প্ল্যাকার্ড হাতে অবরোধে স্কুল ছাত্ররা। নিজস্ব চিত্র।
স্কুল হোক বা উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র, আট-ন’টি গ্রামের বাসিন্দাদের দৈনন্দিন যাতায়াত চলে ওই রাস্তায়। অথচ, মোরাম উঠে পুরো রাস্তা খন্দ, গোড়ালি ডোবা কাদা-জলে ভরে গেলেও কারও হুঁশ নেই বলে অভিযোগ।
প্রশাসনের ‘নজর কাড়তে’ বুধবার মঙ্গলকোটের গোতিষ্ঠা কাগজকলের কাছে গুসকরা-নতুনহাট রাস্তায় অবরোধ শুরু করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে যোগ দেয় শ’দুয়েক ছাত্রছাত্রী। ক্ষোভ দেখান স্বাস্থ্যকর্মীরাও। তাঁদের দাবি, অবিলম্বে ওই পাঁচ কিলোমিটার রাস্তা পাকা করতে হবে।
এ দিন অবরোধের জেরে আটকে পড়ে বহু যাত্রীবাহী বাস, গাড়ি। ভোগান্তি বাড়ে পথচারী, নিত্যযাত্রীদের। গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ে অবরোধকারী এক পড়ুয়া। পরে ঘটনাস্থলে যান মঙ্গলকোটের জয়েন্ট বিডিও ধ্রুবজ্যোতি রায়। পুরো রাস্তা ঘুরে দেখে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গোতিষ্ঠা পঞ্চায়েত এলাকার পশ্চিম গোপালপুর, সুখপুকুরিয়া, বামুনআড়া, মিরেরপাড়া, কামারপাড়া, যাদববাটির মতো গ্রামগুলির কয়েক হাজার মানুষ এ রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করেন। অথচ, ওই কাগজকল থেকে মাদারডিহিতে কুনুর নদীর ঘাট পর্যন্ত রাস্তার পুরোটাই বেহাল। এলাকাবাসীর দাবি, ওই রাস্তার উপরে একটি উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র, একটি উচ্চ প্রাথমিক বিদ্যালয়, সমবায় সমিতি, প্রাথমিক বিদ্যালয়, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র, ডাকঘরের মতো একাধিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। আবার গোতিষ্ঠা পঞ্চায়েত অফিস বা কাশেমনগর উচ্চ বিদ্যালয়েও যেতে হয় এই রাস্তা দিয়ে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বর্ষায় পুরো রাস্তা খানাখন্দে ভরে গিয়েছে। জমা জল, কাদা পেরিয়ে যাতায়াত করতে মুশকিলে পড়ছেন পড়ুয়া থেকে অসুস্থ মানুষজন। যে কোনও সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কায় প্রসূতিদের উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যেতেও সমস্যা হচ্ছে। তাঁদের দাবি, বিষয়টি একাধিক বার প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে জানানো হয়েছে। মঙ্গলকোটের ব্লক প্রশাসনের তরফে পরিদর্শনও হয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ হয়নি। সম্প্রতি রাস্তা সারানোর জন্য জেলা সভাধিপতিকে গণস্বাক্ষর করা আর্জি জানিয়েছেন তাঁরা।
রাস্তার বেহাল দশা দেখাচ্ছেন গ্রামবাসীরা। মঙ্গলকোটের গোতিষ্ঠায়। নিজস্ব চিত্র।
এলাকার বাসিন্দা পড়ুয়া সুমিতা মণ্ডল, সঞ্চারি ভট্টাচার্যদের দাবি, ‘‘স্কুল, টিউশন মিলে ওই রাস্তা দিয়ে দিনে তিন-চার বার যাতায়াত করতে হয়। জমা জলে সাইকেল নিয়ে পড়ে যাওয়ার ভয় থাকে। পোশাকও নোংরা হয়ে যায়।’’
গোতিষ্ঠা পঞ্চায়েতের প্রধান নবকুমার ঘোষের দাবি, যেহেতু সরকারি ভাবে রাস্তায় মোরাম দেওয়ার ব্যাপারে নিষেধ রয়েছে, তাই নতুন করে মোরাম ফেলা যাচ্ছে না। এই মুহূর্তে রাস্তা পাকা করার মতো আর্থিক পরিস্থিতিও পঞ্চায়েতের নেই। মঙ্গলকোট পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ মুন্সি রেজাউল হকের দাবি, প্রধানমন্ত্রী সড়ক যোজনা ২ প্রকল্প এবং জেলা পরিষদের তহবিল থেকে রাস্তাটি গড়ার জন্য পঞ্চায়েত সমিতির তরফে জেলা প্রশাসনের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন মিললে, কাজ শুরুর আশ্বাসও দেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy