Advertisement
০১ নভেম্বর ২০২৪

খোঁজ নেই রক্ষীরও, ছিনতাইয়ের নেপথ্যে তেল-চুরিই

নিরাপত্তারক্ষী নিখোঁজ, তেল চুরি ও চালক গ্রেফতার— এই তিনটি বিষয়ের কোথাও যোগসূত্র রয়েছে। পশ্চিম বর্ধমানের একটি কারখানার জন্য জ্বালানি তেল নিয়ে আসা ট্যাঙ্কার ছিনতাইয়ের ঘটনায় তদন্তে নেমে এমনই মনে করছেন তদন্তকারীরা। তবে শনিবার ট্যাঙ্কার চালক গ্রেফতারের পরে ২৪ ঘণ্টা কাটলেও রক্ষীর খোঁজ না মেলায় দুশ্চিন্তায় তাঁর পরিবার।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাঁকসা ও হলদিয়া শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০১৮ ০০:৪৬
Share: Save:

নিরাপত্তারক্ষী নিখোঁজ, তেল চুরি ও চালক গ্রেফতার— এই তিনটি বিষয়ের কোথাও যোগসূত্র রয়েছে। পশ্চিম বর্ধমানের একটি কারখানার জন্য জ্বালানি তেল নিয়ে আসা ট্যাঙ্কার ছিনতাইয়ের ঘটনায় তদন্তে নেমে এমনই মনে করছেন তদন্তকারীরা। তবে শনিবার ট্যাঙ্কার চালক গ্রেফতারের পরে ২৪ ঘণ্টা কাটলেও রক্ষীর খোঁজ না মেলায় দুশ্চিন্তায় তাঁর পরিবার।

পুলিশ জানায়, গত ১৬ অক্টোবর জামুড়িয়ার একটি বেসরকারি কারখানার জ্বালানি তেল নিয়ে পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়ার একটি রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থার ডিপো থেকে ট্যাঙ্কারটি বেরোয়। ট্যাঙ্কারে চালক ও খালাসির সঙ্গে ছিলেন কারখানার নিরাপত্তারক্ষী পবন কুমার। কিন্তু নির্দিষ্ট সময় পরেও ট্যাঙ্কার জামুড়িয়ায় না পৌঁছনোয় কারখানা কর্তৃপক্ষ খোঁজ শুরু করেন। শেষমেশ ২১ তারিখ ট্যাঙ্কারটি উদ্ধার করে কাঁকসা থানা। কিন্তু সেই ট্যাঙ্কারে চালক উদয় ঝা, খালাসি বা রক্ষী, কারও খোঁজই মেলেনি। ২৭ অক্টোবর রাজবাঁধ থেকে ট্যাঙ্কার ছিনতাইয়ের অভিযোগে উদয়কে গ্রেফতার করে পুলিশ।

তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে তেল চুরির কথা। পুলিশ জানায়, ট্যাঙ্কারে প্রায় ১৪ লক্ষ টাকার জ্বালানি তেল ছিল। কিন্তু পথে, গলসির কোনও এক এলাকায় প্রায় পাঁচ হাজার লিটার তেল বিক্রি করে দেওয়া হয়। এই ঘটনার সঙ্গে রক্ষীর নিখোঁজ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। পুলিশের একাংশের অনুমান, হয়তো চুরিতে বাধা দিয়েছিলেন পবন।

এ ছাড়া পুলিশ আরও জানতে পেরেছে, ডানকুনি টোলপ্লাজা থেকে পালসিট টোলপ্লাজায় পৌঁছতে ট্যাঙ্কারটির সময় লাগে প্রায় ছ’ঘন্টা। ওই সময়ে ট্যাঙ্কারটি কোথায় ছিল, তখন নিরাপত্তা রক্ষীর সঙ্গে কিছু করা হয়েছিল কি না, তা-ও খতিয়ে
দেখা হচ্ছে।

তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, হলদিয়া, ডানকুনি, গলসি-সহ রাজ্যের কিছু এলাকায় এই জ্বালানি তেল চুরি ও বিক্রির চক্র রয়েছে। এক ট্যাঙ্কার তেলের দাম, ১০ থেকে ১৪ লক্ষ টাকা। কালোবাজারে তা মেলে ৬ থেকে ৭ লক্ষ টাকায়। এ ক্ষেত্রেও সেই চক্রের যোগ থাকতে পারে বলে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান। সেই চক্রের সঙ্গে উদয় জড়িত কি না, তা-ও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

তবে হলদিয়ার ডিপো লাগোয়া একটি ধাবার মালিক রমেশ নায়ক জানিয়েছেন, কলকাতার মহেশতলার বাসিন্দা উদয়ের মাস ছয়েক ধরে হলদিয়ায় যাতায়াত ছিল। তবে তাঁর বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক অতীতে চুরি বা ছিনতাইয়ের অভিযোগ এলাকায় শোনা যায়নি বলে জানান রমেশবাবু।

শনিবার উদয়কে কাঁকসার পুলিশ গ্রেফতারের পরে রবিবার রাত পর্যন্ত নিখোঁজ আদতে উত্তরপ্রদেশের আগ্রার বাসিন্দা পবনবাবু। বছর দেড়েক আগে জামুড়িয়ার ওই কারখানায় কাজে যোগ দেন। পবনবাবুর খোঁজ না মেলায় চিন্তায় তাঁর পরিবার। উত্তরপ্রদেশ থেকে দুর্গাপুরে এসেছেন পবনবাবুর দাদা বিষ্ণুবাবু-সহ কয়েক জন নিকটাত্মীয়। বিষ্ণুবাবুর কথায়, ‘‘ভাইয়ের পরিবারে স্ত্রী, তিন ছেলেমেয়ে রয়েছে। খুব চিন্তায় রয়েছি সবাই।’’ এই পরিস্থিতিতে জেরায় উদয়ের কথাবার্তায় অসঙ্গতি সমস্যা বাড়িয়ে বলে জানান পুলিশকর্তারা। আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (পূর্ব) অভিযেক মোদী বলেন, ‘‘ধৃত চালক বিভিন্ন সময়ে নানা রকম কথা বলছেন। তাই ওই রক্ষীর খোঁজ পেতে সাময়িক কিছু সমস্যা হচ্ছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Fuel Fuel Tanker
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE