিশেষ করে শিশু ও প্রবীণেরা বেশি সমস্যায় পড়ছেন।’’

মানবদেহে ছাইয়ের কী প্রভাব পড়ে? চিকিৎসকেরা জানান, শ্বাস নেওয়ার সময় ছাই শ্বাসনালী হয়ে ফুসফুসে পৌঁছালে ধীরে ধীরে কমতে থাকে ফুসফুসের কর্মক্ষমতা। ফুসফুসে সংক্রমণ হতে পারে। তা থেকে হাঁপানি বা শ্বাসকষ্ট হয়।

দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ যদিও জানায়, ছাই নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ডিপিএল কর্তৃপক্ষকে। ডিপিএল কর্তৃপক্ষ উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

DPL Air Pollution Kalipur village
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE